বৃহস্পতিবার

২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
মোহনপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত, ২ জন আহত ইউনিয়নের সম্পাদক মাহাতাবের বিরুদ্ধে চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রাজশাহীর বাস শ্রমিকদের রাজশাহী নগরীতে পলাতক আসামির অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ বাঘায় স্ত্রীর লাঠির আঘাতে আহত শিক্ষকের মৃত্যু চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করতে জনপ্রশাসনে চিঠি শিক্ষামন্ত্রীর জলবায়ু বিপর্যয় উপকূলীয় মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলছে : গবেষণা গোপন নথিতে উঠে এল ইরানি কিশোরীকে যৌন নিপীড়ন-হত্যার ঘটনা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নির্মিত তাঁবু গুটাতে কলাম্বিয়া শিক্ষার্থীদের অস্বীকৃতি আজ মহান মে দিবস তিন দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দেখলো দেশবাসী

দেশ বাঁচাতে নৌকায় ভোট দিন :প্রধানমন্ত্রী

Paris
Update : রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের রোষানল থেকে দেশ ও জনগণকে বাঁচাতে তাঁর দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আপনাদের দোয়া, সহযোগিতা ও ভোট চাই। কারণ, যাতে যুদ্ধাপরাধী ও খুনিরা আবার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রোববার (০৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পোলো গ্রাউন্ডে লাখো মানুষের বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, যাওয়ার আগে আমি আপনার কাছে একটি প্রতিশ্রুতি চাই যে আপনি অতীতের মতো আগামী নির্বাচনেও নৌকায় ভোট দেবেন এবং আমাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। হাত তুলে বলুন, আপনি নৌকায় ভোট দেবেন, তিনি বলেন।
জনগণ দুই হাত তুলে তাঁদের সম্মতি জানায়। যুদ্ধাপরাধী, খুনি ও জাতির পিতার খুনিদের পৃষ্ঠপোষক রাজনৈতিক দল জামায়াত-বিএনপি বাংলাদেশের মাটিতে যেন আবার ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকারও আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বাবা, মা, ভাই সব হারিয়ে ফিরে এসেছি বাংলার মানুষের কাছে এইজন্য যে এই দেশের মানুষ দুবেলা পেট ভরে ভাত খাবে, তাদের বাসস্থান হবে, চিকিৎসা হবে, শিক্ষা হবে, উন্নত জীবন পাবে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনকারী দেশ, সেই বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে, আমরা যেন সেইভাবে বাংলাদেশকে গড়তে পারি। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে উল্লেখ করার পাশাপাশি ১৫ আগাস্টে যারা শহীদ হন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া চেয়ে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর সেই সাথে আপনাদের সহযোগিতা চাই, এই বাংলার মাটিতে আবার যেন ওই যুদ্ধাপরাধী, খুনির দল ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে তার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি বলেন, এই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে আমরা দেব না। কারণ ওই জামাত-বিএনপি খুনির দল, যুদ্ধাপরাধীর দল, জাতির পিতার হত্যাকারীদের মদদ দানকারীর দল। এমনকি আমাকেও তো বারবার হত্যার চেষ্টা করেছে। কাজেই, এরা যেন বাংলাদেশের মানুষের রক্ত চুষে খেতে না পারে আর যেন তারা এদেশে আসতে না পারে, বলেন তিনি। চট্টগ্রাম মহানগর, আওয়ামী লীগের উত্তর ও দক্ষিণ জেলা ইউনিট আয়োজিত মহাসমাবেশে শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং সেগুলোকে তার সরকারের উপহার হিসেবে বর্ণনা করেন।
প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে শেখ হাসিনা বলেন, এসব উন্নয়ন প্রকল্প আমার কাছ থেকে পাওয়া উপহার। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগই একমাত্র সরকার যারা বন্দরনগরীর ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। ২০১৩ থেকে শুরু করল অগ্নিসন্ত্রাস। লঞ্চ-ট্রেন-রাস্তায় আগুন। গাছ কেটে ফেলছে। চারিদিকে শুধু অগ্নিসন্ত্রাস। যাদের মধ্যে মনুষত্ব আছে তারা কী এভাবে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে? তাদের আন্দোলন হচ্ছে মানুষ খুন করা। বিএনপির দুটি গুণ, ভোট চুরি আর মানুষ খুন। ভোট পাবে না বলে বিএনপি নির্বাচনে না গিয়ে সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করতে চায় বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। শেখ হাসিনা বলেন, ওরা (বিএনপি) জানে ইলেকশন হলে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। তাই তারা ইলেকশন চায় না তারা সরকার উৎখাত করে, এমন কিছু আসুক যারা একেবারে নাগরদোলায় করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে এটাই তারা আশা করে, এটাই তাদের বাস্তবতা। তারা জনগণের তোয়াক্কা করে না। তিনি বলেন, ওরা ভোটে যেতে চায় না। জিয়াউর রহমান যেমন জাতির পিতাকে হত্যা করে, সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছিল। ওদের ধারণা ওইভাবেই তারা ক্ষমতায় যাবে। গণতান্ত্রিক ধারা তারা পছন্দ করে না। শেখ হাসিনা বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, সেই ১০ ডিসেম্বর বিএনপির খুব প্রিয় একটা তারিখ। বোধ হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পদলেহনের দোসর ছিল বলেই ১০ ডিসেম্বর তারা ঢাকা শহর নাকি দখল করবে। আর আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবে। তিনি বলেন, আমি তাদের বলে দিতে চাই, খালেদা জিয়া ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল। আর ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল বলেই তাকে বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেয়নি। সারা বাংলাদেশ ফুঁসে উঠেছিল। জনতার মঞ্চ করেছিলাম আমরা। খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে। দেড় মাসও যায়নি, খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। সে কথা বিএনপির মনে রাখা উচিত। জনগণের ভোট যদি কেউ চুরি করে বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেয় না। ওরা তা ভুলে গেছে। বিএনপি-জামায়াত, যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতাবিরোধীরা যাতে আর ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে বিএনপির আন্দোলনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অগ্নি সন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা, মানুষকে অগ্নিদগ্ধ করার জবাব একদিন খালেদা জিয়া-তারেক জিয়াকে দিতে হবে, এর হিসাব একদিন জনগণ নেবে। রিজার্ভ এবং ব্যাংকে টাকা নেই বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, একটা গুজব ছড়ানো হচ্ছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি আমি, আর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে অপপ্রচার করছে। অথচ এই কয়েক দিনে যারা টাকা তুলতে গেছে তারা সবাই তো টাকা তুলতে পেরেছে। মানুষকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে আমার, একটা কথা আছে আপনি ব্যাংকে টাকা রাখবেন, না আপনি খাটের নিচে, বালিশের নিচে না আলমারিতে রাখবেন; চোরেও তো নিয়ে যেতে পারে। গুজবে মানুষ বিভ্রান্ত হয় টাকা তুলে ঘরে আনে, চোরেও নিতে পারে, আবার টাকা নিয়ে ব্যাংকে জমা রাখে। এই যে মানুষকে বিভ্রান্ত করা। বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে চোরের সখ্যতা আছে কিনা এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই যে মানুষের সর্বনাশ করা এটাই কী বিএনপি-জামায়াত শিবিরের কাজ। নাকি তাদের সঙ্গে চোরের সখ্যতা আছে, চোরকে চুরি করার সুযোগ করে দেওয়া। চট্টগ্রাম মহানগর, আওয়ামী লীগের উত্তর ও দক্ষিণ জেলা ইউনিট আয়োজিত মহাসমাবেশে শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং সেগুলোকে তার সরকারের উপহার হিসেবে বর্ণনা করেন। প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে শেখ হাসিনা বলেন, এসব উন্নয়ন প্রকল্প আমার কাছ থেকে পাওয়া উপহার। আওয়ামী লীগই একমাত্র সরকার যারা বন্দরনগরীর ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। গতকাল রোববার সকালে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে পলোগ্রাউন্ডে জড়ো হতে থাকেন আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পলোগ্রাউন্ড ময়দান বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীতে মুখর হয়ে ওঠে। ঢাক-ঢোল, বাজনার তালে তালে নেচে গেয়ে জনসভা মাঠে আসেন নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা গায়ে নানা রঙের রঙিন জামা, মাথায় ক্যাপ পরে আসেন। বিভিন্ন ইউনিটের রিঙিন পোশাকের বর্ণিল রঙে সাজে পলোগ্রাউন্ড মাঠ ও আশপাশের সড়কগুলো। পলোগ্রাউন্ড ময়দানের পশ্চিম প্রান্তে ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যরে নৌকা প্রতিকৃতির ওপর নির্মাণ করা হয় বিরাট জনসভার মঞ্চ। লাল-নীল, সবুজ, সাদা, হলুদসহ রংবেরঙের রঙিন বেলুনে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় পুরো মাঠ। নিরাপত্তার জন্য বাঁশের বেরিকেড দিয়ে কয়েক স্তরে ভাগ করা হয়েছে জনসভা মাঠকে। মঞ্চ এবং মঞ্চের আশপাশের ব্লকগুলোতে নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris