শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে নির্দেশ প্রধনমন্ত্রীর, কবে কমবে বলতে পারবেন না পরিকল্পনামন্ত্রী

Paris
Update : মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০২৩

এফএনএস

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে জনগণের কষ্ট লাঘবে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানেও তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার একনেক সভায় এ নির্দেশনা দেন সরকার প্রধান। শেরে বাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভার সভাপতিত্ব করেন একনেক’র চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। পরে তার অনুশাসনগুলো তুলে ধরেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। সভার বরাত দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেছেন এই মুহূর্তে আমাদের দুটি বড় সমস্যা হচ্ছে বিদ্যুৎ ও মূল্যস্ফীতি। এই দুটি সমস্যার সমাধানে কাজ করতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। সরকার প্রধান বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অর্থনৈতিক কলাকৌশল কাজে লাগিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। ফসল সংরক্ষণে আরও সংরক্ষণাগার নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ পচনশীল পণ্যে সংরক্ষণাগার ও ইমপোর্ট অথবা ইন্টারনাল প্রোডাকশনও বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শুধু ঢাকায় সংরক্ষণাগার করলে হবে না- রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় সংবেদনশীল পণ্যের সংরক্ষণাগার বাড়াতে হবে। শুধু তাই নয় মূল্যস্ফীতি কেন বাড়ছে গবেষণা করে এর কারণ খুঁজে বের করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রথম কৌশল হলো মূল্যস্ফীতি বাড়তে না দেওয়ায় এটাকে পিছিয়ে আনা। জানি এটা কঠিন, তবে নামাবার পথ কিছু আছে, সেই কৌশল হলো অ্যাকশনগুলো দ্রুত নিতে হবে, দাম বেশি বেড়ে গেলে আমদানি করতে হবে এবং স্টক হাতে রাখতে হবে যাতে দাম বাড়লে আমরা যেন স্টক নিয়ে মাঠে নামতে পারি। তাহলেই পণ্যে দাম কমে আসবে। আর সমস্ত মার্কেটকে মসৃণ রাখতে হবে, কোনো উঠকো ঝামেলা রাখতে দেওয়া হবে না।

এদিকে বৈশ্বিক বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমলেও দেশে এখনই তার প্রভাব পড়ছে না বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি কবে কমবে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা অনেক পণ্যের দাম দুই মাস আগে পেমেন্ট করেছি। এ ছাড়া ডলারের দাম এখনো কমেনি। ফলে দেশে নিত্যপণ্যের দাম কমতে সময় লাগবে। গতকাল মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভা শেষে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। বৈশ্বিক বাজারে কমলেও আমাদের দেশে নিত্যপণ্যের দাম কমছে না কেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিদেশে কমলেও রাতারাতি দেশে প্রভাব পড়ে না। আমরা অনেক পণ্যের দাম দুই মাস আগে পেমেন্ট করেছি। সেগুলো এখনো হাতে পায়নি। এ ছাড়া ডলারের দাম এখনো কমেনি। ডলার দিয়েই আমাদের পণ্য আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বলেছে, জ¦ালানির মূল্য বৃদ্ধির বিরূপ প্রভাবের কারণে চলতি অর্থবছরের মে মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়েছে, যা ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১১ সালের মে মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ২ শতাংশ। বাড়তি মূল্যস্ফীতি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে এম এ মান্নান বলেন, আশা করেছিলাম মূল্যস্ফীতি কমবে। কিন্তু কমেনি, বরং আরও বেড়েছে। এটা দুঃখজনক। বিশাল লোডশেডিং আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। দুই সপ্তাহে পরে লোডশেডিং কমবে, তবে মূল্যস্ফীতি কবে কমবে বলতে পারবো না। মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য আমরা নানা কৌশল নিচ্ছি। নতুন প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ ধরা হয়েছে। এটা সম্ভব নয় দাবি করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামানোর কথা বলা হয়েছে, যা সম্ভব নয়। তবে মূল্যস্ফীতি কমাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। মালামাল স্টক (পণ্য মজুত) করতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিত্যপণ্যের দাম কমছে, আমরাও পারবো। তবে ৬ শতাংশে নামতে পারবো না, চেষ্টা করবো কমানোর। বাজারকে মসৃণ করবো। ডলার ছাড়াও অন্য মুদ্রায় বাণিজ্য করবো জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নানা মুদ্রায় ব্যবসা-বাণিজ্য করবো। সরকার অন্যান্য পণ্য আমদানিতে যাবে। পেঁয়াজ আমদানি করছি, এখন দাম কমছে। দরকার হয় অন্য পণ্যও আমদানি করবো। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রায় ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৭ হাজার ৪৪০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এ ছাড়া বৈদেশিক অর্থায়ন ৩ হাজার ৮৬১ কোটি ৭২ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৮০ কোটি ৮ লাখ টাকা।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris