মঙ্গলবার

৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অগ্নিঝরা মার্চ

Paris
Update : সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০২২

এফএনএস : আজ ১৪ মার্চ। ঢাকার উত্তাল রাজপথে সেদিন ছিল এক ব্যতিক্রমী চিত্র। মাঝিমাল্লারা সব বৈঠা হাতে এদিনে রাজপথে নেমে আসে। সেদিনের রাজপথ ছিল মাঝিমাল্লাদের দখলে। দাঁড়-বৈঠা হাতে শত শত মাঝিমাল্লা সেদিন পাকিস্তানী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে মিছিল করে। সামরিক আইনের ১১৫ ধারা জারির প্রতিবাদে সেদিন বেসরকারী কর্মচারীরাও বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। দেশের জনগণকে গণতান্ত্রিক অবস্থা থেকে বঞ্চিত করার প্রতিবাদে খ্যাতিমান শিল্পী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন তাঁর ‘হেলাল ইমতিয়াজ’ খেতাব বর্জন করার ঘোষণা দেন।

সশস্ত্র যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে মুক্তিপাগল বীর বাঙালী। একাত্তরের অগ্নিঝরা এ দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জানালেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আলোচনায় বসতে চাইলে তাঁর কোন আপত্তি নেই। তিনি অবশ্য এও বলেন, যদি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া দাবি পূরণের ইচ্ছে নিয়ে বসতে চান, তবেই তিনি বসবেন। তবে এ জন্য প্রেসিডেন্টকে আন্দোলনের দাবি পূরণের সদিচ্ছা দেখাতে হবে। এও জানিয়ে দেন, বৈঠক হবে দ্বিপক্ষীয়, কোনক্রমেই তৃতীয় কোন পক্ষ সেখানে উপস্থিত থাকতে পারবে না।

অন্যদিকে করাচীর নিস্তার পার্কে আয়োজিত এক জনসভায় পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের দাবি মোতাবেক সংসদের বাইরে সংবিধানসংক্রান্ত সমঝোতা ছাড়া ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হলে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে পৃথকভাবে দুটি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক। তবে ঢাকায় এসে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছেও প্রকাশ করেন তিনি।

এদিকে ন্যাপ (ওয়ালী) নেতা খান আবদুল ওয়ালী পূর্ব পাকিস্তান সফরকালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একান্তে আলাপ-আলোচনা করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বাঙালীর আন্দোলন এবং তাদের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করেন। একাত্তরের এ দিনে জাতীয় লীগ নেতা আতাউর রহমান অস্থায়ী সরকার গঠনের জন্য বঙ্গবন্ধুর কাছে দাবি জানান। এ সময় দেশের পত্রিকাগুলোতেও আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে সম্পাদকীয় লেখা চলতে থাকে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমেদ অসহযোগ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৫ মার্চ পালনে ৩৫টি নতুন নির্দেশনা দেন। এ সময় সমগ্র বাংলাদেশ আওযামী লীগ এবং বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে চলতে থাকে। এ দিনে ঢাকার বায়তুল মোকাররমের সামনে ছাত্র ইউনিয়নের এক সমাবেশ থেকে দেশে ৭ কোটি জনতাকে সৈনিক হিসেবে সংগ্রামে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। একই দিনে শিল্পী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা শিল্পী সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris