শুক্রবার

১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীতে গ্রীষ্মকালীন কারুশিল্প উদ্যোক্তা মেলার উদ্বোধন অংকের হিসাব লাগে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত : আব্দুল ওয়াদুদ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন হজ পালনের ধাপসমূহ একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে, ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরিতে রাসিকের প্রতিটি ওয়ার্ডে স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা হবে : মেয়র টকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনা চান প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীতে গুটি আম পাড়া শুরু হলেও জাতের আম পাড়া হবে ২৫ মে থেকে রাজশাহীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে মিজু গ্যাংয়ের ১১ সদস্য গ্রেফতার বাঘায় দোকান কর্মচারিকে কুপিয়ে হত্যার দুই আসামীর মৃত্যুদণ্ড

রাণীনগরে ভূয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন!

Paris
Update : শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২২

আককাস আলী
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষানীতিকে উপেক্ষা করে উপবৃত্তির লিস্টে পার্শ্ববর্তী বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নাম দিয়ে টাকা উত্তোলন করেছেন শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথ সরকার। প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে ৩শ টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে আকর্ষিকভাবে পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গত ৩১ অক্টোবর তারিখে পরিদর্শন খাতায় নোট করেছেন।
জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষায় সহায়তার জন্য সরকারিভাবে উপবৃত্তি পাবেন। এতে ওই শিক্ষার্থীদের ৭৫% উপস্থিতির হার, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে ৩৩% নাম্বার পেতে হবে, অষ্টম ও নবম শ্রেণীতে গড়ে ৪০% নাম্বার পেতে হবে ও ভর্তির পর থেকে বিরতিহীন ভাবে অধ্যয়ন করতে হবে।
এছাড়া প্রতিবেদকের হাতে থাকা কাগজপত্রে দেখা যায়, শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী (গতমাসের ভোটার লিস্ট অনুযায়ী) ২শ ২৪ জন অথচ উপবৃত্তির চাহিদার লিস্টে প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথ সরকার ৪৩৮ জন শিক্ষার্থী দেখান। এরমধ্যে ১শ ৩৯ জন শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পেয়েছেন। অথচ প্রাপ্যতা অনুসারে ওই প্রতিষ্ঠানের ৬৯ জন শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাবে। উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪৪ জন শিক্ষার্থী ওই প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়াই করে না। তারা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। তাদের নামে যে উপবৃত্তির টাকা আসে এটাও তারা জানেন না।
অভিভাবক ভোটার লিস্ট অনুযায়ী ওই প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী আছে ৫৩ জন, সপ্তম শ্রেণীতে ৫০ জন, অষ্টম শ্রেণীতে ৩৯ জন, নবম শ্রেণীতে ৪১ জন, দশম শ্রেণীতে ৪১ জন। উপবৃত্তি পায় ষষ্ঠ শ্রেণীতে ২৪ জন, সপ্তম শ্রেণীতে ৫২ জন, অষ্টম শ্রেণীতে ২৫ জন, নবম শ্রেণীতে ২৩ জন, দশম শ্রেণীতে ১৮ জন। এরমধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানের কোন কাগজপত্রে নাম নেই ষষ্ঠ শ্রেণীর ১০ জনের, সপ্তম শ্রেণীর ২১ জনের, অষ্টম শ্রেণীর ৫ জনের, নবম শ্রেণীর ২ জনের, দশম শ্রেণীর ৬ জনেরসহ মোট ৪৪ জনের।
তিনি উপবৃত্তির জন্য শিক্ষার্থী দেখিয়েছেন ষষ্ঠ শ্রেণীর ১৩০ জন, সপ্তম শ্রেণীর ১০০ জন, অষ্টম শ্রেণী ৭৮জন, নবম শ্রেণীর ৭০ জন, দশম শ্রেণীর ৬০ জনসহ মোট ৪৩৮ জন। চাপাপুর ইব্রাহীম মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষার্থী নাদিয়ার মা আঞ্জুমান আরা, শ্রী জয় চন্দ্রের বাবা প্রবীণ কুমারসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে/মেয়েদের কখনো তো শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেইনি তারা কেউ সেই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে না।
এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, উপবৃত্তির কাজে প্রধান শিক্ষকের সাথে অফিস সহকারী নূরুল ইসলাম জড়িত। তারা আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন যাবৎ উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক মাসিক বেতন আদায় করে আসছে।এবিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী নূরুল ইসলাম বলেন, উপবৃত্তি দেওয়ার নামে অনেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩শ টাকা করে নেওয়ার যে কথা ইউএনও স্যার পরিদর্শন বহিতে লিখেছেন তা সঠিক নয়। এছাড়া শিক্ষানীতি উপেক্ষা করে অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কিভাবে উপবৃত্তি দেওয়া হয়েছে তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে এসব একটু করতেই হয়। আপনার প্রতিষ্ঠানে চায়ের দাওয়াত রইল আপনি আসেন সামনাসামনি কথা বলবো। এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন বলেন, আপনার মাধ্যমে এই বিষয়টি প্রথম জানলাম। সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাহাদাত হুসেইন বলেন, আমি এই প্রথম ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি। সেখানে আমি যথেষ্ট অনিয়ম পাওয়ার পর সবার সামনে আমি সেগুলো লেখে তাদের পড়ে শুনিয়েছি। তখন তারা কেউ মিথ্যে বলেনি। আর অতিরিক্ত শিক্ষার্থী দেখিয়ে উপবৃত্তি উঠানোর বিষয়ে জানতাম না। সরকার শিক্ষার জন্য অনেক কিছু করছে।এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris