শুক্রবার

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আবাসিক হোটেলে ইয়াবা ব্যবসা, ৫ জন গ্রেফতার

Paris
Update : রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২

এফএনএস : রাজধানীর ভাটারা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পাশে নিউ পদ্মা ইন্টারন্যাশনাল (আবাসিক) হোটেলে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল ইয়াবা বিক্রি ও সেবন। হোটেলটিকে ইয়াবা সেবনকারীরা নিরাপদ মনে করায় সেখানে তাদের ভিড় লেগেই থাকতো। এত বছর ধরে কিভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিভিন্ন বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে আবাসিক হোটেলে ইয়াবা সরবরাহ ও সেবন হয়ে আসছিল তা খতিয়ে দেখছে অভিযানকারী কর্মকর্তারা। গ্রেফতারকৃতদের এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ইয়াবা সেবন এবং বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আবাসিক হোটেলটির মালিক, ম্যানেজার, কর্মচারীসহ দুই নারীকে গ্রেফতার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মাদকবিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার থেকে গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পাশে হোটেল নিউ পদ্মা ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলে অভিযান পরিচালনা করে হোটেল মালিক রইসউদ্দিন রবি (৪৩) ও হোটেল ম্যানেজার আলম ওরফে রনিকে (৪০) ১৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়।

পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খিলক্ষেত নিকুঞ্জ-২ এলাকা থেকে হোটেল কর্মচারী হানিফ মোল্লাকে ১০ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া এই ইয়াবা চক্রের দুই নারী সদস্যÑশাহিদা বেগমকে (৪৫) কাফরুলে এলাকা থেকে ১ হাজার পিস ইয়াবা ও রিমিয়ারা খাতুনকে (৩০) ভাটারা এলাকা থেকে ১৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার পাঁচ জনের কাছ থেকে ১১ হাজার ৩০০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩৩ লাখ টাকা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, গত পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে আবাসিক হোটেলের আড়ালে মাদক ব্যবসা চলছিল হোটেলটিতে।

টেকনাফের ইয়াবা ব্যবসায়ী রহিম নামে একজন টেকনাফ থেকে রাজধানীর ভাটারা এলাকার নিউ পদ্মা আবাসিক হোটেলে ইয়াবা সরবরাহ করে আসছিল। রহিমকে গ্রেফতারে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এই হোটেলে দুটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাদক সরবরাহ করা হতো। একটি সিন্ডিকেটের রহিম হোটেলের মালিক রবির মাধ্যমে ইয়াবা সরবরাহ করতো। আর একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হোটেল ম্যানেজার আলম ওরফে রনির বন্ধু রিমিয়ারা খাতুন হোটেলে ইয়াবা সরবরাহ করতো। হোটেলটিতে ইয়াবা সেবনের পাশাপাশি অসামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে আসছিল বলেও জানতে পেরেছে অভিযানকারী কর্মকর্তারা।

অভিযান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হোটেল ব্যবসার আড়ালে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা চালিয়ে আসছিল হোটেল সংশ্লিষ্টরা। হোটেলের বোর্ডার ও সেখানে আসা লোকদের কাছে সরবরাহ করা হতো মাদক। সেই সঙ্গে বাইরেও সরবরাহ করা হতো। এ ছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে যারা এ হোটেলটিতে রুম ভাড়া নিয়ে থাকতো তাদেরকেও ইয়াবা সেবনের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হতো। হোটেলের মালিক রইসউদ্দিন রবির সঙ্গে কামরাঙ্গীর চর এলাকায় থাকতো হানিফ মোল্লা। তারা দূর সম্পর্কের খালাতো ভাই।

সে সময় তাদের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। তারই ধারাবাহিকতায় রবির হোটেলে হানিফ মোল্লা কর্মচারী হিসেবে যোগ দেয়। একপর্যায়ে জড়িয়ে পড়ে ইয়াবা ব্যবসায়। এ ছাড়া করোনার মধ্যে হোটেল বন্ধ থাকায় আর্থিক সঙ্কটে পড়ে যায় রবি। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে হোটেল খোলার পর ইয়াবা ব্যবসা আবারও চালু করে। একাধিক ইয়াবা সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাদের। গত মাসেও ইয়াবার একটি চালান হোটেলে এসেছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো উত্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, ভাটারা থানা এলাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পাশে নিউ পদ্মা ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলে ইয়াবা সেবনকারী কারা সে বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। কারা হোটেলে নিয়মিত আসতো এবং ইয়াবা সেবন ও ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সে বিষয়টির তদন্ত করা হচ্ছে। গোপনে তারা আবাসিক হোটেল পরিচালনার নামে ইয়াবার ব্যবসা চালিয়ে আসছিল।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris