শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাহে রমজানের সওগাত

Paris
Update : বুধবার, ২১ এপ্রিল, ২০২১

মুহম্মদ আলতাফ হোসেন : আজ আটই রমজান। মাহে রমজানে মহান আল্লাহর রহমত মন্ডিত দশকের আর মাত্র দুই দিন বাকি। তাঁর রহমত সিক্ত হয়ে হালাল উপার্জনে ব্রতী হওয়ার মাস এই রমজান। কারণ মুসলমানদের ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত হচ্ছে হালাল উপার্জন। যার খাদ্য, পানীয় ও পোশাক হারাম আয়ের এবং যিনি হারাম খেয়েই নিজের শরীরের রক্ত-মাংস তৈরি করেছেন তার ইবাদত আল্লাহ কবুল করবেন না। তাই এই ধরনের লোকদের রোজা ব্যর্থ। রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন নিজের হাতের কামাই রোজাগারের চাইতে বান্দার উত্তম খাবার আর কিছু নাই। আল্লাহর নবীগণ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

যরত নূহ আলাইহিস সালাম কাঠ মিস্ত্রি ছিলেন, হযরত মূসা আ. ছিলেন রাখাল, হযরত দাউদ আ. ছিলেন কামার, হজরত সুলাইমান আ. ছিলেন রাজমিস্ত্রি, হজরত যাকারিয়া আ. ছিলেন কাঠ মিস্ত্রি এবং আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন প্রথম জীবনে রাখাল এবং পরবর্তীকালে ছিলেন ব্যবসায়ী। মানুষের জীবন, কাজকর্ম, চরিত্র ও আচরণের উপর হালাল ও হারামের প্রভাব পড়ে। হালাল খাবার খেলে গুনাহ ও নিষিদ্ধ কাজ করার প্রেরণা জাগে। সে জন্য হালাল খাদ্য গ্রহণের জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নির্দেশ দিয়েছেন।

সুরা আল-মুমিনের ৫১ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে রসুলগণ, তোমরা পবিত্র জিনিস থেকে খাবার গ্রহণ করো এবং নেক কাজ করো’। এখানে পবিত্র খাবারের সঙ্গে নেক আমলকে সম্পর্কযুক্ত করা হয়েছে। সুরা বাকারার ১৭২ আয়তে বলা হয়েছ,‘হে মুমিনগণ, তোমরা আমার প্রদত্ত পবিত্র রিজিক খাও এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় কর, যদি তোমরা সত্যিই আল্লাহর ইবাদতকারী হও’। ইসলাম একদিকে ব্যক্তি জীবনে যেমন হালাল আয়ের নির্দেশ দিয়েছে, তেমনি সামাজিক ও সামষ্টিক জীবনেও হালাল আয়-রোজগারের নিশ্চয়তা বিধান করেছে।

ইসলাম সুদ, ঘুষ, জুয়া হারাম জিনিসের ব্যবসা বাণিজ্য, চোরাকারবারী, মজুদদারী, ওজনে কম দেয়া, ভেজাল মেশানো, চুরি-ডাকাতি, জুলুম-নির্যাতন ও ছিনতাই, রাহাজানির মাধ্যমে অর্জিত আয়কে হারাম ঘোষণা করেছে। তাই একজন রোজাদার মুসলমানকে ব্যক্তিগত আয়-রোজগার হালাল করার সাথে সাথে রাষ্ট্রীয় অর্থনীতিকেও ইসলাম সম্মত করার চেষ্টা করতে হবে।

রাষ্ট্র থেকে সুদ, ঘুষ, মদ, জুয়া ও অন্যান্য হারাম আয়ের সকল উৎস বন্ধ করার লক্ষ্যে চেষ্টা চালাতে হবে। তা না হলে সে সবের হারাম প্রভাবও ব্যক্তি জীবন পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে। এজন্যই দেশে ইসলামী অর্থনীতি ও ব্যবস্থা কার্যকর করতে সচেষ্ট হতে হবে। তাহলে ব্যক্তিগত আয়কে হালাল করা সহজতর হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris