বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত অঞ্চল বান্দরবানের তুমব্রু ও টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় মিয়ানমার অংশে থেমে থেমে ভারী গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। তবে সীমান্ত দিয়ে যাতে নতুন করে অনুপ্রবেশ ঘটতে না পারে সেজন্য বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। গতকাল শনিবার ভোরে বান্দরবানের উত্তরপাড়া ও টেকনাফ হোয়াইক্যংয়ে ভারী গোলাগুলির শব্দে স্থানীয়দের মধ্যে আবারও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের পরিচালক (অপারেশনস) লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান বলেছেন, আগের তুলনায় সীমান্তে গোলাগুলি কমেছে। আমরা অনুপ্রবেশ রোধে সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। সীমান্তে বসবাসকারী মানুষরা জানান, গতকাল শনিবার ভোর থেকে তুমব্রু সীমান্তে থেমে থেমে ভারী গুলিবর্ষণের বিকট শব্দ শুনতে পেয়েছেন তারা। এ ছাড়া টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের ভেতরে ভারী গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সীমান্তে বসবাসকারী মানুষজন। হোয়াইক্যং সীমান্তে বসবাসকারী মো. সাইফুল বলেন, ভোর থেকে টানা সকাল ৮টা পর্যন্ত ব্যাপক গোলগুলি চলছিল মিয়ানমার সীমান্তে। এ সময় ওপার থেকে কিছু লোকজন এপারে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমাদের বিজিবি সতর্ক অবস্থানে ছিল। পরে তারা অন্যদিকে চলে যায়। হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তে মর্টার শেলের মতো বিকট গোলাগুলির আওয়াজ এপারে বসবাসকারীদের মাধ্যমে অবহিত হয়েছি। সীমান্ত দিয়ে কোনো লোক যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে জন্য আমরাও সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। এ বিষয়ে টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে লোকজন অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু আমরা নতুন করে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছি না। গত শুক্রবার ১৩৭ জনকে প্রতিহত করা হয়েছে। অন্যদিনের তুলনায় এদিন সীমান্ত শান্ত ছিল। এদিকে, রাখাইনের একটি শহর নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় আরাকান আর্মি। এরপরই আশপাশের গ্রামে তীব্র গোলাগুলি শুরু হয়। গত ৪ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে আসে ৩৩০ জন সেনা ও বিজিপিসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য। যাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে দুই দেশের মধ্যে।-এফএনএস
এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে আরও একটি মর্টারশেল উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে ঘুমধুম ইউপির তমব্রু পশ্চিমকূল এলাকা থেকে মর্টারশেলটি উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে তিনদিনে ৩টি মর্টারশেল উদ্ধার হলো ওই এলাকায়। স্থানীয়রা জানায়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ঘুমধুম ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ড নোয়াপাড়া এলাকা থেকে একটি, ৯ ফেবরুয়ারি দুপুরে তমব্রু পশ্চিমকূল বিজিবি ক্যাম্পের কাছাকাছি এলাকার ধানক্ষেতে একটি ও সর্বশেষ গতকাল শনিবার বিজবি ক্যাম্পের কাছাকাছি ব্রিজ থেকে ১টিসহ মোট ৩টি অবিস্ফোরিত মর্টারশেল উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়রা আরও জানায়, মর্টারশেলগুলো মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করাকালিন ফেলে গেছে। ওই সীমান্তের কাছাকাছি চাষের জমিতে বিজিপি সদস্যদের ফেলে যাওয়া আরও গোলা ও মর্টারশেল থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি আবদুল মান্নান সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সীমান্ত সড়কের ব্রিজের ওপর মর্টারশেল দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা খবর দিলে বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে মর্টারশেলটি নিজেদের হেফাজতে নেয়। এনিয়ে তিন দিনে তমব্রু এলাকা থেকে তিনিটি মর্টারশেল উদ্ধার করা হয়েছে।