রবিবার

২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দার্জিলিংকে ডিজিটাল করতে লড়ছেন যে নারী উদ্যোক্তা

Paris
Update : মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০২৩

এফএনএস
জন্মভূমির জন্য কিছু করার তাগিদে ২০১৮ সালের শেষের দিকে মুম্বাইতে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও সাংবাদিকতার মতো পেশাকে পেছনে ফেলে দার্জিলিং চলে আসেন ৩৫ বছর বয়সী প্রশংসা গুরুং। চা, পর্যটন ও কাঠের জন্য বিখ্যাত দার্জিলিংয়ের মানুষদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করার আসায় এখানে আসেন তিনি। এখানকার অনেক যুবকই কাজের খোঁজে চলে যায় পার্শ্ববর্তী শহরে। তাদেরকে এখানেই কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ উদ্দেশ্যে তিনি স্থাপন করেন দার্জিঙ্ক, যা মূলত প্রযুক্তিভিত্তিক একটি স্টার্ট আপ। এখানে বিভিন্ন উদ্যোক্তারা তাদের পরিকল্পনা খুঁজতে, তহবিল খুঁজতে এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবেন। তাছাড়া এর মাধ্যমে দার্জিলিং এর বিভিন্ন পণ্য কেনাবেচার ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রশংসার লক্ষ্য হলো দার্জিলিংকে ডিজিটালভাবে উন্নত করা। স্কুলে থাকাকালীন সময়েই দিল্লিতে বেড়াতে গেলে সেখানকার পণ্যসামগ্রী দেখে প্রশংসার মনে হয় দার্জিলিংয়ের পণ্য দিয়েও এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা সম্ভব।স্কুলের পড়া শেষ করে তিনি দিল্লিতে ইতিহাস বিষয়ে অনার্স শেষ করেন এবং পরবর্তীতে সাংবাদিকতার জন্য মুম্বাইয়ে চলে যান। সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিষয়ে তিনি কোর্স সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে টাইমস নাও, ফেমিনা ও এমটিভির মতো বিভিন্ন সংস্থার সাথে কাজ করেন তিনি। পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে তিনি তার গল্প বলে যান। বিভিন্ন ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি প্রজেক্টেও কাজ করেছেন তিনি। সেসময়েও তিনি দার্জিঙ্কের কথাই ভাবতেন। ২০১৬ সালে তিনি দার্জিলিংয়ে এসে দার্জিঙ্ক কোম্পানিটি নিবন্ধিত করেন। পরবর্তীতে এক বছরের জন্য তাকে মুম্বাই ফিরে যেতে হয়। ২০১৯ সালে পুনরায় দার্জিলিংয়ে ফিরে তিনি তার কাজ শুরু করেন। ২০১৯ সালের শেষের দিকে যখন তিনি ব্যবসার কাজে মন দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত তখন করোনা মহামারী আকস্মিক আঘাত হানে। এর মাঝেই তিনি দার্জিলিংয়ের স্থানীয় আচার তৈরির কাজ শুরু করেন এবং এ কাজের জন্য স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। ধার করা স্কুটার এবং ১৪০০ রুপি দিয়ে শুরু হয় তার ব্যবসা। প্রথম মাসে কোনো প্রকার চার্জ ছাড়াই পণ্য সরবরাহ করেন তিনি। ধীরে ধীরে চারপাশের মানুষদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হন তিনি। প্রথম দিকে কেউই তার সঙ্গে কাজ করতে চাইতো না এবং ভালো চাকরি ছেড়ে দিয়ে এমন ব্যবসা কাজে একটি মেয়ের জড়িত হওয়াকে কেউই ভালো দৃষ্টিতে দেখেনি।
তবে ধীরে ধীরে দার্জিঙ্ক মানুষের ভরসার জায়গা হয়ে উঠে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কোম্পানিটি ১১ লাখ রুপি আয় করেছে। এখন দার্জিলিংয়ের লোকেরা বুঝতে পেরেছে তাদের আর কাজ খোঁজার জন্য বাইরে যেতে হবে না। বর্তমানে প্রশংসা দার্জিঙ্ক নিয়ে আরও অভিনব চিন্তাভাবনা করছেন।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris