নিয়ামতপুর প্রতিনিধি
হাঁসেদের প্যাক প্যাক শব্দে সকাল শুরু হয়। বিল এলাকা থেকে এমন মধুর শব্দ ভেসে আসলে শুনতে কার না ভালো লাগে। এমন মধুর সুর শুনতে পাওয়া যায় নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা বিলে। ঘটনাস্থলে যেতেই দেখা গেলো পিঠে বস্তা নিয়ে আস্তে আস্তে হেঁটে যাচ্ছে একজন। বস্তার মুখ দিয়ে পড়ছে অল্প অল্প করে ধান। এভাবে পুরো বস্তার ধান ছড়িয়ে দিলেন চারপাশে। সঙ্গে সঙ্গে প্যাক প্যাক শব্দ করে ছুটে আসলো হাজার হাজার হাঁসের দল। এই বিলেরপাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমান হাঁসের খামার। এইসব হাঁসখামারে হাঁস লালন পালনে যেমন খরচ কম তেমনি লাভবানও হচ্ছে খামারিরা এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায় ভাবিচা বিলে হাঁসখামারে প্রায় ২ হাজার হাঁস ভেসে বেড়াচ্ছে বিলের খালের পানিতে। খালের পাড়ে দাঁড়িয়ে দুইজন লোক হাঁসেদের দেখভাল করছেন। খালের পাড়ে তৈরি করা হয়েছে হাঁসের খামারের অস্থায়ী ঘর। সেখানে একচালা ছোটঘর করে থাকেন খামারী।
হাঁসখামারী মো. আজাহার আলী প্রতিবেদককে বলেন, ‘দিনভর বিলে চরে হাঁসগুলো। ঘুরে ঘুরে খায় প্রাকৃতিক খাবার। বাড়তি খাবার দেয়ার তেমন প্রয়োজন পড়ে না। সকালে অল্প করে ধান খেতে দেয়া হয়। এ ছাড়া খাল ও বিল কেন্দ্রিক খামারীদের হাঁস পালনে তেমন একটা খরচ নেই বললেই চলে। অল্প পুঁজি খাটিয়েই এই ব্যবসা করা যায়। লাভও ভাল হয় বলে জানালেন ওই খামারী।
নিয়ামতপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আঃ লতিফ জানান, হাঁসের মাংস ও ডিম উৎপাদনে বড় ভূমিকা রাখছে এসব ভ্রাম্যমান খামারী। এসব হাঁস বিলে ঘুরেঘুরে প্রাকৃতিক খাবার শামুক, ঝিনুক, জলজ উদ্ভিদ ও ফসলের উচ্ছিষ্ট অংশ খায়। এসব খাবারের মধ্যে সুষম খাবারের ছয়টি উপাদান বিদ্যমান থাকে। এর ফলে হাঁসগুলো খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায় ও ডিম দেয় । প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পূরণে একটা বড় অবদান রাখছে এই হাঁসগুলো। খামারিরাও কম খরচে এই হাঁস পালন করতে পারছেন।