শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নগরীতে খোলাবাজারে চাল-আটার চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ অনেক কম

Paris
Update : সোমবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত কল্পে চাল ও আটার বাজারমুল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার নিমিত্তে ওপেন মার্কেট সেল চালু করেছে সরকার। দরিদ্র মানুষের জন্য চালু করা সরকারের খোলাবাজারে চাল-আটা বিক্রির কার্যক্রম চলে প্রতিদিন সকাল ৯ থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত। যেসকল ডিলার পয়েন্টে বর্তমান বাজার মূল্যের চাইতে কম দামে চাল ও আটা বিক্রি করা হয় ঐদোকানগুলোর সামনে বিক্রিত দিনে খুব সকাল থেকেই শত শত ক্রেতার আগমন ঘটে।

শুধু প্রাপ্ত বয়ষ্ক ক্রেতাই নয়, লম্বা সেই লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায় শিশু-কিশোরদেরও। কিন্তু, চাহিদার তুলনায় ডিলার প্রতি বরাদ্দ ও সরবরাহ কম থাকায় অনেকেই বেলা শেষে খালি হাতে হতাশা নিয়ে ফিরে যান বাড়িতে। গতকাল রবিবার নগরীর বিভিন্ন্ন ডিলার সেলস পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেল এমনই দৃশ্য। উল্লেখ্য যে, উক্ত সেলস পয়েন্টগুলোতে প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা আর আটার বিক্রি মূল্য ১৮ টাকা।

চাল ও আটা নিতে আসা কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ অনেক কম। তাই চাল ও আটা পাওয়া নিশ্চিত করতে অনেক সকাল থেকে সেলস পয়েন্টের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন তারা। শেষ পর্যন্ত কেউ পান, কেউ পান না। নিয়োগকৃত প্রতিটি ডিলার পয়েন্টে ‘ওএমএসে’র চাল ও আটা বিক্রয় কার্যক্রম প্রতিদিন চলে না, তাই যেখানে চলে সেখানে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন অধিকাংশ ক্রেতাই।

বিভিন্ন ডিলার কেন্দ্রে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কেন্দ্রগুলোতে কর্মহীন ও নিম্নআয়ের মানুষের উপচে পড়া ভিড়। উপকারভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে চাল ও ৩২-৩৫ টাকা করে আটা বিক্রি হচ্ছে। উচ্চমূল্যের এই বাজারে পরিবারের প্রাত্যহিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। এ অবস্থায় বাজার মুল্যের অর্ধেক দামে ক্রয় করার সুযোগ থাকায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পাচ্ছেন নিম্নআয়ের মানুষেরা। সিটি কর্পোরেশন একাধিক ডিলার বলেন, ক্রেতা সংখ্যা ও তাদের প্রাত্যহিক চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ অনেক কম থাকায় আগত ক্রেতাদের সবাইকে পণ্য দেওয়া সম্ভব হয় না। অনেকেই পণ্য না পেয়ে খার্লি হাতে ফিরে যান বাড়িতে।

তারা আরো বলেন, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম থাকায় বিক্রি শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চাল-আটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে রাজশাহী জেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক অনির্বাণ ভদ্র জানান, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ডিলার আছেন ৩৪ জন। নিয়মানুযায়ী ‘বাই রটেশনে’ প্রতিদিন ১৫ জন ডিলারকে বরাদ্দ দেওয়া হয় জনপ্রতি দেড় টন চাল আর এক টন আটা। সেহিসেবে একদিনে নগরীতে ১৫ টন আটা ও প্রায় ২৩ টন চাল সরবরাহ করা হয়। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী উক্ত বরাদ্দকৃত চাল ও আটার পরিমাণ অনেক কম জানালে তিনি বলেন, এটা মন্ত্রণালয়ের বিষয়।

মন্ত্রণালয় থেকে যখন যেভাবে বরাদ্দ আসে আমরা ডিলারদেরকে সেভাবেই সরবরাহ করে থাকি। নগরীর অনেক এলাকায় ডিলার পয়েন্ট না থাকার কারণে অন্য এলাকাগুলো থেকে ছুটে আসে নিম্ন আয়ের মানুষেরা। যার কারণে নির্দিষ্ট সংখ্যক ডিলার পয়েন্টগুলোতে বৃদ্ধি পায় ক্রেতার আগমন। এই সমস্যার কিছুটা হলেও লাঘব হবে যদি নগরীতে ডিলার পয়েন্টের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি বরাদ্দকৃত পণ্যের সরবরাহ দ্বিগুণ করা বলে মন্তব্য ক্রেতা সাধারণের।

বিভিন্ন সেলস পয়েন্ট ঘুরে দেখাগেছে, চালের তুলনায় আটার চাহিদা বেশি। তাই প্রাত্যহিক চাহিদা ও আগত ক্রেতাদের সংখ্যা বিবেচনা পূর্বক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে ভোগান্তি হ্রাস পেতো নিম্ন আয়ের মানুষদের। কাউকে আর খালি হাতে ফিরে যেতে হতো না বাড়িতে!


আরোও অন্যান্য খবর
Paris