শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কৃষি আইন ইস্যুতে মোদির ইউটার্ন

Paris
Update : রবিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২১

এফএনএস : ঠিক এক বছর আগে বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন পাস করে বিজেপির নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এরপর থেকেই এগুলো বাতিলের দাবিতে সড়কে নেমে আসে পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, হারিয়ানা ও দিল্লিসহ আশপাশের রাজ্যের কৃষকরা। দীর্ঘ এই আন্দোলনে মারা গেছেন অসংখ্য মানুষ। আর সেই আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছিল কংগ্রেসসহ ভারতের অন্যান্য বিরোধী দল। এমনকি তারাও কৃষকদের সঙ্গে রাস্তায় নেমে বিক্ষেভে অংশ নিয়েছে। আইন তিনটি বাতিল করতে বিজেপি সরকারের সঙ্গে অসংখ্যবার বৈঠক করেছিল কৃষক নেতারা।

কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। কৃষকদের একটাই দাবি ছিল, আইন বাতিল করতে হবে। আর মোদি সরকারের এক কথা, আইন বাতিল করা হবে না। কিন্তু কী এমন ঘটনা ঘটলো যে, হঠাৎ করেই নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী বছরের শুরুতেই পাঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন। আবার ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন রয়েছে। এমতাবস্থায় বিভিন্ন ইস্যুতে আগে থেকেই মোদি সরকারের ওপর অখুশি রাজ্যগুলোর জনগণ। এর মাঝেই বিতর্কিত কৃষি আইন প্রবর্তন।

যা মেনে নিতে পারেনি খোদ কৃষকরাই। আন্দোলন করতে গিয়ে মারা গেছে অসংখ্য কৃষক। যার কারণে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, যারা গত নির্বাচনেও বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল তাদের মধ্যে অধিকাংশ লোকই এখন দলটির বিরোধী। তারা যে বিজেপিকে আর ভোট দেবে না সেটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত নির্বাচনকে সামনে রেখেই ইউটার্ন নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। কারণ, বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের ক্ষমতায় বিজেপি। কিন্তু কৃষি আইনসহ বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে রাজ্যের জনগণ তাদের ওপর অসন্তুষ্ট। এমতাবস্থায় ভোটব্যাংক হারানোর আশঙ্কা থেকেই কৃষি আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন মোদি।

অন্যদিকে, শিখ অধ্যুশিত পাঞ্জাব প্রদেশে এমনিতেও বিজেপির জনপ্রিয়তা কম। তার মাঝেও যে ভোটব্যাংক আছে সেটাও হারাতে চাইছে না ভারতের কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় থাকা দলটি। উত্তরপ্রদেশের কৃষক গুরু সেবক সিং জানান, তিনি ও তার মতো এমন আরও অনেকেই এখন মোদি ও তার দলের ওপর থেকে বিশ্বাস হারিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বুঝতে পেরেছেন যে, তিনি ভুল করেছেন। কিন্তু এটিকে স্বীকৃতি দিতে এক বছর সময় লেগেছে। এর একমাত্র কারণ, তিনি এখন জানেন কৃষকরা আর কখনোই তার দলকে ভোট দেবে না।’

তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী মোদি তার সিদ্ধান্তটি এমন দিনে ঘোষণা করেছেন যেদিন শিখ ধর্মগুরুর জন্মদিন। অর্থাৎ তার লক্ষ্যই শিখদের মন জয় করা। দিল্লি ভিত্তিক সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ থিঙ্ক ট্যাঙ্কের গবেষক রাহুল ভার্মা বিবিসিকে বলেন, ‘যখন কোনোকিছুই আপনার পক্ষে যাচ্ছে না, তখন আপনাকে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যেন বিরোধীরা এর থেকে সুবিধা না পায়। কৃষি আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত এটির সঙ্গে অনেকভাবেই সম্পর্কিত।’


আরোও অন্যান্য খবর
Paris