সোমবার

৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাবিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগদান স্থগিত তদন্ত কমিটির মুখোমুখি ভিসি সোবহান

Paris
Update : রবিবার, ৯ মে, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : সদ্য নিয়োগ পাওয়া ১৩৭ জনের যোগদান স্থগিত করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন (রাবি)। শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করায় নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগদান কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৫ মে রাবিতে দেওয়া এডহক নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। এ জন্য তদন্ত কমিটির রিপোর্টের প্রেক্ষিতে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত উক্ত নিয়োগপত্রের যোগদান এবং তদসংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হলো।

রাবির বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহানের মেয়াদ শেষ হয় গত বৃহস্পতিবার (৬ মে)। আগের দিন তিনি অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৩৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে যান। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই নিয়োগকে অবৈধও বলেছে মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে। সদস্য সচিব হলেন- ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. মো. জাকির হোসেন আখন্দ। শনিবার পৌনে ১১টার দিকে কমিমটির সদস্যরা রাবি যান।

প্রথমে তাঁরা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য (রুটিন দায়িত্বে) অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহার দপ্তরে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তদন্ত কমিটির ডাকে উপাচার্যের দপ্তরে যান সদ্য বিদায়ী উপাচার্য আবদুস সোবহান। তদন্ত কমিটি তাঁর সাক্ষাতকার নেন। পরে বিকেল চারটার দিকে তিনি ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। এ সময় তিনি বলেন, এই নিয়োগ আইনের পরিপন্থী নয়। কারণ, উপাচার্যকে ৭৩ এর অধ্যাদেশে এ ক্ষমতা দেওয়া আছে। আমি মানবিক কারণে তাঁদের চাকরি দিয়েছি।

যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের অধিকাংশই ছাত্রলীগের এবং আওয়ামী পরিবারের। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে এই নিয়োগ অবৈধ এবং নিয়মবহির্ভুত। সুতরাং যাঁরা এই নিয়োগের সঙ্গে সম্পৃক্ত আমরা তাঁদের সাক্ষাতকারের আওতায় এনেছি। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা একটা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।’
এদিকে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুস সোবহান। উপাচার্য দফতরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এর আগে গাড়ি পাঠিয়ে উপাচার্যকে তার দফতরে আনা হয়। গতকাল শনিবার দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন তিনি। এর আগে বেলা পৌনে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা তদন্ত কমিটির সদস্যরা। কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে চলছে এ জিজ্ঞাসাবাদ। তার সঙ্গে রয়েছেন- কমিটির সদস্য এবং ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. জাকির হোসেন আখন্দ ও ইউজিসির পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান।

তদন্ত দল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছানোর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালামের সঙ্গে প্রথমে সাক্ষাৎ করেন। এরপর একে একে নিয়োগের কুশীলব সহকারী রেজিস্ট্রার তারিকুল আলম, পরিষদ শাখার কর্মকর্তা মামুন অর রশীদ, সংস্থাপন শাখার প্রধান ইউসুফ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রত্যেকের কাছ থেকে লিখিত বক্তব্য নেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এরপর সেখানে ভিসি জামাতা শাহেদ পারভেজ তদন্ত কমিটির কাছে লিখিত বক্তব্য দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন বিভাগের সভাপতি, ইনস্টিটিউটের প্রধানরাও তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন।

এদিকে সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৩৭ জনের নিয়োগকে বিধিবহির্ভূত ও অবৈধ উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রগতিশীল ঘরানার শিক্ষকরা। এ নিয়োগের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তিরও দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল শনিবার ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষকদের স্টিয়ারিং কমিটির’ ১৬ সদস্যের সই করা এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris