শুক্রবার

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
জাতীয় কারাতে প্রতিযোগিতায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাফল্য উপজেলা নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ করাই লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী তানোরে হিমাগারে ভারতীয় আলু মজুদ? অপতথ্য রোধে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান তথ্য প্রতিমন্ত্রীর মোহনপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত, ২ জন আহত ইউনিয়নের সম্পাদক মাহাতাবের বিরুদ্ধে চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রাজশাহীর বাস শ্রমিকদের রাজশাহী নগরীতে পলাতক আসামির অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ বাঘায় স্ত্রীর লাঠির আঘাতে আহত শিক্ষকের মৃত্যু চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করতে জনপ্রশাসনে চিঠি শিক্ষামন্ত্রীর জলবায়ু বিপর্যয় উপকূলীয় মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলছে : গবেষণা

রাজশাহীতে বিভাগীয় পেনশন মেলা অনুষ্ঠিত

Paris
Update : শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এর যৌথ আয়োজনে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাজশাহীতে সর্বজনীন পেনশন বিষয়ক বিভাগীয় পেনশন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিষয়ে জনঅবহিতকরণ এবং এ স্কিমের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এ পেনশন মেলা আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নগরীর হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত ‘রাজশাহী বিভাগীয় পেনশন মেলা-২০২৪’ এর উদ্বোধন করেন। বিভাগীয় পেনশন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মুখ্যসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করেছেন সাধারণ মানুষ যখন অবসর গ্রহণ করবে, তাদের বয়স হয়ে যাবে; তখন তারা যেন নিরাপদে থাকে, নিশ্চিন্তে থাকে। সরকারি চাকুরীজীবীদের মত রিক্সাওয়ালা, কৃষক, তাঁতী, এনজিওকর্মী সকলেই যাতে পেনশন পায় সেজন্য সরকার সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে। পেনশন মানে আপনার সুদিনের কিছু টাকা আপনি জমা করবেন আপনার দুর্দিনে সরকার প্রতি মাসে আপনাকে টাকা দিতে থাকবে।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত মজবুত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনি টাকা জমা না দিলে সরকারের কিছু আসে-যায় না কিন্তু সরকার আপনাদের জন্য একটা সুযোগ করে দিয়েছে; যেন ভবিষ্যতে কেউ বিপদে না পড়ে।
পেনশন স্কিমে আমার টাকা নিরাপদ কিনা- অনেকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি ব্যাাংকে টাকা রাখলে যেমন ফেরত পান তেমনি এ টাকাও ফেরত পাবেন। এ টাকাও পেনশন কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপদ; তারা এ টাকা ব্যাংকে রাখছে, ট্রেজারি বিলে রাখছে। নিরাপদ বিনিয়োগ করে যে লাভ হবে তা থেকে আপনাদের পেনশন দেবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারী নিজেই দিন শেষে দেখতে পারবে তার একাউন্টে কত টাকা জমা আছে।
সর্বজনীন পেনশনের চারটি স্কিমের মধ্যে সমতা স্কিম প্রসঙ্গে মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, যারা সবচেয়ে দরিদ্র্য মানুষ, বছরে ষাট হাজার টাকার নিচে আয়, তারা যদি মাসে পাঁচ শত টাকা জমা দেয় তবে সরকার তার পক্ষে হয়ে আরও পাঁচশত টাকা ঐখানে দেবে। এভাবে বিয়াল্লিশ বছর পাঁচ শত টাকা করে জমা দিলে প্রতি মাসে পেনশন পাবে ৩৪ হাজার ৪৬৫ টাকা। টাকা জমা দিতে দিতে মারা গেলে ছেলে-মেয়েরা এককালীন টাকা পেয়ে যাবে আর পেনশন ভোগ করার পর ৭৫ বছরের আগে মারা গেলে বয়স (তার) ৭৫ বছর হওয়া পর্যন্ত তার পরিবার পেনশন পাবে।
প্রবাস, প্রগতি ও সুরক্ষা স্কিমের সুবিধা তুলে ধরে তিনি বলেন, এসব স্কিমে সর্বোচ্চ চাঁদা দাতারা এখন একজন সচিব যে পেনশন পান চার চারগুণ বেশি পেনশন পাবেন। এসময় তিনি সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার জন্য আগে-ভাগে চাঁদা জমাদানের পরামর্শ প্রদান করেন।
রাজশাহীতে আয়োজিত মেলার প্রশংসা করে প্রধান অতিথি বলেন, বাণিজ্য মেলা- কৃষি মেলা এই পেনশন মেলার কাছে ফেল করে গেছে এবং সারা দেশ এই মেলাকে অনুসরণ করতে পারবে।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য মোঃ গোলাম মোস্তফা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ এবং মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অর্থরিটির এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ফসিউল্লাহ।
অন্যান্যের মধ্যে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারগণ, জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিকবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। মেলায় বিভাগের বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং ইউডিসি’র ১২৫টি স্টলে সর্বজনীন পেনশনের বিভিন্ন স্কিমে নিবন্ধন প্রক্রিয়া, সুবিধাদি ও পেনশন সংক্রান্ত নিয়ম-নীতি বিষয়ক পোস্টার, লিফলেট ও ডকুমেন্টরি প্রদর্শণ করা হয়। মেলার উদ্বোধন পর্ব শেষে মঞ্চে সর্বজনীন পেনশন বিষয়ক গম্ভীরা প্রদর্শিত হয়।
এদিকে, ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ শীর্ষক এক কর্মশালা শুক্রবার সকালে রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় যৌথভাবে এ কর্মশালা আয়োজন করে। কর্মশালায় জানানো হয়, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর আওতায় জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছে। ফলে এটি একটি সরকারি বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান এবং সর্বজনীন পেনশন স্কিম কর্মসূচি রাষ্ট্রীয়। সরকার আসবে সরকার যাবে, রাষ্ট্র্রীয় কর্মসূচি অব্যহত থাকবে। সরকার পরিবর্তন হলেও সর্বজনীন পেনশন স্কিম অব্যহত থাকবে।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য মো: গোলাম মোস্তফা। কর্মশালায় সূচনা ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। মুখ্যসচিব বলেন, অর্থ বিভাগ অবকাঠামোগতভাবে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে কিন্তু তার একার পক্ষে এক্ষেত্রে সফল হওয়া সম্ভব নয়। এটা জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলের সম্মিলিত কাজ। তিনি সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে জনপ্রতিনিধিসহ সকলকে আহবান জানান এবং একই সাথে এবিষয়ে অপপ্রচার প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেন। কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোঃ আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অর্থরিটির এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ফসিউল্লাহ এবং এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মোঃ সাইদুর রহমান।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris