সোমবার

২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জিম্মি এমভি আবদুল্লাহর মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জলদস্যুরা

Paris
Update : বুধবার, ২০ মার্চ, ২০২৪

আরা ডেস্ক : ভারত মহাসাগরে ২৩ নাবিকসহ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজ জিম্মি করার ৯ দিনের মাথায় দস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে জাহাজ মালিকপক্ষের। বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে এই যোগাযোগ হয় বলে জানিয়েছে কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বুধবার সোমালিয়ার দস্যুদের সঙ্গে মালিকপক্ষের যোগাযোগ হয়েছে। দস্যুরা যোগাযোগ শুরু করেছে। আশা করছি উভয় পক্ষের মধ্যে এ বিষয়ে সমঝোতা হবে। জাহাজের জিম্মি নাবিকরা সুস্থভাবে ফিরে আসবেন।’ তবে কোনও দাবিদাওয়া জানিয়েছে কিনা সে বিষয়ে কিছুই জানাননি মিজান। বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সভাপতি ক্যাপ্টেন এম আনাম চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি শুনেছি দস্যুরা জাহাজ থেকে যোগাযোগ করেছে। এখানে চার ধরনের দস্যু গ্রুপ আছে। একটি গ্রুপ জাহাজ আটক করেছে। আরেকটা গ্রুপ জাহাজের নিয়ন্ত্রণে আছে। চার নম্বর গ্রুপের দায়িত্ব হচ্ছে সমঝোতা করা। এখন কোন গ্রুপ যোগাযোগ করেছে তা বলতে পারছি না।’
এদিকে সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজের ক্যাপ্টেন আতিক ইউ এ খান বলেছেন, ‘এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ জিম্মি করা দস্যুরা মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কত ডলার দাবি করেছে তা বলতে পারছি না। প্রথমে অনেক বেশি দাবি করবে। পরবর্তীতে তা দরকষাকষিতে কমে আসবে। উভয়ের মধ্যে একটা সমঝোতা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অবস্থান পরিবর্তন করেছে দস্যুরা। এবার তীর থেকে মাত্র দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নিয়ে জাহাজ নোঙর করা হয়েছে। তবে জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ উদ্ধারে জলদস্যুদের ওপর যৌথভাবে চাপ বাড়িয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভারতীয় নৌবাহিনী।’ তিনি বলেন, ‘গত দুই দিন আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী এমভি আবদুল্লাহকে বেশ চাপের মুখে রেখেছে। যুদ্ধজাহাজগুলো এমভি আবদুল্লাহর দেড় নটিক্যাল মাইলের মধ্যে চলে এলে জলদস্যুরা জাহাজের নোঙর তুলে আরও ভেতরে চলে গিয়ে তীরের মাত্র এক দশমিক পাঁচ মাইল দূরে আবার নোঙর করেছে। দস্যুরা এটাও বলেছে যে বাড়াবাড়ি করলে জাহাজ তীরে তুলে দেবে। তবে নৌবাহিনী এখনও বিভিন্নভাবে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। এই চাপ হয়তো জলদস্যুদের দ্রুত মুক্তিপণ দাবিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।’ আতিক ইউ এ খান আরও বলেন, ‘নৌবাহিনীর চাপের ফলে সব নাবিককে এখন দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই ব্রিজে অবস্থান করতে হচ্ছে। এ ছাড়া মাঝে মধ্যে ভিএইচএফ (ওয়াকিটকি) ব্যবহার করে নৌবাহিনীকে অনুরোধও জানাতে হচ্ছে যেন কাছে না আসে।’ তবে জাহাজের নতুন করে অবস্থান পরিবর্তনের বিষয়ে কোনও তথ্য দিতে পারেননি কবির গ্রুপের মুখপাত্র ও মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম। ‘তিনি বলেন, আমরা সমঝোতার মাধ্যমে জাহাজের সব নাবিককে সুস্থভাবে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’ এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিকালে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ সোমালিয়ার গ্যারাকাদ উপকূল থেকে সাত নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রেখেছিল। সেখান থেকে শুক্রবার ২৩ নাবিকসহ জাহাজটির অবস্থান পরিবর্তন করা হয়। এরপর সেখান থেকে আরেক দফা জাহাজটির অবস্থান পরিবর্তন করা হয়। গত ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে কবির গ্রুপের মালিকানাধীন এস আর শিপিংয়ের জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর জানতে পারেন গ্রুপের কর্মকর্তারা। জাহাজটি আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে সোমালিয়ার অফকোস্টে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে জলদস্যু দ্বারা আক্রান্ত হয়। জাহাজটিতে মোট ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক আছেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris