মঙ্গলবার

১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১২৬০০ ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ রাজশাহীতে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ রুয়েটের নতুন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান বিএসএফ’র পোশাকধারী মাদক পাচারকারী রাজশাহীর রেন্টু আটক রাজশাহীতে চাঁদাবাজির অভিযোগে ২১ জন গ্রেফতার দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা অনুদান দিচ্ছে সরকার ধরাছোঁয়ার বাইরে স্বর্ণ পাচারচক্রের মুল হোতারা আরডিএ খাঁচা মার্কেটের দেয়ালে গাছের শেকড়ের ফাঁটল, মারাত্মক ঝুঁকিতে ভবন ফাহাদ বায়োলজি থেকে মেডিকেল কলেজে সুযোগ পাওয়া ২৫৯ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধণা প্রদান ১৫ মে থেকে বাজারে আসছে রাজশাহীর আম

কৃষকের সাশ্রয় ৪০ কোটি টাকা

Paris
Update : শনিবার, ২৪ জুন, ২০২৩

আব্দুস সবুর

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় চলতি বোরো-আউশ মৌসুমে ধান কাটার কম্বাইন্ড হারভেস্টার আধুনিক মেশিন বরেন্দ্রের এই অঞ্চলে ব্যাপক সাফল্য এনে দিয়েছে। এ মৌসুমে কৃষকের সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি টাকার মত। এতে করে অল্প সময়ে ধান প্যাকেট জাত করতে পেরেছেন, সেই সাথে বেঁচেছে সময়। ফলে আধুনিক মেশিনের উপর ঝুকে পড়ছেন কৃষকরা। জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় ১৩ হাজার ২৫০  হেক্টর জমিতে বোরো-আউশ ধান আবাদ হয়েছিলো। আবাদকৃত মোট জমির ৮০ শতাংশ অর্থাৎ ১০ হাজার ৬০০ হেক্টর ধান কাটা হয়েছে মেশিনের মাধ্যমে। মেশিনের মাধ্যমে ধান কর্তন-মাড়াই মিলিয়ে কৃষকদের প্রতি হেক্টরে খরচ হয়েছে ১১ হাজার ২৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১২ হাজার টাকা। এদিকে সনাতন পদ্ধতিতে এক হেক্টর জমির ধান কাটা মাড়াই পর্যন্ত কৃষকের খরচ হয় প্রায় ৪১ হাজার থেকে ৪৩ হাজার টাকা। কম্বাইন্ড হারভেস্টারে কাটার ফলে কৃষকের সাশ্রয় হয়েছে হেক্টর প্রতি প্রায় ৩০-৩১ হাজার টাকা। এছাড়াও সনাতন পদ্ধতিতে হেক্টর প্রতি জমির ধান কাটা মাড়াই পর্যন্ত প্রায় ১২০ কেজি বা ৩ মণ ধানের দানা অপচয় হতো যা মেশিনে কাটার ফলে ফসলের দানার এ অপচয় রোধ করা সম্ভব হয়েছে। সবমিলিয়ে হিসেব করলে সাশ্রয়ের পরিমাণ এ একটি মাত্র উপজেলায় প্রায় ৪০ কোটি টাকা হবে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। মেশিন ব্যবহারকারী ১০-১৫ জন কৃষকরা জানান, কম্বাইন হারভেস্টার সাধারণত হেড ফিড ও হোল ফিড দু’ধরনের হয়ে থাকে। এরমধ্যে চলতি ধানের মৌসুমে  হোল ফিড কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহারে ৬০-৭০ শতাংশ পর্যন্ত খরচ কমাতে সাহায্য করছে। অন্যদিকে সময় বাঁচাচ্ছে ৭০-৮২ শতাংশ এবং ৭৫ শতাংশ কম শ্রমিকের প্রয়োজন হচ্ছে না। প্রতি আধাঘণ্টায় এক একর জমির ধান কাটা এবং মাড়াই, পরিস্কার এবং প্যাকেটজাত করা সম্ভব হচ্ছে। এই মেশিন ব্যবহারের ধানের পাশাপাশি গমও কাটা যায়। প্রচলিত নিয়মে এক একর জমির ফসল কাটা ও মাড়াই করতে খরচ পড়ছে প্রায় ১৬-১৭ হাজার টাকা। সেখানে এই মেশিন ব্যবহারে খরচ পড়ে মাত্র ৬-৭ লিটার ডিজেল। এ মেশিন অল্প কাঁদায় ব্যবহার করা যায়। মেশিনটির মাধ্যমে ধান কাটা হলে দানা নষ্ট হয়না। ফলে ফসল বেশি পাওয়া সম্ভব। উপজেলার সরনজাই এলাকার কৃষক মইনুল আলী বলেন, বোরো-আউশ মৌসুমে ধান কাটার শ্রমিক দিয়ে ধান কাটালে বিঘায় প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ আছে। তারপর আবার সেই ধান মাড়াই করতে মাড়াই মেশিনের ধানের ভাগ নয়তো টাকা দেওয়া লাগে। আর হোল ফিড কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনে ধান কাটায় এবার সব কাজ একসঙ্গেই হয়ে যাচ্ছে। খরচ আসে প্রতিবিঘায় সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা। মেশিনের কারণে কৃষকের উপকার হয়েছে। একই উপজেলার জিওল গ্রামের কৃষক আলী হোসেন বলেন, এ বছর এউপজেলায়  বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের কারণে দ্রুত কাটাও শেষ হয়ে গেছে। কামারগাঁ ইউপি সদস্য ও কৃষক লুৎফর রহমান জানান, মেশিন কৃষকের জন্য আশির্বাদ। কারন এসময় শ্রমিক পাওয়া যায় না। আবার পেলেও কদর অনেক। মেশিনে আট বিঘা জমি কাটা মাড়াই করা শেষ। আট বিঘা জমির ধান কাটা মাড়াই করতে খরচ হয়েছে ১১ হাজার ২০০ টাকা। আর শ্রমিক দিয়ে কাটা মাড়াই করলে আট বিঘা ৩০-৩৪ হাজার টাকা খরচ হত, আবার সময় লাগত এক সপ্তাহের মত। মেশিনে কাটা মাড়ায়ে ২০-২২ হাজার টাকা বেঁচেছে। তিনি আরো জানান, আমাদের এলাকায় এক বিঘা জমির ধান কাটা মাড়ায় করতে মেশিনে ১৪০০ টাকা খরচ হচ্ছে। শ্রমিক দিয়ে কাটা মাড়াই করলে এক বিঘায় ৪৫০০-৫০০০ হাজার টাকা খরচ হত। একই এলাকার কৃষক জসিমের ১৩ বিঘা, সিরাজুলের ১০ বিঘা, মোজাহারের ৬ বিঘা ও নজরুলের ১০ এবং খলিলের ২২ বিঘা সহ প্রায় কৃষকরা মেশিনে কাটা মাড়ায়ের কারনে হাজার হাজার টাকা রক্ষা হয়েছে বলে জানান মেম্বার লুৎফর।

উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মেদ  বলেন, এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক হারভেস্টার মেশিন দিয়ে উপজেলার ধান কাটা হয়েছে। মেশিনে ধান কাটার সময় কোনো সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এর ফলে চলতি মৌসুমের এ উপজেলায় ধান কাটা শেষের পথে। তবে আলুর  জমির যত সামান্য ধান কাটতে এখনো বাকি আছে। মেশিনে ধান কাটার ফলে পুরো উপজেলায় কৃষকদের প্রায় ৪০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। আগামীতে কৃষিকে যন্ত্র নির্ভর ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কৃষকদের আরও বেশি বেশি  প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris