শনিবার

২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
তীব্র তাপদাহে রাসিকের উদ্যোগে ১০ স্থানে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প নওগাঁয় ১১০ মেট্রিক টন ভূট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে বাঘা উপজেলায় আ.লীগের প্রার্থী নির্ধারণ! বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী গরমের জন্য সরকারকে দায়ী করলেন রিজভী আপাতত গরমেই খেলবে সাবিনা-সানজিদারা ১০ কোটি টাকা অনিয়ম পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক লালমনিরহাটেও যোগ দেননি কেএনএফ প্রধান নাথানের স্ত্রী বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তীব্র তাপদাহে নগরবাসীর পাশে থাকতে রাসিক যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে

ব্যয় কমাতে ব্যাংকগুলো এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে বেশি ঝুঁকে পড়ছে

Paris
Update : সোমবার, ৭ জুন, ২০২১

এফএনএস : দেশে কর্মরত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো পরিচালন ব্যয় কমাতে এজেন্টের ওপর ভর করেই ব্যাংকিং সম্প্রসারণ করছে। কারণ করোনায় লেনদেন কমে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এবং বেড়ে গেছে পরিচালন ব্যয়। মূলত ব্যয় কমাতেই ব্যাংকগুলো ব্যাংকিং সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে বেশি ঝুঁকে পড়ছে। গত এক বছরে দেশে ব্যাংকের মূল শাখা বেড়েছে মাত্র ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ আর এজেন্ট ব্যাংকের শাখা ৪৮ শতাংশের ওপরে বেড়েছে।

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের বেশির ভাগ গ্রাহকই গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারে গড়ে ওঠা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে গ্রামীণ মানুষের অ্যাকাউন্ট সংখ্যা মোট অ্যাকাউন্টের ৮৩ শতাংশ, আর শাখার সংখ্যা ৮৭ শতাংশ। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছ থেকে যে পরিমাণ আমানত নেয়া হচ্ছে, বিপরীতে তাদের মাঝে ওই পরিমাণ বিনিয়োগ হচ্ছে না।

গত ৩১ ডিসেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আমানত সংগ্রহ হয়েছে ১৫ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। আর বিনিয়োগ হয়েছে ১ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা। ওই বিনিয়োগ মোট আমানতের মাত্র ১২ শতাংশ। ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে প্রায় সব ধরনের ব্যবসাতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আমদানি-রফতানি কমে গেছে। কমেছে নতুন ঋণ বিতরণও। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় ব্যাংকগুলো যেটুকু আমানত সংগ্রহ করছে তার বড় একটি অংশই সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করছে। পাশাপাশি প্রায় সব ধরনের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। সবমিলেই ব্যাংকের আয় কমে গেছে। কিন্তু বেড়ে গেছে পরিচালন ব্যয়।

আয়-ব্যয় সমন্বয় করতে গিয়ে ব্যাংকগুলোর ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য শাখা বাড়াতে পারছে না। গত এক বছরে ব্যাংকগুলো গ্রাম ও শহরে মিলে ১৬৬টি নতুন শাখা খুলেছে। অথচ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট ব্যাংক শাখা ছিল ১০ হাজার ৫৬৮টি। গত ডিসেম্বর শেষে শাখা বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ৭৩৪টি। গত এক বছরে শাখা বেড়েছে মাত্র ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। তার মধ্যে গ্রামে শাখা খোলা হয়েছে ১৩৩টি এবং শহরে ৩৩টি।

সূত্র জানায়, ব্যাংকগুলোর মূল শাখা খোলার হার তুলনামূলকভাবে কমে গেলেও এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে শাখা খোলার হার অস্বাভাবিকহারে বেড়ে গেছে। এর অন্যতম কারণ এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের শাখা খোলার ক্ষেত্রে ব্যাংকের তেমন ব্যয় হয় না। আর গেুলো পরিচালনার দায়িত্বও এজেন্টদের থাকে। অথচ দিন শেষে ব্যাংকিং খাতে বিপুল অঙ্কের ডিপোজিট সংগ্রহ হচ্ছে।

আর ওই আমানত ব্যাংকগুলো তাদের মূল শাখার মাধ্যমে বিনিয়োগ করছে। গত ডিসেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকের শাখা বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার ৯২৯টি। আর ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ৭ হাজার ৯১৪টি। অর্থাৎ এক বছরে এজেন্ট ব্যাংকের শাখা বেড়েছে প্রায় ৫২ শতাংশ। তবে বেশির ভাগ ব্যাংকই এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে যে পরিমাণ আমানত সংগ্রহ করছে তার বেশির ভাগই এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে বিনিয়োগ করছে না।

সূত্র আরো জানায়, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্স দেয়ার অন্যতম উদ্দেশ্যই ছিল গ্রামের প্রান্তিক লোকজনের দোরগোড়ায় ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেয়া। তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়ে আসা। এর অর্থ শুধু গ্রামীণ জনগণের কাছ থেকে আমানতই সংগ্রহ করা হবে না, পাশাপাশি গ্রামের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঋণ দিয়ে তাদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু ওই উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।

যে কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন লাইসেন্স দেয়ার সময় ঋণ বিতরণের শর্ত জুড়ে দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এখন নতুন নতুন এজেন্ট ব্যাংকিং ও আউটলেট অর্থাৎ উপ-শাখার লাইসেন্স দেয়ার সময় অন্যতম শর্তই দেয়া হচ্ছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করতে হবে।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সরকারি বেসরকারি মিলে ২৮টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্স দিচ্ছে। তার মধ্যে ডিসেম্বর শেষে ২৬টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্স দিয়েছে ১১ হাজার ৯২৬টি। তার মধ্যে গ্রামেই রয়েছে ১০ হাজার ৩৪৩টি; যা মোট এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার ৮৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

শহরে এজেন্ট ব্যাংকের শাখা রয়েছে ১ হাজার ৫৮২টি, যা মোট শাখার মাত্র ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ। একইভাবে ১৫ হাজার ৯৭৭টি আউটলেটের মধ্যে ১৪ হাজার ১৩টি গ্রামে রয়েছে। যা মোট আউটলেটের ৮৭ দশমিক ৭১ শতাংশ। আর আমানতের প্রায় ৭৭ শতাংশই গ্রাম থেকে এসেছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris