শুক্রবার

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
জাতীয় কারাতে প্রতিযোগিতায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাফল্য উপজেলা নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ করাই লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী তানোরে হিমাগারে ভারতীয় আলু মজুদ? অপতথ্য রোধে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান তথ্য প্রতিমন্ত্রীর মোহনপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত, ২ জন আহত ইউনিয়নের সম্পাদক মাহাতাবের বিরুদ্ধে চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রাজশাহীর বাস শ্রমিকদের রাজশাহী নগরীতে পলাতক আসামির অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ বাঘায় স্ত্রীর লাঠির আঘাতে আহত শিক্ষকের মৃত্যু চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করতে জনপ্রশাসনে চিঠি শিক্ষামন্ত্রীর জলবায়ু বিপর্যয় উপকূলীয় মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলছে : গবেষণা

সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ধস নামায় সরকার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে বেশি ঋণ নিচ্ছে

Paris
Update : শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২২

এফএনএস : সঞ্চয়পত্র বিক্রি ধারাবাহিকভাবে কমছে। ফলে সরকারকে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নবেম্বর) ৪৪ হাজার ২৭০ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। ওই সময়ে ৩৪ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা পুরনো সঞ্চয়পত্রের মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে। ওই খাতে সরকারের নিট ঋণ এসেছে ১০ হাজার ২৫ কোটি টাকা। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ হাজার ১৯ কোটি টাকা বা প্রায় ৫৩ শতাংশ কম। জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চলতি বছরের একক মাস নভেম্বরে সরকার মোট ৮ হাজার ৯৪১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেছে। তার মধ্যে মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধ হয়েছে ৮ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। মূল অর্থ পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থ নিট বিক্রি হিসেবে গণ্য হয়। ওই হিসাবে ওই সময়ে নিট বিক্রির পরিমাণ ৭০১ কোটি টাকা। একদিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে গেছে, অন্যদিকে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, সুদ পরিশোধসহ বিভিন্ন কাজে ব্যয় বেড়েছে। ফলে রাজস্ব আয় ও বিদেশী অর্থ ছাড় বাড়লেও ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারকে বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (১ জুলাই থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত) ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকার ১৮ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। ফলে ৩০ ডিসেম্ব^র শেষে সরকারের ব্যাংক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা। যা গত ৩০ জুনে ছিল ২ লাখ ৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে অনুদান ছাড়া ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা ঘাটতি ধরা হয়েছে। যা মোট জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল ব্যাংক খাত। এবারও ঘাটতি পূরণে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। তার আগের অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা নেয়ার লক্ষ্য থাকলেও তার বিপরীতে সরকার নিয়েছিল মাত্র ২৬ হাজার ৭৮ কোটি টাকা।

সূত্র আরো জানায়, সরকার সম্প্রতি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ও তার ব্যবস্থাপনায় বেশকিছু পরিবর্তন এনেছে। চলতি বাজেটে ২ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র বা পোস্টাল সেভিংস কিনতে হলে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাছাড়া ৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র শুধু সঞ্চয় অধিদফতরে মিলবে। সব শেষ গত ২১ সেপ্টেম্বর সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার ২ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। তবে ১৫ লাখ টাকার নিচে মুনাফার হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন নির্দেশনা অনুযায়ী ৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে বর্তমানে মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যায়। নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এখন থেকে যারা সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করবেন তারা মেয়াদ শেষে ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ থাকলে মুনাফার হার হবে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ। ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক ৩ বছর মেয়াদী সঞ্চয়পত্রে বর্তমানে মেয়াদ শেষে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৪ শতাংশ।

এখন ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার কমিয়ে করা হয়েছে ১০ শতাংশ। সঞ্চয়পত্রে যাদের বিনিয়োগ ৩০ লাখ টাকার বেশি তারা মেয়াদ শেষে ৯ শতাংশ হারে মুনাফা পাবে। আর ৫ বছর মেয়াদী পেনশনার সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে এতোদিন ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ হারে মুনাফা দেয়া হতো। এখন ওই সঞ্চয়পত্রে যাদের বিনিয়োগ ১৫ লাখ টাকার বেশি তারা মেয়াদ শেষে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবে। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ থাকলে ওই হার হবে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

এদিকে দেশে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় পরিবার সঞ্চয়পত্র। ৫ বছর মেয়াদী ওই সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। এখন ওই সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার কমিয়ে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ওই হার ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাবে বর্তমানে মুনাফার হার সাড়ে ৭ শতাংশ। তাতে কোন পরিবর্তন আনা হয়নি। ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে ৩ বছর মেয়াদী হিসাবে বর্তমানে মুনাফার হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। এখন ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার হবে ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে হবে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris