শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাগরে গভীর নিম্নচাপ জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা, ৩ নম্বর সংকেত বহাল

Paris
Update : মঙ্গলবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

এফএনএস : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে সুস্পষ্ট লঘুচাপ থেকে নিম্নচাপ শেষে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়ার আশঙ্কা নেই। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিম্নচাপটি ভারতের উত্তর উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করে শক্তি হারাতে পারে। বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় ১১ জেলা ২ থেকে ৩ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

সেইসঙ্গে সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত বহাল রেখেছে সংস্থাটি। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর সকালে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-২) জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি উড়িষ্যা উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।

এটি গতকাল সোমবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮৫ কি.মি. পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮৫ কি.মি. পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এতে বলা হয়, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বাড়ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

এতে আরও বলা হয়, গভীর নিম্নচাপটির প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রাম এবং এর কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল সোমবার সকালে এক বুলেটিনে জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে উড়িষ্যার উত্তর উপকূল, উত্তর ছত্রিশগড়, মধ্যপ্রদেশ অতিক্রম করবে।

এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। গতকাল সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছুকিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে।

এ সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। আগামী তিনদিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গত রোববার সকাল ৬টা থেকে গতকাল সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে যশোরে, ৫৩ মিলিমিটার। গত রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়, ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর নৌ সতর্কসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris