গোমস্তাপুর প্রতিনিধি : রহনপুর থেকে আড্ডা হয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়কটি চলে গেছে নওগাঁ জেলার পোরশা ও সাপাহার উপজেলায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর কলেজ মোড় ও খোয়াড়মোড় হয়ে নির্মিত এ সড়কটা জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট থেকে শুরু হয়েছে। মানুষ ও যানবাহন চলাচলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু হয় মানুষ ও যানবাহন চলাচল। নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের তাগিদে মানুষজন ছুটে চলে এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে। তাই সকাল থেকে গভীর রাত অবধি রাস্তাটিতে যানবাহনের ভিড় লেগে থাকে। দূর্ঘটনা যেন মৃত সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে এ সড়কে। মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে এ বছরে (জুন পর্যন্ত) এ পর্যন্ত প্রায় ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছে প্রায়ই শতাধিক। আহতদের মধ্যে কেউ কেউ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। সড়কটির রহনপুর থেকে আড্ডা পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার ব্যাপি রাস্তায় দূর্ঘটনা বেশি ঘটে।
সড়ক দূর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, সড়কে যেসব গাড়ি চলাচল করে তাদের অধিকাংশ ফিটনেসবিহীন। আবার চালকের আসনে যারা বসে দেখা যায় তাদের অনেকেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই। আবার লাইসেন্স বিহীন নসিমন, করিমন, ভুটভুটি এ জাতীয় গাড়িগুলো এ রাস্তায় অনেক চলাচল করে। তাছাড়া উঠতি বয়সের কিছু যুবক তরুণদের বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানো দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। রহনপুর থেকে আড্ডা সড়কে মিশন মোড় পার হয়ে কিছুদূর গিয়ে চোখে পড়বে একটি মদের দোকান। যেখানে মদ্যপান করতে নানা শ্রেণী পেশার মানুষ ভিড় জমায়। তাদের অনেকেই যাতায়াতের জন্য বাহন হিসাবে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। মদ পান করে মদ্যপ হয়ে রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং তাদের নিয়ন্ত্রণহীন চলাফেরার কারণে এসব দূর্ঘটনাগুলো ঘটে বলে অনেকই মনে করেন। রহনপুর আড্ডা সড়কে রয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর কার্যালয়। সড়কে কোন দূর্ঘটনার খবর পেলেই ফায়ার সার্ভিসের টিম দ্রুত গতিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় গোমস্তাপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর পরিদর্শক রেজাউল করিমের সাথে। তিনি জানান, রহনপুর -আড্ডা সড়কটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এর কারণ হচ্ছে অদক্ষ চালক আর বেপরোয়া গতির যানবাহন। জনসংখ্যার তুলনা অনুযায়ী রাস্তার প্রসস্থতাও কম। তাছাড়া রাস্তা প্রসস্থতা না হওয়ার কারণে দিনের পর দিন সড়ক দূর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। তিনি আরও জানান, যেখানে বাজার আছে, সেখানে ফুট ওভার ব্রিজ প্রয়োজন । সেটাও নেই। পথচারী এবং গাড়ি চালকদের প্রতি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এর যে নির্দেশনা আছে তা কেও মেনে চলছে না। যার ফলে সড়ক দূর্ঘটনা বাড়ছে। এ ব্যাপারে গোমস্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আলমাস আলী সরকার জানান, যেসব লাইসেন্স বিহীন অবৈধ গাড়ীগুলো বেপরোয়া ভাবে রাস্তায় চলাচল করছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান জোরদার করা হচ্ছে। তাছাড়া রাস্তাঘাটে নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে টহল পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।