এফএনএস : বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম এক মাস পেছানোর দাবি জানানো হয়েছে। ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর নিয়োগ কার্যক্রম শুরু দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি জানান প্রার্থীরা। জাতীয় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীনে বেসরকারি বিভিন্ন স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সময় এক মাস বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা।

লিখিত বক্তব্যে রাজধানীর একটি বেসরকারি কলেজের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। আমাদের ভাইভা প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল। এর মধ্যে ১৪ এপ্রিল থেকে লকডাউন দেয় সরকার। এতে আমাদের চলমান ভাইভা স্থগিত হয়ে যায়। আর এক সপ্তাহ ভাইভা নিতে পারলে শেষ হয়ে যেত। এ অবস্থায় আগামী ৩০ মে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে।’ এ আবদেনের সময়সীমা আরও কমপক্ষে এক মাস বাড়িয়ে ১৬তমদের আবেদন করার সুযোগ দেয়ার দাবি জানান তারা।

সংগঠনের অর্থ সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম বলেন, ‘মৌখিক পরীক্ষা শেষ না হওয়ায় ১৬তম নিবন্ধনধারীদের এখনো এতে যুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে ১৬তম নিবন্ধনধারীদের এ গণবিজ্ঞপ্তিতে যুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ১৮ এপ্রিল বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসি) চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছি। কিন্তু তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লিখিত অনুমতি দিলে আমরা তোমাদের সুযোগ দিতে পারব।’ ‘কিন্তু এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেয়া আমাদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য।

তাই আজকের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’ তাদের দাবি, তাদের পরীক্ষা শেষ হওয়ার মাত্র সাতদিন বাকি থাকতেই ৩য় গণবিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। অথচ ১৪তম শিক্ষক নিবন্ধন প্রার্থীদের ২য় গণবিজ্ঞপ্তিতে ভাইভা শেষ করেই রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন প্রার্থীদের সঙ্গে আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়েছিল।

তারা জানান, ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনে প্রার্থীদের যেখানে এক বছর ১ মাসের মধ্যে প্রিলি, রিটেন, ভাইভা শেষ হয়েছিল, সেখানে ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন প্রার্থীদের প্রায় আড়াই বছর চলে গেল। এখনো ভাইভা শেষ করতে পারছে না এনটিআরসিএ। যা এনটিআরসিএতে দীর্ঘসূত্রিতার নতুন রেকর্ড হয়েছে। লিখিত আবেদনে তারা কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-

১) যেহেতু বয়স ৩৫+ বিবেচনায় নেয়া হয়েছে, সেহেতু এক মাস সময় বাড়িয়ে আমাদের ৩য় গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দেয়া হোক।
২) যেহেতু মৌখিক পরীক্ষার নম্বর যোগ হয় না, তাই মৌখিক পরীক্ষা দ্রুততম সময়ে সরাসরি বা ভার্চুয়াল মাধ্যমে শেষ করে আবেদনের সুযোগ দেয়া হোক।
৩) ১৪তম’দের মতো নিবন্ধন সনদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রার্থীদের মোবাইল নম্বরে পাঠিয়ে আবেদনের সুযোগ দেয়া হোক।
৪) বিগত এক গণবিজ্ঞপ্তি থেকে আরেক গণবিজ্ঞপ্তির পার্থক্য আড়াই বছর বছর। এই গণবিজ্ঞপ্তি না পেলে অধিকাংশ প্রার্থীর বয়স ৩৫+ হয়ে যাবে। বয়স ৩৫+ হয়ে গেলে শিক্ষক হবার স্বপ্ন আর পূরণ হবে না বলে তাদের দাবি।
৫) তারা দাবি করেন, এনটিআরসিএ এর বিপক্ষে ৪০০ প্লাস মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি হবে কিনা তাও নিশ্চিত করে বলা যায় না।
৬) করোনা মহামারির জন্য যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং কবে খুলবে তা নিশ্চিত করে বলা যায় না, সেহেতু গণবিজ্ঞপ্তিতে এক মাস সময় বাড়িয়ে দিয়ে আবেদনের সুযোগ দেয়া হোক।
৭) বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) মতো আবেদন এর মেয়াদ এক মাস বৃদ্ধি করা হোক।