সোমবার

৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের নিয়ন্ত্রণে দেশের স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ পদগুলো

Paris
Update : শুক্রবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৩

এফএনএস
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের নিয়ন্ত্রণে দেশের স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ পদগুলো। আর ওই পদধারীরা নিয়োগ পেয়েই নিজেদের ইচ্ছেমতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। পাশাপাশি সরকারি চাকরি বিধিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিষিদ্ধ হলেও অনেকেই বিধি লঙ্ঘন করে ক্ষমতাসীন দলের পদ বাগিয়ে নিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে শুরু করে একাধিক চিকিৎসাসেবা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিরা রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক তদবিরের মাধ্যমে সুযোগ-সুবিধা আদায় করে নিয়েছে। আর বছরের পর বছর ধইে এমন কর্মকাণ্ড চলছে। অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও হাসপাতালের পদগুলোয় দায়িত্ব পালনের মতো একাধিক যোগ্য ব্যক্তি রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য খাতের নীতিনির্ধারকরা অদৃশ্য কারণ চুপ। ফলে স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে বঞ্চিত হচ্ছেন যোগ্য ব্যক্তিরা। স্বাস্থ্য খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিদ্যমান আইনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিধান আছে। তবে স্বাস্থ্য দপ্তরগুলোতে যোগ্য ব্যক্তিও আছে। শীর্ষপদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হওয়ায় অগ্রাধিকারপ্রাপ্তদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে। আর তাতে দাপ্তরিক কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাবের পাশাপাশি পদসোপান ধারাও ব্যাহত হচ্ছে। কারণ যোগ্যরা নিচ থেকে উপরে উঠতে পারছে না। মূলত সরকারি আইন ও ধারাগুলো ঠিকমতো অনুসরণ না করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।
সূত্র জানায়, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের পরিচালক ২০১৪ সালে অবসরে যাওয়ার পরই ২ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক পরিচালক পদে নিয়োগ পায়। তারপর দুই ও তিন বছর করে বাড়িয়ে একই চেয়ারে ৯ বছর বছর ধরে তিনি চুক্তিভিত্তিক পরিচালক হিসাবে কর্মরত রয়েছে। আর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের কারণে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক যে বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ওই পদও দখল করে রাখে। ফলে মন্ত্রণালয় চাইলেও ওই পদে অন্য কাউকে পদোন্নতি দিতে পারে না। যেমন নিউরো মেডিসিন অধ্যাপক পদে এক দশক ধরে কাউকে পদোন্নতি দেয়া যাচ্ছে না। অথচ বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানটি থেকে প্রতিবছর নিউরোসার্জারি ও নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সৃষ্টি হচ্ছে। একইভাবে আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালকও ২০১৭ সালের এপ্রিলে মেয়াদ শেষ হলেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে ৬ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ পদে আসীন রয়েছে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ সাড়ে ৩ বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। তাছাড়া জাতীয় অর্থোপেডিকস ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান পঙ্গু হাসপাতালের পরিচালকও দুই বছর করে পরপর দুইবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে ৫ বছর শেষ করেছেন। ওই পদে এখনো তিনি বহাল। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালের পরিচালকও একই পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন।
সূত্র আরো জানায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। অতিসম্প্রতি আবারো তাকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিতে মহাপরিচালক পদে বসানো হয়। তার আগের মহাপরিচালকও দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন। তার আগের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মহাপরিচালকও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। দেশের স্বাস্থ্যখাতের শীর্ষ পদগুলোতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ এখন নিত্যনৈমিত্তিক প্রাতিষ্ঠানিক চর্চায় পরিণত হয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের একাংশের মধ্যে প্রাক-অবসরকালীন অসুস্থ প্রতিযোগিতা, গ্রুপিপং তৈরি হচ্ছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris