শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লজ্জাশীলতা ঈমানের অঙ্গ, মুমিনের ভুষণ

Paris
Update : বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ধর্মপাতা: লজ্জাশীলতা মুমিনের ভুষণ। লজ্জা ও সম্ভ্রম মানুষের এমন একটি স্বভাবজাত গুণ; যার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বহুবিদ নৈতিক গুণাবলীর সমাবেশ ঘটে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অধিক লজ্জাশীল ছিলেন। তিনি লজ্জাশীলতাকে ঈমানের অঙ্গ বলেছেন। লজ্জাশীলতা সম্পর্কে আর কী বলেছেন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম?

মানুষের মধ্যে লজ্জাশীলতার কারণেই স্বচ্ছতা ও নির্মলতার বিকাশ ঘটে। মানুষের মধ্যে তৈরি হয় জবাবদিহিতার আগ্রহ। এমনকি যাবতীয় জটিলতা, কুটিলতা, পাপ-পংকিলতা ও মলিনতা থেকে লজ্জা বা সম্ভ্রমের কারণেই মুক্ত থাকা যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘লজ্জা ঈমানের একটি বিশেষ শাখা।’ (বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত)

লজ্জা যে শুধু মানুষের ঈমানের একটি বিশেষ গুণ তাই নয়, বরং আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসুলের গুণও বটে। তাঁরা উভয়ে এ গুণে গুণান্বিত। হাদিসে এসেছে-
১.‘তোমাদের প্রতিপালক লজ্জাশীল, পরম দয়ালু। বান্দা যখন তাঁর দরবারে উভয়হাত উঠায়, তখন তিনি বান্দার খালি হাত ফেরত দিতে লজ্জাবোধ করেন।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ ও মিশকাত)

২. হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্দানশীল কুমারী অপেক্ষাও অধিক লজ্জাশীল ছিলেন। তিনি যখন কোনো কিছু অপছন্দ করতেন আমরা তা তাঁর চেহারা মোবারক দেখলেই বুঝে ফেলতাম। এ হাদিসটি হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুও বর্ণনা করেন। তিনি আরও বলেন, তিনি কুমারী অপেক্ষা অধিক লজ্জাশীল ছিলেন।

৩. হজরত সাহল ইবনে সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুব লজ্জাশীল ছিলেন। যে জিনিসিই তাঁর কাছে চাওয়া হতো, তিনি তা দিয়ে দিতেন।

লজ্জা বা শরম মানুষকে সব অনিষ্ট কাজ থেকে রক্ষা করে। লজ্জাহীন মানুষ সব সময় বিরাহমীহনভাবে মন্দ কাজ করতে পারে। কোনো কিছুই তাকে মন্দকাজ থেকে ফেরাতে পারে না। এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘লজ্জা-শরম না থাকলে তুমি যা ইচ্ছে তাই করতে পারবে।’ (বুখারি ও মিশকাত)

লজ্জাশীলতার বিষয়ে নবিজির ছোট্ট একটি উপদেশ উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য অত্যন্ত জরুরি। আর তা হলো-
‘নবিজি একদিন এক আনসারি সাহাবির কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই সময় তার ভাই তাকে বেশি লজ্জাশীল না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছিলেন। (কারণ জীবিকা অন্বেষণ ও ইলম অর্জনের জন্য ক্ষতিকর) এ কথা শুনে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তাকে এভাবে থাকতে দাও। যেহেতু লজ্জাশীলতা ঈমানেরই একটি অঙ্গ। (বুখারি ও মিশকাত; হাদিসটি হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন)

সুতরাং লজ্জাশীলতা, লজ্জাবোধ মানব জীবনে জাগ্রত থাকা এবং রাখা ঈমানের অপরিহার্য দাবি। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে লজ্জাশীলতার গুণ অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris