বুধবার

১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুলিশ কর্মকর্তার টাকা হাতিয়ে নিলো প্রতারকরা

Paris
Update : শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩

এফএনএস
কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইন্সের এক পুলিশ কর্মকর্তা ও এক পুলিশ সদস্যকে ‘বোকা বানিয়ে’ নগদ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দুই লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার সিএন্ডবি মোড়ের সততা স্টোরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বাসস্ট্যান্ড এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে সততা স্টোরে শামীম নামে এক পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল) গিয়ে দোকানদার স্বপনকে কয়েকটি নাম্বারে দুই লক্ষাধিক টাকা পাঠানোর কথা বলেন। এ সময় স্বপন বিষয়টি যাচাই করতে বললে পুলিশ সদস্য শামীম তার নিজের ফোনে পুলিশ সুপারের দেহরক্ষী পরিচয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। ফোনের অপর প্রান্তের ব্যক্তি স্বপনকে পুলিশ সদস্য শামীমের কথামতো টাকা পাঠাতে বলেন। পুলিশ সুপারের দেহরক্ষী টাকা নিয়ে দোকানে পৌঁছাচ্ছেন বলে অপর প্রান্ত থেকে আশ্বস্ত করা হয়। এ সময় নগদ এজেন্টকে আরও আশ্বস্ত করতে পুলিশ সদস্য শামীম দোকানের ভেতরে গিয়ে বসেন। এ সময় এজেন্ট স্বপন নগদ অফিস থেকে টাকা নিয়ে শামীমের দেওয়া একাধিক মোবাইল নাম্বারে মোট ২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু শামীমের কথামতো এসপির দেহরক্ষী টাকা নিয়ে না আসায় স্বপন বিষয়টি কুড়িগ্রাম সদর থানাকে জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারে। সিএন্ডবি মোড় এলাকার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ী জানান, সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর পুলিশ সদস্য শামীম জানান, তাকে মূলত পুলিশ লাইন্স থেকে রিজার্ভ ইন্সপেক্টর (আরআই) নুর মোহাম্মদ বাসস্ট্যান্ডে পাঠিয়েছেন। এসপির কিছু মালামাল আসবে জানিয়ে তাকে তা আনতে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর এসপির দেহরক্ষী পরিচয় দিয়ে তাকে ফোন করে কয়েকটি নাম্বার দিয়ে তাতে টাকা পাঠাতে বলা হয়। এরপর তিনি টাকা পাঠান। পরে পুলিশ নগদের এজেন্ট স্বপনসহ পুলিশ সদস্য শামীমকে পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনার বিস্তারিত শুনে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করেন। পরে তদন্তের স্বার্থে কিছু জানায়নি জেলা পুলিশ। এ ব্যাপারে পুলিশ লাইন্সের আরআই নুর মোহাম্মদ বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে একটি নাম্বার থেকে আমাকে ফোন দিয়ে এসপি স্যারের দেহরক্ষীর পরিচয় দেওয়া হয়। স্যারের কিছু মালামাল আসবে জানিয়ে একজন পোশাক পরা কনস্টেবলকে বাসস্ট্যান্ডে পাঠাতে বলা হয়। আমি তখন একজন কনস্টেবলকে পাঠাই। কিন্তু আমি জানতাম না এটা প্রতারকদের কাজ। ওই পুলিশ সদস্য বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে প্রতারক চক্রটি তাকে এসপি স্যারের দেহরক্ষী পরিচয় দিয়ে কয়েকটি নাম্বারে টাকা পাঠাতে বলে। স্যারের দেহরক্ষী পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি টাকা নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছে বলে তাকে জানায়। তখন সে সেটা বিশ্বাস করে টাকা পাঠায়। ভুক্তভোগী নগদ এজেন্ট স্বপনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে স্বপনের ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ী তার বরাতে বলেন, জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্বপনকে ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে তাকে আপাতত কারও সঙ্গে কথা না বলতে অনুরোধ করা হয়েছে। সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখছেন। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য শামীম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris