শনিবার

২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
তীব্র তাপদাহে রাসিকের উদ্যোগে ১০ স্থানে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প নওগাঁয় ১১০ মেট্রিক টন ভূট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে বাঘা উপজেলায় আ.লীগের প্রার্থী নির্ধারণ! বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী গরমের জন্য সরকারকে দায়ী করলেন রিজভী আপাতত গরমেই খেলবে সাবিনা-সানজিদারা ১০ কোটি টাকা অনিয়ম পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক লালমনিরহাটেও যোগ দেননি কেএনএফ প্রধান নাথানের স্ত্রী বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তীব্র তাপদাহে নগরবাসীর পাশে থাকতে রাসিক যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে

উচ্চ আদালতে দীর্ঘদিনেও নিষ্পত্তি হচ্ছে না বিপুলসংখ্যক ডেথ রেফারেন্স মামলা

Paris
Update : সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০২১

এফএনএস : উচ্চ আদালতে দীর্ঘদিনেও বিপুলসংখ্যক ডেথ রেফারেন্স মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। বরং ডেথ রেফারেন্স মামলার সংখ্য দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। ফলে বিচারপ্রার্থী ও আসামিরা হতাশায় দিন কাটাচ্ছে। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মামলার বিচার শেষ করতে বছরের পর বছর লেগে যায়। আর আসামিদের কনডেম সেলে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়।

উচ্চ আদালতে বর্তমানে ডেথ রেফারেন্স মামলার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে ৮ শতাধিক মামলা। আর ডেথ রেফারেন্স নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২ হাজারেরও বেশি আসামি বছরের পর বছর ধরে কনডেম সেলে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তির আশায় দিনের পর দিন প্রহর গুনছে বিচারপ্রার্থী ও আসামিরা। আদালত এবং আইন পেশা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, উচ্চ আদালতে বিগত ২০১০ সালে ডেথ রেফারেন্স মামলা ছিল ৫৮৫টি। তার মধ্যে মাত্র ৪৩টির নিষ্পত্তি হয়েছে আর বিচারাধীন ৫৪২টি। ২০১১ সালে মামলার সংখ্যা বেড়ে ৬০৯টিতে দাঁড়ায় আর নিষ্পত্তি হয় ৭৪টি। ২০১২ সালে মামলা ছিল ৫৯৫টি আর নিষ্পত্তি হয় ১৪৫টি। ২০১৩ সালে ৫১৩টি মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয় ১১১টি।

২০১৪ সালে ৪৯৮টি মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয় ১৩৫টি। ২০১৫ সালে ছিল ৪৭৭টি মামলা, নিষ্পত্তি হয় মাত্র ৫৮টি। ২০১৬ সালে ছিল ৫৮০টি, নিষ্পত্তি হয় মাত্র ৪৫টি। ২০১৭ সালে ছিল ৭০৬টি, নিষ্পত্তি হয় মাত্র ৬৬টি। বিগত ২০১৮ সালে মামলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৭১১টিতে, নিষ্পত্তি হয় মাত্র ৮৩টি। ২০১৯ সালের ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ৭২১টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

সূত্র জানায়, নিম্ন আদালতে বিগত ২০১৫ ও ’১৬ সালে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি বর্তমানে হাইকোর্টে চলছে। একই সঙ্গে যে সমস্ত মামলার পেপারবুক তৈরি হয়েছে সেগুলোর শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। বিচারের এ সমস্ত মামলায় হাইকোর্ট যদি কোন আসামির মৃত্যুদন্ড বহাল রাখে তাহলে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত আসামিদের কমপক্ষে ১৬ থেকে ১৮ বছর কনডেম সেলে থাকতে হচ্ছে। অবশ্য এ্যাটর্নি জেনারেল অফিস বলছে করোনার প্রভাব কমার সঙ্গে সঙ্গেই আদালতগুলোতে ডেথ রেফারেন্স মামলার শুনানি পুরোদমে শুরু হবে।

সূত্র আরো জানায়, করোনা পরিস্থিতি উন্নত হলে দ্রুত ডেথ রেফারেন্স মামলার শুনানির উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। মামলার আরেকটি দীর্ঘসূত্রতার কারণ হচ্ছে ডেথ রেফারেন্স মামলার পেপারবুক তৈরি করতে অনেক সময় লেগে যায়। পেপারবুক তৈরির পর হাইকোর্টে শুনানি, তারপর আপীল বিভাগ। এ সমস্ত ধাপ পেরিয়ে আসতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। বিচারে যে সাজা হয়েছে সেই সাজা বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার কারণে আসামিদের জন্য যেমন যন্ত্রণাদায়ক, আবার বাদীপক্ষের জন্যও হতাশাজনক। পেপাবুকের পাশাপাশি ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য বেঞ্চ বাড়ানোও প্রয়োজন। তাতে করে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপীল শুনানি দ্রুত হবে।

এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তাপস কান্তি বল জানান, ডেথ রেফারেন্স মামলাগুলো দ্রুত শুনানি হওয়া দরকার। বিচারিক আদালতে যাদের মৃত্যুদন্ড দেয়া হয় তারা কনডেম সেলে থাকে। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, বিচারিক আদালতের রায়ের পর হাইকোর্ট ও আপীল বিভাগে শুনানি করতে বেশ সময় লাগে। করোনার কারণে বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত আছে। করোনা পরিস্থিতি উন্নত হলেই এ সমস্ত মামলার শুনানি হবে। এ সমস্ত মামলার শুনানি দ্রুত হওয়া উচিত।

সে কারণে বেঞ্চ বাড়াতে হবে। বিচারিক আদালতের মৃত্যুদন্ডের সাজা বাস্তবায়ন করতে হলে উচ্চ আদালতের অনুমোদন প্রয়োজন। ওই অনুমোদন কতদিনে জানানো হবে বা জানতে হবে, তা আইনের কোথাও নির্দিষ্ট করে বলা নেই। ফলে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে দীর্ঘ সময় লাগলেও আসামি কিংবা বাদীপক্ষ কেউ কোন আপত্তি তুলতে পারছে না। অনেকক্ষেত্রে আপরাধীর সাজা দ্রুত কার্যকর না হওয়ায় বাদীপক্ষের মধ্যে হতাশা তৈরি করছে। আবার অপরাধীদের মৃত্যুর অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় কাটছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris