শনিবার

২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
তীব্র তাপদাহে রাসিকের উদ্যোগে ১০ স্থানে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প নওগাঁয় ১১০ মেট্রিক টন ভূট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে বাঘা উপজেলায় আ.লীগের প্রার্থী নির্ধারণ! বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী গরমের জন্য সরকারকে দায়ী করলেন রিজভী আপাতত গরমেই খেলবে সাবিনা-সানজিদারা ১০ কোটি টাকা অনিয়ম পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক লালমনিরহাটেও যোগ দেননি কেএনএফ প্রধান নাথানের স্ত্রী বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তীব্র তাপদাহে নগরবাসীর পাশে থাকতে রাসিক যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে

করোনাকালে কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশের দুর্দান্ত সাফল্য

Paris
Update : বুধবার, ৯ জুন, ২০২১

এফএনএস : বিশ্ব ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করেছে বাংলাদেশে তৈরি কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য। ফলে ইউরোপসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ইলেকট্রনিক্স পণ্যের নতুন রপ্তানি বাজার সৃষ্টি হয়েছে। মূলত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, উচ্চ গুণগতমান ও সাশ্রয়ী মূল্যের কারণে বিশ্ব ক্রেতাদের আস্থা জয় করে নিচ্ছে বাংলাদেশী ইলেকট্রনিক্স পণ্য। ফলে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি দুর্যোগের মধ্যেও বাংলাদেশের কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানিতে দুর্দান্ত সাফল্য এসেছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানির পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় সাড়ে ৮ গুণ বেড়ে ১২.৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন মোট রপ্তানির প্রায় ৬৭.২১ শতাংশ আয় এককভাবে অর্জন করেছে। কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স খাত এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশের কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানি তালিকায় রয়েছে রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এলইডি টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন, ব্লেন্ডার, রাইসকুকার, গ্যাস স্টোভ, ইন্ডাকশন কুকার, ফ্যান, হট প্লেট, রেফ্রিজারেটর কম্প্রেসর ও কম্প্রেসর তৈরির যন্ত্রাংশ। গত জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে দেশের কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ বা ১২.২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

আর আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০) একই সময়ে ওই খাতের রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৪ লাখ ৩৮ হাজার বা ১.৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ওই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দেশের ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যে সাড়ে ৮ গুণ রপ্তানি বেড়েছে। খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারের কাছ থেকে রপ্তানি প্রণোদনা ও অন্যান্য নীতি সহায়তা পেলে দেশীয় ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিজ পোশাক শিল্পের মতো আরেকটি বড় রপ্তানি খাত হয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই স্থানীয় বাজারে বিদেশী ব্র্যান্ডের দৌরাত্ম্য দূর করে নিজেদের একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে দেশীয় ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডগুলো সামর্থ্যের প্রমাণ দেখিয়েছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশি ব্র্যান্ডের বিশ্ব কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স বাজারে নেতৃত্ব দেয়ার যথেষ্ট সামর্থ্য রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমেরিকা ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় এখন বেশিরভাগ গ্লোবাল ব্র্যান্ড অন্যান্য এশিয়ান দেশগুলোর সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনের দিকে ঝুঁকছে। এই সুযোগ লুফে নিয়ে বাংলাদেশের বিশ্ব কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্যের হাব হয়ে উঠার ব্যাপক সামর্থ্য রয়েছে। বর্তমানে দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোই স্থানীয় বাজারে ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সের চাহিদার ৯০ ভাগেরও বেশি পূরণ করছে।

তার মধ্যে এখন ওয়ালটনের ফ্রিজের প্রায় ৭৫ ভাগ মার্কেট শেয়ার। পাশাপাশি টেলিভিশনের প্রায় ৫০ শতাংশ বাজার এবং এককভারে এসির চাহিদা পূরণেও ওয়ালটন শীর্ষে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও ইউরোপের প্রায় ৪০টি দেশে কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য রপ্তানি করছে ওয়ালটন। ইলেনকট্রনিক্স খাতের রপ্তানি আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি এই শিল্পকে সম্ভাবনাময় নতুন রপ্তানি খাত করে তোলার ক্ষেত্রে ওয়ালটন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে ওয়ালটন ৮.৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য রপ্তানি করেছে। যা মোট রপ্তানির প্রায় ৬৭.২১ শতাংশ।

এদিকে চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত ওয়ালটন রপ্তানি করেছে প্রায় ১৮ লাখ ৩৬ হাজার মার্কিন ডলারের রেফ্রিজারেটর, প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলারের ফ্রিজার, প্রায় ১৭ লাখ ৬ হাজার মার্কিন ডলারের এয়ার কন্ডিশনার, প্রায় ৩৮ লাখ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের এলইডি টেলিভিশন, প্রায় ৬ লাখ ৬৬ হাজার মার্কিন ডলারের রেফ্রিজারেটর কম্প্রেসর ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ, প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার মার্কিন ডলারের ওয়াশিং মেশিন, প্রায় ১০ হাজার ২৬৬ মার্কিন ডলারের ব্লেন্ডার, প্রায় ৩৭ হাজার ৮’শ মার্কিন ডলার মূল্যের গ্যাস স্টোভ, প্রায় ২৭ হাজার ৮’শ মার্কিন ডলারের রাইস কুকার, ৪ হাজার ৪’শ মার্কিন ডলারের ইন্ডাকশন কুকার, ১৭ হাজার ৬’শ ডলারের ফ্যান, ২ হাজার ২’শ ডলারের হট প্লেট।

করোনা মহামারির ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশী ইলেকট্রনিক্স পণ্যের রপ্তানি বাণিজ্যে দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করেছে ওয়ালটন। ইউরোপের জার্মানি, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, স্পেন, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, ইতালির মতো বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ওয়ালটন পণ্যের নতুন রপ্তানি বাজার তৈরি হয়েছে। ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসেই ওয়ালটনের পণ্য রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৯ গুণ বেড়ে ১০.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসে প্রায় ৭.৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে ওয়ালটন।

আগের বছরের একই সময়ে তাদের রপ্তানির পরিমাণ ছিল মাত্র ০.৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্যদিকে দেশীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্যের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ ও নতুন বাজার সৃষ্টিতে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ জানান, কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্সের আন্তর্জাতিক বাজারকে টার্গেট করে ওয়ালটন নিয়েছে ‘ভিশন ২০৩০’। লক্ষ্য পূরণে দীর্ঘ ও স্বল্প মেয়াদি পরিকল্পনার সমন্বয়ে রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। ওয়ালটনের তৈরি ফ্রিজ, টিভি, এসি, কম্প্রেসর, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি প্রযুক্তি পণ্যে অল্প সময়ের মধ্যে জয় করে নিচ্ছে বিশ্ব ক্রেতাদের আস্থা।

যার প্রেক্ষিতে কোভিড-১৯ এর ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও ইউরোপের বিভিন্ন উন্নত দেশে ওয়ালটন পণ্যের রপ্তানি বাজার বেড়েছে। এ বিষয়ে ওয়ালটনের মতো দেশের অন্য ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন প্রতিষ্ঠানগুলোকেও রপ্তানি বাণিজ্যে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার আহবান জানিয়ে ইপিবি’র ভাইস-চেয়ারম্যান এ.এইচ.এম আহসান জানান, বিশ্বে বাংলাদেশি কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্সের সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে। দেশীয় ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডের বিশ্ববাজারে প্রতিযোগী মূল্যে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উচ্চ গুণগতমান পণ্য দেয়ার যথেষ্ট সামর্থ্যও রয়েছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris