শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তানোরে ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক

Paris
Update : রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

তানোর প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোরে বিএমডিএ’র গভীর নলকুপের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক। অভিযোগের তীর একশ্রেণীর অপারেটর ও পল্লী বিদ্যুতের কথিত কর্মচারীর দিকে। কৃষকদের অভিযোগ সেচ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে অপারেটর ও কথিত কর্মচারীরা সিন্ডিকেট করে ট্রান্সফরমার চুরি করছে। কারণ অভিজ্ঞ ব্যক্তি ও পল্লী বিদ্যুতের যোগসাজশ ব্যতিত এতো অল্প সময়ে এতোগুলাে ট্রান্সফরমার চুরি প্রায় অসম্ভব বলে মনে করছে কৃষকেরা।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ২৫টি গভীর নলকুপের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র চুরির খবর পাওয়া গেছে। এতে এসব স্কীমের বোরো চাষ হুমকির মুখে পড়েছে। গত সোমবার দিবাগত রাতে তালন্দ ইউপি সদস্য আবুল হাসানের গভীর নলকুপের ৩টি ট্রান্সফর্মার চুরি হয়েছে। এর আগে গত রোববার তালন্দ ইউপির দেউল গ্রামের মদন কুমারের ৩টি, লিটন আলীর ৩টি ট্রান্সফর্মা চুরি হয়। এছাড়াও গত বুধবার তালন্দ ইউপির মোহরগ্রামের ওয়াহেদ আলীর ৩টি ট্রান্সফর্মার চুরি হয়েছে। এদিকে তানোর পৌর এলাকার চাপড়া মহল্লার আনসার আলীর ৩টি ও তালন্দ ইউপির কালনা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের গভীর নলকূপের ৩টি ট্রান্সফর্মার চুরি হয়েছে। অপারেটর আনোয়ার হোসেন জানান, গত রোববার দিবাগত রাতে ট্রান্সফর্মাগুলো চুরি হয়েছে। চুরির পর থেকে সেচ দেওয়া বন্ধ রয়েছে, ৩টি ট্রান্সফর্মার জন্য বিএমডিএ অফিসে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। তারপর মিলবে ট্রান্সফর্মার। তবে কদিনের মধ্যে পাওয়া যাবে সেটাও কেউ বলতে পারছে না। এতো অল্প সময়ের মধ্যে এতোগুলো নগদ টাকা সংগ্রহ করাও অনেক কঠিন। কৃষকেরা জানান, ভরা বোরো মৌসুমে ধানখেতে প্রতিদিন সেচ দিতে হয়। একটি গভীর নলকূপ স্কীমে প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ হয়। ট্রান্সফরমার চুরির পর থেকে জমিতে সেচ দেয়া বন্ধ রয়েছে। সময় মতো সেচ দিতে না পারলে ফসলহানির আশঙ্কা রয়েছে। কৃষকেরা অভিযোগ করে বলেন, গভীর নলকূপের ট্রান্সফর্মার চুরির অজুহাতে অপারেটরেরা স্কীমভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকে টাকা আদায় শুরু করেছে। এতে সেচ খরচ হবে দ্বিগুণ। কেউ কেউ আবার ট্রান্সফরমার চুরির জন্য পল্লী বিদ্যুতের কথিত কর্মচারীদের দায়ি করেছেন। তাদের অভিমত অভিজ্ঞ ব্যক্তি ছাড়া ট্রান্সফর্মার চুরি অসম্ভব। আবার য়খন লোডশেডিং হয় তখন ট্রান্সফরমারও চুরি হয়। ইতমধ্যে পল্লী বিদ্যুতের কথিত এক কর্মচারীকে ট্রান্সফরমার চুরির অপরাধে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে তানোর বিএমডিএ”র সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, কয়েকটির বিষয়ে থানায় জিডি করা হয়েছে, ট্রান্সফর্মার পেতে হলে নিয়ম অনুযায়ী টাকা জমা দেওয়ার পর পাবে। তিনি বলেন, যেহেতু বোরো ধান মাঠে এজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে যদি কোন সুযোগ থাকে তাহলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। এবিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি কামরুজ্জামান মিয়া জানান, আমার মনে হয় এসব চুরির সঙ্গে অপারেটর ও মেকানিকের যোগসাজশ অবশ্যই আছ। তাছাড়া এত ট্রান্সফর্মার কিভাবে চুরি হয়। আর অপারেটরের দায়িত্ব এসব হেফাজত করা। কিন্তু তারা হেফাজত করছে না। কারন সেচ মৌসুম কিছু হলেই কৃষকের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা যাবে। তদন্ত চলছে অল্প সময়ের মধ্যে সবকিছু বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন তিনি। এবিষয়ে বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে এতগুলো ট্রান্সফর্মার চুরির ঘটনা কল্পনাতীত। নিশ্চয় কোন না কোন যোগসাজশ আছেই। ট্রান্সফর্মার নিতে এক সঙ্গে টাকা দিতে হয়। কিন্তু মাঠে বোরো ধান এজন্য কৃষকের স্বার্থে এবং সময়মত সেচ দিতে পারে এজন্য কয়েক কিস্তিতে টাকা দিয়ে ট্রান্সফর্মার নিতে পারবেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris