শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নবজাতক চুরির রেশ না কাটতেই রামেক হাসপাতালে এবার রক্তদাতার টাকা চুরি!

Paris
Update : সোমবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২১


স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে নবজাতক চুরি হবার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রামেকের ব্লাড ব্যাংক থেকে এবার এক রক্তদাতার জ্যাকেটের পকেট থেকে দশ হাজার টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার আনুমানিক দুপুর বারোটা নাগাদ অনাকাঙ্খিত এই চুরির ঘটনা ঘটে বলে দাবি নাটোর থেকে আসা ভুক্তভোগী পরিবারের। পকেট থেকে টাকা চুরি হবার বিষয়টি সনাক্ত করার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাসপাতালের ৯ ও ১১ নাম্বার সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দেখার চেষ্টা করা হলেও ব্লাড ব্যাংকের উচু রিসিপশন ডেস্ক ও ডেস্কের সাথে কাগজ লাগানো কাঁচের অংশের বাধার কারনে নিরঙ্কুশভাবে ভিডিও সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

এছাড়াও সন্ধেহভাজন ব্যক্তির মুখে মাস্ক পরিহিত থাকায় তাকেও সনাক্ত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। যার কারণে পকেটমারের বিষয়টি উৎঘাটন করতে সক্ষম হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নাটোরের করটা নামক এলাকার ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি আব্দুল রউফ ও তার সাথে আসা তার ভাই রুহুল, রহিম ও ভাগনি ঝর্ণাসহ অন্যান্য স্বজনরা জানান, হাসপাতালের ৮নং ওয়ার্ডে সুমনা নামের তাদের এক আত্মীয় নাটোরের লালমনপুর এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় কবলিত হয়ে গত ২৩ জানুয়ারী হাসপাতালে ভর্র্তি হন।

উক্ত রোগীর রক্তের প্রয়োজন দেখা দিলে রোগীর চাচা গতকাল রবিবার হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে এক ব্যাগ রক্ত দেন। রক্ত দেওয়া শেষ হবার পর তিনি ব্লাড ব্যাংকের রিসিপশন ও পেমেন্ট শাখায় এসে তার সাথে আসা তার ভাগনী ঝর্না ও ভাই রহিমের পাশে এসে বসেন। জ্যাকেটের উপরের পকেটে থাকা দশ হাজার টাকাসহ প্যান্টের পকেটে থাকা সামান্য কিছু টাকা বের করে তিনি একাধিকবার গোনেন। আব্দুল রউফের টাকা গোনার বিষয়টি কিছুটা দূরে থাকা একব্যক্তি বেশ কয়েকবার লক্ষ্য করেছিলেন বলে জানান তার ভাগনি ঝর্ণা। টাকা গণনা শেষ হওয়া মাত্রই উক্ত সন্ধেহভাজন ব্যক্তিটি রউফের পাশে এসে বসেন।

অপরিচিত ব্যক্তিকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুযায়ী ব্যক্তিটির হাতে ছিল কয়েকটি খাম। ঝর্ণা ও তার বড় মামা রহিম আব্দুল রউফকে সেখানে বসিয়ে রেখে অন্য একটি কাজে কিছুক্ষণের জন্য বাইরে যান। কালো প্যান্ট, কালো জ্যাকেট ও মুখে মাস্ক পরিহিত ব্যক্তিটি কিছুক্ষণ কাছে বসে থেকে ব্লাড ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কোন কাজ না করেই বসে থাকা আসন ছেড়ে হন্তদন্ত করে উঠে চলে যায়। ব্লাড ব্যাংক থেকে বের হয়েই সন্ধেহভাজন ব্যক্তিটি সামনের করিডোর দিয়ে দ্রুত গতিতে সিসি ক্যামেরার নাগালের বাইরে চলে যায়। ঐ ব্যক্তি ব্লাড ব্যাংক থেকে বের হবার পরপরই রক্তদাতা আব্দুল রউফ হাসপাতালের পেমেন্ট দিতে গেলে বুঝতে পারেন তিনি পকেটমারের পাল্লায় পড়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত হবার জন্য টাকা খোয়া যাওয়া ব্যক্তির ভাগনি ঝর্ণা হাসপাতাল পরিচালকের পিএ এস.এম রাশেদুল সালেকিন (সুমন)’র কক্ষে এসে টাকা চুরি হবার বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে চান। কিন্তু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখার পরেও কিছু প্রতিবন্ধকতার কারনে পকেটমার ও চোরকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি বলে জানান পরিচালকের পিএ সুমন।

তিনি পত্রিকার প্রতিনিধিকে আরো জানান, হাসপাতালে যেনো রোগীর স্বজনরা ছাড়া বহিরাগতরা প্রবেশ করতে না পারে সেলক্ষ্যে হাসপাতালের ভিজিটর টিকেট ও পাস এর বিষয়টির প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মাস্ক পরিহিত অবস্থায় থাকার কারনে উক্ত পকেটমার ও চোরকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলেও তিনি জানান। অবশেষে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও তার স্বজনরা হতাশাগ্রস্থ হয়েই ফিরে যান তাদের রোগীর কাছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি একজন কৃষক।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris