শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ভাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ : লিটন

Paris
Update : বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয় একটি সম্প্রীতি ও শান্তির শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন শেষে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। সভা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেনী, যুগ্ম সম্পাদক আহ্সানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আসলাম সরকার, নগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলী, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মোমিন, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম।

সভায় লিটন বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র, যা আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অর্জন করেছি। এদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ভাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। আমরা একে অপরের উৎসবে সামিল হয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করি, এটিই আমাদের সংস্কৃতি। আর এই সংস্কৃতিকে যারা আঘাত করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্যে আমি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই আওয়ামী লীগ তার দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিবে। দেশ যখন উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের মাথাপিছু আয় যখন ঈর্ষনীয়, উন্নত বিশ্বে বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের রোল মডেল ঠিক তখন ৭১এর পরাজিত উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি সারাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্টের জন্য সনাতন ধর্মবালম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবে বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের মন্দির ভাংচুর, বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে দেশের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়।

কিন্তু তাদের এই হীন ষড়যন্ত্র বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে কখনই সফল হবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নির্দেশে প্রতিটি এলাকায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে যাতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি কোন রকমের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে। ষড়যন্ত্র বা বিশৃঙ্খলার আভাস পেলেই প্রশাসন ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে অবহিত করবেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে ৭১এর পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসর ধর্মান্ধ উগ্র মৌলবাদের সমূলে উৎপাতন করবোই করবো। তিনি দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে সম্মান নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলতে চায় এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি।

মোঃ ডাবলু সরকার বলেন, আমাদের প্রিয় নেত্রী, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জনগণের ভালোবাসা নিয়ে পরপর তিনবার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করেন নি, তিনি সমগ্র দেশ ও জাতির ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্বের দশ জন ক্ষমতাধর ও সৎ রাষ্ট্র প্রধানদের মধ্যে তিন নম্বর অবস্থানে আমাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর এই সফলতা ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে একটি মহল ঈর্ষানীত হয়ে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের পথ বেছে নিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করে দেশের যে শান্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন যখন তাঁর নাম নোবেল পুরষ্কারের জন্য অন্তর্ভূক্ত হয়েছে ঠিক তখনই ৭১এর পরাজিত শক্তি ষড়যন্ত্রে পথ বেছে নিয়েছে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন পদেক্ষপ নিবেন যে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে কেউ কোনদিন সাম্প্রদায়িক রাজনীতির চিন্তাও করবে না। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় জড়িতদের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে বলে আশ্বস্ত করেন।

শাহীন আকতার রেনী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সনাতন ধর্মবালম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবে বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের মন্দির ভাংচুর, বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এরই প্রতিবাদে আমরা সকলে একত্রিত হয়েছি এই জঘন্য কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ঘৃনা ও প্রতিবাদ জানাতে। আমরা দেখেছি ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার করার পর একের পর এক হত্যাকান্ডগুলো ঘটেছে, সেগুলোর বিচার আমরা পাই নি। বরং সেই বিচারের পথ রুদ্ধ করার জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিলো। কিন্তু তারা সেটা পারে নি। ১৯৯৬ সালে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর আমরা সেই সকল হত্যকান্ডের বিচার করেছি। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, মাননীয় নেত্রী আপনার ভয় নাই, আপনার পাশে আমরা আছি, আপনার সাথে আমরা আছি। আপনি যেভাবে নির্দেশনা দিবেন সেই নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো সদা প্রস্তুত আছে। আপনাকে আমরা কথা দিচ্ছি, এই ৭১এর পরাজিত শক্তি ধর্মান্ধ উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বারবার আঘাত আমরা আর সহ্য করবো না, এর সমুচিত জবাব আমরা দিবো।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, রেজাউল ইসলাম বাবুল, বদরুজ্জামান খায়ের, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম বুলবুল, প্রচার সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ, কৃষি সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, আইন সম্পাদক অ্যাড. মুসাব্বিরুল ইসলাম, ধর্ম সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক রবিউল আলম রবি, মহিলা সম্পাদিকা ইয়াসমিন রেজা ফেন্সি, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, সদস্য মুশফিকুর রহমান হাসনাত, নজরুল ইসলাম তোতা, আরিফা বেগম, শাহাব উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন খান, অ্যাড. শামসুন্নাহার মুক্তি, আতিকুর রহমান কালু, আব্দুস সালাম, মজিবুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, আশীষ তরু দে সরকার অর্পণ, থানা আওয়ামী লীগের মধ্যে বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানার সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানার সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান রতন, মতিহার থানার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, নগর যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বাচ্চু, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমতউল্লাহ সেলিম, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কানিজ ফাতেমা মিতু সহ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris