শনিবার

২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
তীব্র তাপদাহে রাসিকের উদ্যোগে ১০ স্থানে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প নওগাঁয় ১১০ মেট্রিক টন ভূট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে বাঘা উপজেলায় আ.লীগের প্রার্থী নির্ধারণ! বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী গরমের জন্য সরকারকে দায়ী করলেন রিজভী আপাতত গরমেই খেলবে সাবিনা-সানজিদারা ১০ কোটি টাকা অনিয়ম পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক লালমনিরহাটেও যোগ দেননি কেএনএফ প্রধান নাথানের স্ত্রী বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তীব্র তাপদাহে নগরবাসীর পাশে থাকতে রাসিক যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে

অগ্নিঝরা মার্চ

Paris
Update : শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১

এফএনএস : আজ ১৩ মার্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আহূত অসহযোগ আন্দোলনের ষষ্ঠ দিন। পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বঙ্গবন্ধুর হাতে। তাঁর অঙ্গুলি হেলনে, নির্দেশনায় চলছে সবকিছু। মুক্তিকামী জনতার আন্দোলন এগিয়ে যাচ্ছে অনিবার্য পরিণতির দিকে। বাঙালীর একটাই স্বপ্ন, চিন্তা-স্বাধীনতা। চূড়ান্ত নির্দেশ পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে পাক হানাদার শত্র”দের ওপর।

একাত্তরের এ দিন সম্পর্কে পত্রিকায় শিরোনাম হয়Ñ “অসহযোগ আন্দোলনের ষষ্ঠ দিবস পরিপূর্ণ সাফল্যের সঙ্গে অতিবাহিত হয়”। এ দিনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতারা পরাজয় নিশ্চিত আঁচ করতে পেরে বঙ্গবন্ধুর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য পাক সরকারের কাছে আহ্বান জানায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অনিবার্য, এটা আঁচ করতে পেরেই নানা ধোঁয়াটে পরিবেশ সৃষ্টি করে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ইয়াহিয়া চক্র। ওদিকে করাচিতে ভুট্টোও পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করে রাখার জন্য নতুন করে দুই সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানালেন।

অসহযোগ আন্দোলনের এক সপ্তাহ পর দেশ পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, শিক্ষক সব শ্রেণী পেশার মানুষ নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পাকিস্তানী সামরিক শাসকরা বাংলার দামাল ছেলেদের এই আন্দোলন দেখে চিন্তিত হয়ে পড়ে। ইয়াহিয়া-টিক্কা চক্রের আপাতদৃষ্টিতে নমনীয় মনোভাব বাঙালীরা কিছুতেই নতি স্বীকার না করে ১১৫ নম্বর আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে স্লোগান তোলেÑÑ ‘ওরা কাজে যাবে না।’

এ আদেশে পাকিস্তানী শাসক নির্দেশ দিয়েছিল, ‘যারা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে চাকরি করে তারা ১৫ মার্চের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে চাকরি যাবে।’ বঙ্গবন্ধু সঙ্গে সঙ্গেই এ নির্দেশকে উস্কানিমূলক বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এদিন বঙ্গবন্ধু বিবৃতি দিয়ে বলেন, জনগণের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম এগিয়ে চলেছে, হুমকির কাছে নতিস্বীকার করবেন না। একাত্তরের এদিন মূলত পাক স্বৈরাচাররা পূর্ব পাকিস্তানের বাস্তব অবস্থা উপলব্ধি করতে পারে। তারা চারদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে থাকে।

পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের বিরোধীদলীয় নেতারাও শঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাঁরা বুঝতে পারেন বাঙালী এবার স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেবেই। সেই কারণে তারা এক জর”রী বৈঠক ডাকেন। সেখানে বিরোধীদলীয় নেতারা অবিলম্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান। একই দিনে জমিয়াতুল ওলেমা ইসলামিয়া সংসদীয় দলের নেতা মাওলানা মুফতি মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভা থেকে তিনটি আহ্বান জানানো হয়।

তা হলোÑ পূর্ব পাকিস্তান থেকে সামরিক আইন প্রত্যাহার, ২৫ মার্চের আগে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া। একই সঙ্গে প্রতিটি গ্রাম, শহর, বন্দর, নগরে চলতে থাকে তীব্র অসহযোগ আন্দোলন। পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি পর্বে পশ্চিম পাকিস্তানে ব্যবসাবাণিজ্য অচল হয়ে পড়ে। পশ্চিম পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের ভিত নড়ে ওঠে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris