রবিবার

৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
আজ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে গাজীপুরে ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের শিডিউল বিপর্যয় রাজশাহী জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর অপসারণ চায় ঠিকাদাররা! নগদ আছে ১ কোটি টাকা, জানেন না টিভি-ফ্রিজ ও আসবাবপত্রর মূল্য! সরকার পরিচালনাকারী সবাই ফেরেশতা নয় : তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মিথিলার মুকুটে যুক্ত হলো নতুন পালক মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখলেন নায়ক দেব! ধান কাটতে গিয়ে ‘হিট স্ট্রোকে’ বাঘার শ্রমিকের সিংড়ায় মৃত্যু! গাজীপুরে ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের শিডিউল বিপর্যয় গাজীপুরে ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের শিডিউল বিপর্যয়

স্কুল শিক্ষক থেকে ভূমিমন্ত্রী

Paris
Update : শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৪

এফএনএস : দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নতুন মন্ত্রীসভায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। মন্ত্রীসভায় এবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। শস্যভাণ্ডার খ্যাত খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার এ কৃতী সন্তানের এ সাফল্যে গোটা নির্বাচনী এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এদিকে মন্ত্রী পরিষদে ঠাঁই দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। ৩৯ বছরের শিক্ষকতা শেষ করে রাজনীতিতে আসা নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এর আগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বৈচিত্র্যময় শিক্ষকতা জীবনের সঙ্গে যোগ হয়েছে সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা। সেখানেও সাফল্যের বিজয়গাথা। প্রধান শিক্ষক থেকে ইউপি চেয়ারম্যান, এরপর সংসদ সদস্য থেকে প্রতিমন্ত্রী, এবারে দ্বিতীয়বারের মতো হলেন পূর্ণ মন্ত্রী। এক সময়ের মানুষ গড়ার কারিগর এখন দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে কাজ করছেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। জনগণের ভালোবাসা সিক্ত হয়ে এ নিয়ে মোট ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ বলেন, দীর্ঘ শিক্ষকতা ও রাজনৈতিক জীবনে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ নীতির প্রশ্নে অটল এক ব্যক্তিত্ব। যার কারণে তার সব ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষের কাছে তিনি আদর্শ ও নীতির মূর্তপ্রতীক হিসেবে রয়েছেন। তার সততার কারণে তাকে আবারও মন্ত্রী পরিষদে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। এজন্য আমরা আনন্দিত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ। ডুমুরিয়ার গুটুদিয়া এলাকার বাসিন্দা দি ফিউচার আইডিয়াল মাদার অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ন্যায়-নীতি আর আদর্শের প্রতীক নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য স্থানে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি নতুন মন্ত্রীর হাতে গুরুত্বপূর্ণ এ মন্ত্রণালয়ের আমূল পরিবর্ত হবে। ভূমি বিষয়ে যত জটিলতা আছে তার অবসান হবে।
নবনিযুক্ত ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন: নারায়ণ চন্দ্র চন্দ খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার উলা গ্রামের স্বর্গীয় কালীপদ চন্দের মেজ ছেলে। ১৯৪৫ সালের ১২ মার্চ তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ছিলেন স্বর্গীয়া রেণুকা বালা চন্দ। স্ত্রী ঊষা রানী চন্দও পেশায় একজন শিক্ষক। তার বড় ছেলে অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র চন্দ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য। উলাগ্রামের পাঠশালায় তার শিক্ষাজীবন শুরু। বান্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৬১ সালে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক্যুলেশন পাশ করেন। ১৯৬৩ সালে দৌলতপুর বিএল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং ১৯৬৭ সালে একই বিষয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ১৯৬১ সালে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৬৩ সালে দৌলতপুর বিএল কলেজ থেকে এইচএসসি, ১৯৬৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং ১৯৬৭ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এর পরপরই তিনি ডুমুরিয়া সাহস নোয়াকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৩ সালের ৭ মে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ খুলনার ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এই বিদ্যালয় থেকেই তিনি মেট্রিক পাস করেছিলেন। তার প্রচেষ্টায় ১৯৭৪ সালে ডুমুরিয়া স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র চালু হয়। এর আগে এই এলাকার পরীক্ষার্থীদের খুলনা শহরে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হতো। শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পরপরই তিনি সেখানে প্রতিষ্ঠা করেন থানা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। তিনি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে চন্দ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি ২০০৫ সালের ১১ মার্চ শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসর নেন। ছাত্রজীবন শেষ করে ১৯৬৭ সালেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে আওয়ামী লীগের থানা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। ১৯৮৪ সালে তিনি থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৯৫ সালে থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। সর্বশেষ তিনি ২০০৩ সালে গঠিত উপজেলা কমিটিতেও সভাপতি নির্বাচিত হন। সেই থেকে আজও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে চলেছেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। বাংলাদেশে প্রথম অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে তিনি ডুমুরিয়া উপজেলার ভাণ্ডারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ পদে তিনি ছয় বার নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০০ সালে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য মন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন ইউসুফের মৃত্যুর পর প্রথম বার উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সবার প্রিয় শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি চারদলীয় জোটের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পুনরায় একই আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এই নেতা।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris