জাহাঙ্গীর আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূল ফটক ভেঙ্গে নিজের জমি দাবি করে প্রভাব খাটিয়ে সেখানে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন ইউপি চেয়ারম্যান। পুনরায় বিদ্যালয়টির সভাপতি নির্বাচিত হতে না পেরে ক্ষোভে এই কাজটি করছেন বলে অভিযোগ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের। স্কুলের মূল গেইট ভেঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তরিকুল ইসলামের স্থাপনা নির্মানের কারনে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে প্রায় ২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত শিক্ষার্থীদের প্রবেশ পথ।
তবে চেয়ারম্যানের বলছেন, চকঝগড়ু স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল ফটক ভাঙ্গা হলেও নিজ খরচে দক্ষিণ দিকে গেইট নির্মাণ করে দেয়া হবে। এনিয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর এলাকাবাসী সদর মডেল থানায় অভিযোগ দিলে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। এলাকাবাসীর পক্ষে থানায় অভিযোগ করেন, চকঝগড়ু গ্রামের আব্দুল মালেক। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের সুপারিশকৃত অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম এলাকাবাসীর কথা না শুনে জোরপূর্বক দোকানঘর নির্মান করছেন। কেউ বাধা দিতে গেলে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন বলে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে কথা হয় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে। তারা বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব স্কুলের সভাপতি থাকাকালীন সময়ে মূল গেইটটি নির্মাণ করে দিয়েছিলো। এবার তিনি সভাপতি হতে না পারায় গেইট ভেঙ্গে দোকান ঘর তৈরি করছেন। যেখানে গেইট তৈরি করে দিতে চাইছে, সেটি পিছনের দিকে। এমনকি আগের গেইট ভাঙ্গা হলে বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য্যও নষ্ট হবে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তাই আমরা চাই এই গেইটই থাকুক। চেয়ারম্যান তার প্রভাব খাটিয়ে অত্যাচার করছে বলেও জানায় তারা।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দৌলত আলী বলেন, বছর খানেক আগেও চেয়ারম্যান চকঝগড়ু স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি ছিলেন। সেসময় তিনি ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে সুদর্শন গেইটটি নির্মাণ করে দিয়েছেন। এমনকি বিদ্যালয়ের অধিকাংশ সম্পত্তিই চেয়ারম্যানের ভাই ও বাবা দান করেছেন। এবার সভাপতি হতে না পেরে চেয়ারম্যান এমন গর্হিত কাজ করছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অভিযোগকারী আব্দুল মালেক বলেন, হঠাৎ করেই চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম দাবি করছেন স্কুলের মূল ফটকের জায়গাটি তার নিজের। কিন্তু তার জায়গা হলে এতোদিন তিনি কি করছিলেন? এছাড়া বিদ্যালয়ে দানকৃত সকল সম্পত্তি তার বাবা ও ভাইয়েরা দান করে গেছেন। তিনি এখন নিজের দাবি করলেও পাবেন কি? এছাড়াও তার জমি হলেও বিদ্যালয় কমিটি বা প্রধান শিক্ষক কাউকে না জানিয়ে এলাকাবাসীর বাঁধার পরেও তিনি এটি করতে পারেন না। কেউ বাঁধা দিতে গেলে প্রকাশ্যে মামলা ও হামলার হুমকি দিয়েছেন চেয়ারম্যান। এই এলাকায় তিনি সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন।
বিদ্যালয়ের একজন সাবেক সভাপতি বলেন, সরকারি অর্থ ব্যয় করে গেইট নির্মাণ করার পর আবারো তা ভেঙ্গে ফেলছেন বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম। এলাকাবাসীর এতো অনুরোধ না শুনে নিজে সভাপতি হতে না পেরে তিনি এসব করছেন। এবিষয়ে চকঝগড়ু স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি আমিনুল ইসলাম মতির কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জমিটি নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করে ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম বলেন, আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে ও আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র করছে ও মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। জামায়াত-শিবির কর্মীরা এসব বিরোধিতা করছে বলে দাবি করেন তিনি।