স্টাফ রিপোর্টার : চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাটে গৃহহীন, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের গৃহনির্মাণ প্রকল্পে কাজে ত্রুটির হওয়ায় নির্মাণ শ্রমিকদের পেটালেন আনছার বাহিনী। গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) ভোলাহাট উপজেলার চরধরমপুর বিন্দুপাড়ায় ৪-৫ জন নির্মাণ শ্রমিককে মারধর করা হয়। ইউএনও সমর কুমার পালের নির্দেশে আনসার সদস্যরা শ্রমিকদের মারধর করে বলে অভিযোগ নির্মাণ শ্রমিকদের। তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পাল মুঠোফোনে জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প।

এখানে কোন গাফলিত করার সুযোগ নেই। কয়েকবার লোক পাঠিয়ে তাদের সাবধান করা হয়েছে কিন্তু তারা শুনেনি। আর এলাকার কিছু লোক প্রকল্প এলাকায় দখলদার আছেন। এই প্রকল্প হওয়ায় অনেকের ‘আঁতে ঘা’ লেগেছে। তাই শুরু থেকেই এ প্রকল্প নিয়ে কিছু লোক নানা ঝামেলা সৃস্টি করছে। তাই তিনি নিজে গিয়ে বিষটি দেখভাল করছেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ মেহেদী ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় আমিও উপস্থিত ছিলাম। শ্রমিকরা কাজে ত্রুটি করেছে। তাই তাদেরকে বকাঝকা করা হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে চরধরমপুর বিন্দুপাড়ায় নির্মাণাধীন ১০০টি গৃহ নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে যান ইউএনও। সেখানে গিয়ে গৃহনির্মাণ কাজের ত্রুটি দেখেন। এক পর্যায়ে তিনি কাজ সঠিকভাবে করার দির্দেশ দেন। নির্মাণ শ্রমিকরা তা না করায় তাদের ধরার দির্দেশ দেন। এসময় পরিস্থিতি দেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আনছার বাহিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কয়েকজন শ্রমিকেেক ধরে আনার সময় মারধর করেন।

এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ মেহেদী ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. কাউসার আলম সরকার, ভোলাহাট ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ভুটু, মো. আফজাল হোসেন হিরো। আনসার সদস্যদের মার খেয়ে আহত হয়, নির্মান শ্রমিক আনোয়ার (৩৫), সামাউন, কাবিরুল (৩০) ও রবিউল।

এদিকে নির্মাণ কাজে সামান্য ত্রুটির কথা স্বীকার করে রাজমিস্ত্রী মো. বল্টু মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, পুরো ১০০টি ঘর নির্মাণে কোন গাফেলতি বা ত্রুটি নেই। সবগুলো পিলারে সঠিকভাবে রড দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র রান্নাঘরের পাশে বাথরুমের পিলারে মিস্ত্রিরা রড দিতে ভুলে গেছে। পরে উপজেলা থেকে ইঞ্জিনিয়ার এসে এটি ধরেছিল। আমরা বলেছিলাম, যেহেতু ভুল হয়ে গেছে এখন কিভাবে কাজ করবো স্যার। তিনি (প্রকৌশলী) জানান, এর বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে পিলারের উপরে গ্রুপ করে ঢালাই করে দিবে।

আমরা সেভাবেই কাজ করছিলাম। তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে শ্রমিকরা কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় উপস্থিত হন ইউএনও। এমনকি অনেকেই তখন বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। এসময় একই ভুলের কারনে ইউএনও স্যারকে সব খুলে বলা হয়। এরপর ধরে ধরে ৪-৫ জন শ্রমিককে নিয়ে এসে আনসার সদস্যরা পেটায়।

এদিকে ঘটনার পরের দিন শুক্রবার কাজে যায়নি নির্মাণ শ্রমিকরা। ভোলাহাট সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইয়াজদানী জর্জ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিমার্ণ শ্রমিকেরা আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। এ ঘটনার সমাধান না করা হলে নির্মাণ কাজে যোগ দিবেন না তারা। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পালকে জানানো হয়েছে।