স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) অফিসের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুশান্ত কুমার বসাকের উপর হামলা চালিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঠিকাদার লস্কর বাবু ও রাসেলের বিরুদ্ধে। রোববার (২৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর রুমে এই ঘটনা ঘটে। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শামসুল হুদা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদারী কাজ না পেয়ে এই হামলা ও প্রকৌশলীকে মারধর করেছে ঠিকাদার লস্কর বাবু ও রাসেল। এঘটনায় বিএমডিএ প্রকৌশরী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিএমডিএ অফিস সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কৃষকলীগ নেতা লস্কর বাবু কয়েকজন ঠিকাদার ও বহিরাগত লোকজনদের নিয়ে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শামসুল হুদার রুমে প্রবেশ করেন। এ সময় রুমে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুশান্ত কুমার বসাক ছিলেন। ঠিকাদাররা নাটোরে ইপিজি প্রকল্পের ৫০টি লটের টেন্ডারে কেন তাদের কাজ দেয়া হয়নি এই নিয়ে প্রকৌশলী তাদের সাথে তর্কে জড়ায়। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শামসুল হুদার সামনেই তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুশান্ত কুমার বসাকের উপর চড়াও হয় এবং তার শার্টের কলার ধরে মারধর করে জামা কাপড় ছিড়ে দেয়। এসময় বিএমডিএর অন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এসে তাকে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় বিএমডিএ প্রকৌশলী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা অবিলম্বে এই ঘটনার সাথে জড়িত ঠিকাদারদের সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবী জানায়।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিএমডিএর ঠিকাদার মহানগর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাকির হোসেন ওরফে লস্কর বাবু বলেন, মারামারি বা লাঞ্ছিত করার মতো কোন ঘটনা না। একটু উচ্চবাচ্য হয়েছে। তিনি বলেন, পিডি রাজশাহীর ঠিকাদারদের কোন কাজ দেননি। সব কাজ দিয়েছেন বাইরের ঠিকাদারদের। ফলে স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে হতাশা আছে। এর জের ধরেই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে ঘটনাটা খুব বেশি বড় নয়। পরে এর সমাধান হয়ে গেছে বলে দাবি তাঁর। লস্কর বাবু বলেন, বিএমডিএ নাটোর এলাকায় ৫০টি লাটের কাজকে কেন্দ্র করে প্রকৌশলীদের সাথে বাক বিতন্ড হয়। কোন প্রকৌশলীকে মারধর করা হয়নি বলে তিনি দাবী করেন।
এ ব্যাপারে বিএমডিএ’র চেয়ারম্যান আখতার জাহান জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। কিন্তু রাজশাহীর বাইরে অবস্থান করায় বিস্তারিত জানেন না। রাজশাহী ফিরে সব শুনে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ জানান তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনিও বিষয়টি শুনেছেন। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক বলে তিনি দাবী করেন। রাজশাহীতে ফিরে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান। বিএমডিএ সুত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত উক্ত ঠিকাদার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বিএমডিএ অফিসের অধিপত্য বিস্তার করে রেখেছেন। কেউ কিছু বললে আওয়ামী লীগের রাজশাহী শীর্ষ নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে কাজ হাসিল করে থাকেন। তার কর্মকান্ডে ব্রিবত স্থানীয় আওয়ামী লীগ। অতিষ্ঠ বিএমডিএ’র প্রকৌশলী থেকে শৃরু করে কর্মকর্তা কর্মচারীরা।