রবিবার

২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষকের বেত্রাঘাতে আহত সেই ছাত্রকে বাগমারা মেডিকেল ভর্তি

Paris
Update : সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০২২

তুচ্ছ ঘটনায় ৭ম শ্রেণির কোমলমতি এক শিশুতে পিটিয়ে আহত করেছেন এক নির্দয় শিক্ষক। শিক্ষকের এমন নির্মম প্রহারে যন্ত্রনায় কাতর শিশু তারেক আহম্মেদকে সোমবার (৭ নভেম্বর) সকালে বাগমারা মেডিকেলে ভর্তি করেছেন তার অভিভাবকরা। ডাক্তাররা বলছেন শিশুটির ঘাড়ে ও পিটে প্রচণ্ড ব্যাথার কারণে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। এই ঘটনায় রাজশাহীর আদালতে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছেন তারেকের অভিভাবকরা।

এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার পীরগাছা মডেল হাইস্কুলের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশু তারেক আহম্মেদ। তারেক পাশ্ববর্তী বাগমারা উপজেলার কামারখালি গ্রামের মালয়েসিয়া প্রবাসী আজিজুলের পুত্র। তারেক শারিরীকভাবেও অসুস্থ। তার বাম উরুতে হাড়ক্ষয়(টিবি) রোগে আক্রান্ত হওয়ায় সে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে অক্ষম। কোনরকম খুড়িয়ে হাঁটাচলা করে। প্রতিদিনের মত তারেক রোববার অনেক কষ্ট করে খুঁড়িয়ে স্কুলে গিয়ে উপস্থিত হয়। সে যথারীতি ক্লাস রুমে গিয়ে বসে। এ সময় ক্লাস নিচ্ছিলেন স্কুলের সহকারি শিক্ষক এনামুল হক।

স্কুলের পাশেই বহমান বারনই নদী। নদী দিয়ে সে সময় খড় বোঝাই শ্যালো ইঞ্জিন চালিত একটি নৌকা যাওয়ার দৃশ্য দেখার জন্য ক্লাসের কিছু শিক্ষার্থী জানালা দিয়ে উঁকি দেয়। এ সময় হাঁটাচলায় অক্ষম তারেক বেঞ্চেই বসা ছিল। কিন্তু ওই দৃশ্য দেখে শিক্ষক এনামুল প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে কাছে পেয়ে প্রথমে তারেককেই বেত্রাঘাত শুরু করে। পরে অন্যান্য ছাত্রকেও সে বেত্রাঘাত করে। এ সময় তারেক তারেক বেঞ্চ ত্যাগ করেনি বা জানাল দিয়ে উঁকি দেয়নি এমন প্রতিবাদ করলে শিক্ষক এনামুল আরো ক্ষিপ্ত হয়ে তারেককে দ্বিতীয় দফা আবারো বেত্রাঘাত করা শুরু করেন।

এতে তারেক বেঞ্চ থেকে ছিটকে পড়েন ও ঘাড়ে প্রচণ্ড আঘাত পান। শিশু তারেকের নানা একাব্বর আলী বলেন, শিশুটির বাবা প্রবাসী। তাদেরকে আমিই দেখাশুনা করি। এ ছাড়া আমার নাতি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। একজন অসুস্থ ছাত্রকে যে ভাবে অন্যায় করে বেত্রাঘাত করেছে। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই। এজন্য আমরা বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমানকে জানালে তিনি কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখান। এ বিষয়ে শিক্ষক এনামুলের কাছে জানতে চাইলে, তিনি শিশু তারেককে সামান্য বেত্রাঘাত করার কথা স্বীকার করে বলেন, এজন্য মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার কি আছে। ওটা তারা সাজিয়ে বলেছেন। বর্তমান সরকার স্কুলে বেতের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছেন তারপরও তুচ্ছ ঘটনায় কী করে একজন অসুস্থ শিশুকে বেত্রাঘাত করা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি তারা আমাকে জানালে আমি মিমাংসা করে দিতে চেয়েছি।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris