শনিবার

১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকের আমানত কমেছে, ঋণ বাড়ছে, আস্থার সংকট ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে : শেখ হাসিনা রাজশাহীতে আমের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে সজাগ থাকার পরামর্শ কৃষিমন্ত্রীর বড়াল নদের উপর ব্রীজ নির্মান স্থান পরিদর্শন করেন যুগ্ম সচিব পবায় উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের নিয়ে জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠান ইসলামী নার্সিং কোচিং সেন্টারের উদ্যোগে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা রাজশাহীতে গ্রীষ্মকালীন কারুশিল্প উদ্যোক্তা মেলার উদ্বোধন অংকের হিসাব লাগে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত : আব্দুল ওয়াদুদ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন হজ পালনের ধাপসমূহ

রাজশাহী জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর অপসারণ চায় ঠিকাদাররা!

Paris
Update : শনিবার, ৪ মে, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার : জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদের বিরুদ্ধে টেন্ডার সংশ্লিষ্ট ও দাপ্তরিক বিষয়বালী নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় ঠিকাদাররা। তারই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীর ঠিকাদাররা নির্বাহী প্রকৌশলীর অপসারণ চেয়ে অধিদপ্তরের ঢাকাস্থ প্রধান কার্যালয় বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বলে জানায় সূত্র। উক্ত অভিযোগপত্রটির অনুলিপি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর ডাকযোগে প্রেরিত হয়েছে বলেও নিশ্চিত করে সূত্র। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ২২ প্যাকেজের একটি কাজ যার অংকের হিসেব প্রায় ২২ কোটি টাকা। সেই কাজের টেন্ডার নিয়েই স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলীর উপর সৃষ্টি হওয়া ক্ষোভ আর অসন্তোষের অন্যতম কারণ বলেও জানান স্থানীয় ঠিকাদাররা। এছাড়াও ঠিকাদারদের সাথে অসদাচরণের কথাও লেখা আছে সেই অভিযোগপত্রে। ঢাকাস্থ দুটো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত প্রকৌশলীর নিজস্ব প্রতিনিধি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বলেও ট্রিট করা হয়েছে উক্ত অভিযোগে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের ২২ প্যাকেজের একটি কাজের বিপরীতে সারা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েও কাজ পায়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজশাহীর একজন ঠিকাদার পত্রিকার প্রতিনিধিকে জানান, পূর্ববর্তী সময়গুলোতে আমার কাজের সুনাম থাকলেও নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে আমিসহ স্থানীয় ঠিকাদাররা ভিরতেই পারছেনা। উনার আচরণে অতিষ্ট হয়ে উঠেছি আমরা। নতুন করে কাজ পাওয়া তো দূরের কথা; চারটি বকেয়া বিলের জন্য ছয় মাস ধরে ঘুরেও কোন কুলকিনারা পাচ্ছিনা। উনার স্বচজনপ্রীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার জন্য রাজশাহীর ঠিকাদাররা কাজ পাচ্ছে না। নিজ এলাকার ঠিকাদারসহ ঢাকার নির্দিষ্ট দুটো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে সর্বদাই তিনি নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এমন অভিযোগ ছিল উনার পূর্ববর্তী কর্মস্থল ঠাকুরগাও জেলাতেও। রাজশাহীর বিভাগীয় দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিকে তিনি মূল্যায়ন ও তোয়াক্কা করেন না। একক সিদ্ধান্তে নিজ দপ্তর পরিচালনা করার অপচেষ্টাও চালান বলেও অভিযোগ ঠিকাদারদের। পূর্ববর্তী সময়ের মতো রাজশাহীতে এসেও ঢাকাস্থ ‘এসএম এন্টারপ্রাইজ ও কথা এন্টারপ্রাইজ’ নামের দুটো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখছেন। রাজশাহীর ঠিকাদাররা আরো জানান, ঢাকাস্থ এইদুটো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একই পরিবারের বলেও আমরা শুনেছি। একটি স্বামীর নামে আর অন্যটির লাইসেন্স স্ত্রীর নামে। উপরোক্ত অভিযোগগুলোর সতত্যা স্বীকার করেন রাজশাহীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আফিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকার আব্দুল আওয়াল ও সারা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকার সালাউদ্দিন সোহাগ। ঢাকাস্থ প্রধান কার্যালয়ে প্রেরিত অভিযোগপত্রটিতে স্বাক্ষর আছে রাজশাহীস্থ মেসার্স নাহিদ এন্টারপ্রাইজ, আরডি ইন্টারন্যাশনাল, মাসুদ এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স নাহিদ এন্টারপ্রাইজ, অনি এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স নুসাইবা এন্টারপ্রাইজ, আশিয়া নওসেদ এন্টারপ্রাইজ, আফিয়া এন্টারপ্রাইজ ও সারা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীদের।
ক্ষুব্ধ ঠিকাদাররা বলেন, ঢাকাস্থ এসএম এন্টারপ্রাইজ ও কথা এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠান দুটো উনার প্রতিনিধি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বলেই আমরা শুনেছি। নিজের দাপ্তরিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক নোটিশের মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ২২ প্যাকেজের একটি কাজের ১৬ প্যাকেজের কাজ ঢাকার ওই দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দিয়েছেন তিনি। রাজশাহীর স্থানীয় ঠিকাদাররা সেটির প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি সবার সাথে অসদাচরণ করেন। বকেয়া বিল সম্পর্কে জানতে গেলেও তিনি তার ক্ষমতার গরম দেখান।
স্থানীয় ঠিকাদারকে ক্ষোভের মুখে তিনি কৌশলবলম্বনে কিছু ঠিকাদারকে পরবর্তী অর্থবছরের কাজ দেবার আশ^াস দেয়ার পাশাপাশি স্থানীয় ক্যাডারবাহীনি দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার অপচেষ্টা চালান। আটকে থাকা বিলের বিষয় ছাড়াও ঠিকাদারি ও সংশ্লিষ্ট কাজের খোজ খবর নেবার জন্য দপ্তরে গেলে অধিকাংশ সময়েই উনাকে পাওয়া যায়না। মাসের অর্ধাংশ সময়েই তিনি অফিস করেন না বলেও সত্যতা স্বীকার করেন কর্মরতদের অনেকেই। এমন অভিযোগ উনার পূর্ববর্তী কর্মস্থল ঠাকুরগাঁও কার্যালয়েও ছিল বলেই শুনেছি বিভিন্ন ঠিকাদারের মাধ্যমে বলে নিশ্চিত করেন রাজশাহীর ঠিকাদাররা। সরকারী কর্মচারী (নিয়মিত উপস্থিতি) বিধিমালা ২০১৯- এ বলা আছে, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্বনুমতি ব্যতিরেকে কোনো সরকারি কর্মচারী নিজ কর্মে অনুপস্থিত থাকিতে পারিবেন না। বিধি লঙ্ঘন হইলে, প্রতি ২ দিনের জন্য ১ দিনের বেতন কর্তন করা যাইবে। এই বিধিমালার ৪ এর উপবিধি(১) এ বলা হয়েছে, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে কোনো সরকারি কর্মচারী অফিস চলাকালীন অফিস ত্যাগ করিতে পারিবেন না। কিন্তু সরকারি সেই বিধিমালার তেমন কোন তোয়াক্কা করেন না নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ বলেও অভিযোগ ঠিকাদরদের। সেই অভিযোগের সত্যতা অকোপটে স্বীকার করেন কর্মরতদের অনেকেই। জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris