আককাস আলী : শস্যভান্ডার হিসাবে খ্যাত বরেন্দ্র অঞ্চলে গ্রীষ্মকালীন সজনে ডাটার বাম্পার ফলন হয়েছে। চড়া দাম পেয়ে সজনে চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হয়েছেন। বর্তমান বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় স্থানীয় হাট-বাজারে এখন থেকেই বেশি লাভের আশায় চাষিরা আমদানি করছে সজনে। দুই সপ্তাহে আগে প্রতি কেজি সজনে ৮০-১০০টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমান বাজারে প্রকারভেদে প্রতি কেজি সজনে ডাটা ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। সজনে ডাটা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, দেহের কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই সজনে ডাঁটা খাওয়া উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য বেশ উপকারী।
এছাড়া উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় সজনের পাতাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সজনে হজম সমস্যা সমাধানে ব্যাপকভাবে কার্যকরী। পেটে গ্যাস হলে, বদহজম হলে এবং পেটে ব্যথা হলে সজনে-রান্না তরকারি খেয়ে নিন। দেখবেন পেটের গোলমাল অনেক উপশম হয়ে যাবে। মানুষের শরীরে চিনির সঠিক মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে সজনে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সজনে খুবই উপকারী সবজি। সজনে ডাটায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন থাকে। তাই এটি সুস্থ এবং শক্তিশালী হাড়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও মানব শরীরের রক্ত বিশুদ্ধ করতেও সজনের কোনো জুড়ি নেই।
সজনে ডাটায় থাকা ভিটামিন সি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে শক্তিশালী করে তোলে।বসন্ত প্রতিরোধে সজনে ডাটার তরকারি বা ডাল রান্না করে খেলে জল বসন্ত ও গুটি বসন্তে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা অনেকাংশে কমে যায়। সজনে ডাঁটার মতো এর পাতারও রয়েছে যথেষ্ট গুণ। সজনে পাতা শাক হিসেবে, ভর্তা করেও খাওয়া যায়।
এতে মুখের রুচি আসে। সজনে ডাটা এবং পাতার রস খেলে শ্বাসকষ্ট সারে। সজনে ডাটায় থাকা প্রদাহ-বিরোধী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ভিটামিন সি অ্যালার্জি প্রতিরোধ করে। ফলে অ্যালার্জির কারণে যে শ্বাসকষ্ট হয় তা দূর করে। এছাড়াও সজনে ডাটা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, লিভার ও কিডনি সুরক্ষিত রাখে। শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে সজনে। তাই সজনের এই ভরা মৌসুমে আপনার খাদ্য তালিকায় সজনের তরকারি বা সজনের ডাল রাখতেই পারেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাবু অরুণ চন্দ্র দেবনাথ জানান, সজনের বীজ বপণ ছাড়াই শুধু ডাল বসতবাড়ির আশে পাশে, রাস্তার ধারে, পুকুর পাড়ে, এমন কি মাঠের ফসলের আইলে (সাথী ফসল হিসেবে) চাষ করা যায়। তাই উপজেলার চাষীদের সজনে চাষে বিনা পুঁজিতে বাণিজ্যিকভাবে এর বাগান করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। অনেকেই এ সজনে চাষাবাদ করে অপ্রত্যাশিত লাভবান হচ্ছেন।