বুধবার

৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
প্রথম ধাপে ১৪১ উপজেলায় ভোট গ্রহণ আজ প্রকল্প কতটুকু জনকল্যাণে লাগবে তা বিবেচনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর চৌবাড়িয়া পশুহাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ তানোরের গরুর গাড়ি আর মাটির বাড়ি স্থান পেয়েছে ডাক বিভাগের বিশেষ খামে রাজশাহীতে পাথরের ট্রাক থেকে ৫ কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার কাল গোদাগাড়ী উপজেলায় নির্বাচনে লড়াই হবে ত্রিমূখী? রাজশাহী নগরীতে প্রশস্তকৃত সড়কে আলোকায়নের উদ্বোধন করলেন মেয়র দেশে বর্তমানে বেকারের সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর মোহনপুরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এনামূল হকের কর্মী সমাবেশ

হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার

Paris
Update : মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০২২

প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীদের হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। ওই লক্ষ্যে সরকারের একাধিক প্রতিষ্ঠান সক্রিয়। ওসব প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ অবস্থানে কাজ করছে। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মাঠপর্যায়ে, বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) ব্যাংকিং চ্যানেলে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দেশে হুন্ডি বন্ধে কাজ করছে। মূলত হুন্ডি বন্ধ করে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতেই ওসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। হুন্ডির সঙ্গে বড় চক্র জড়িত। ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ গত বছরের জুলাই থেকে কমতে শুরু করে। তারপর প্রতি মাসেই গড়ে রেমিট্যান্স কমছে। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়েছে। কিন্তু বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব ও দেশে বিদ্যমান সংকট মোকাবিলায় রিজার্ভ বাড়ানোর বিকল্প নেই। কারণ রপ্তানি আয় কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে শুধু রেমিট্যান্স বাড়াতে পারলে রিজার্ভের ওপর চাপ কমবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীও রেমিট্যান্সে পাঠানোর ক্ষেত্রে হুন্ডি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই প্রেক্ষিতে বিএফআইইউ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্সের হুন্ডির ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। সেখানে বাণিজ্যিক ব্যাংকের পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও হুন্ডির তথ্য পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে হন্ডিতে জড়িত ২ শতাধিক হিসাব সাময়িকভাবে জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি হুন্ডির সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট এজেন্টদের লাইসেন্স বাতিল করার প্রক্রিয়া চলছে। বিএফআইইউ থেকে ইতোমধ্যে হুন্ডির বিষয়ে সন্দেহভাজনদের একটি তালিকা গোয়েন্দা সংস্থার কাছে দেয়া হয়েছে। আর গোয়েন্দারা ওই বিষয়ে মাঠপর্যায়ে তদন্ত করছে।
সূত্র জানায়, ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে সারাদেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের অর্থ কারা প্রাপকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তার একটি তালিকা ধরে তদন্ত করছে। কোথায় কোনো অস্বাভাবিক লেনদেন দেখলেই বিশদ তদন্ত করা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্প্রতি ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট ও মৌলভীবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাছাড়া বিদেশে প্রবাসীদের কাছ থেকে যারা রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে হুন্ডির মাধ্যমে দেশে পাঠাচ্ছে ওরকম বাংলাদেশি বেশ কিছু নাগরিকের তালিকাও সংগ্রহ করা হয়েছে। তারা প্রবাসীদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে হুন্ডিতে দেশে পাঠাচ্ছে। আর হুন্ডি বেশি টাকা পেয়ে অনেকেই অবৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। সূত্র আরো জানায়, বিশ্বের যেসব দেশ থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স বেশি আসে ওসব দেশের দূতাবাসগুলোতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। ওসব চিঠিতে হুন্ডি বন্ধে প্রবাসীদের সচেতন করা এবং কারা হুন্ডির সঙ্গে জড়িত তাদের বিষয়ে ওই দেশের সরকারকে অবহিত করতে বলা হয়। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে কয়েক মাস আগে পর্তুগালে সমস্যা হয়েছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়েছে। মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হুন্ডি বন্ধে তৎপরতা শুরু করেছে। বিদেশে প্রবাসীরা ব্যাংকে হিসাব খুলতে পারে না। ভাষাগত সমস্যার কারণেও অনেকে ব্যাংকের সেবা নিতে পারে না। তাছাড়া প্রবাসীরা যেখানে কাজ করে তার চেয়ে ব্যাংক অনেক দূরে। ওই কারণে প্রবাসীরা ব্যাংকমুখী হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের কাছাকাছি ব্যাংক সেবা পৌঁছে দেয়া জরুরি। একই সাথে দেওে ব্যাংক সেবায় হয়রানি বন্ধ করতে হবে। তাহলেই প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে ব্যাংকমুখী হবে। এদিকে দশের ব্যাংকগুলোকে বিদেশে আরো এক্সচেঞ্জ হাউজ খুলতে বলা হয়েছে। যাতে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারে। একই সঙ্গে বর্তমানে যেসব এক্সচেঞ্জ হাউজ বা ব্যাংক রয়েছে সেগুলোর শাখা আরো বাড়ানো হচ্ছে। তার মাধ্যমে প্রবাসীদের কাছে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হুন্ডির সঙ্গে বড় একটি সিন্ডিকেট জড়িত। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের মধ্যে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে আশার আলো দেখাতে পারে। গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশ থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার প্রবাসী বিদেশে গেছে। তারা রেমিট্যান্স পাঠানো শুরু করলে সার্বিক বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কিছুটা কমবে।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris