শনিবার

২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
তীব্র তাপদাহে রাসিকের উদ্যোগে ১০ স্থানে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প নওগাঁয় ১১০ মেট্রিক টন ভূট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে বাঘা উপজেলায় আ.লীগের প্রার্থী নির্ধারণ! বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী গরমের জন্য সরকারকে দায়ী করলেন রিজভী আপাতত গরমেই খেলবে সাবিনা-সানজিদারা ১০ কোটি টাকা অনিয়ম পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক লালমনিরহাটেও যোগ দেননি কেএনএফ প্রধান নাথানের স্ত্রী বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তীব্র তাপদাহে নগরবাসীর পাশে থাকতে রাসিক যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে

ঈদে ছড়িয়েছেন অর্ধকোটি জাল টাকা, টার্গেট ছিলো এক কোটির

Paris
Update : শনিবার, ৯ জুলাই, ২০২২

ছয়-সাত বছর ধরে জাল টাকা বানিয়ে বাজারে ছড়িয়ে আসছেন রফিকুল ইসলাম সাকির। গ্রেপ্তার হয়ে একবার জেলও খেটেছেন তিনি। জেলে যাওয়ার পর জামিনের জন্য তিনি যে আইনজীবী ধরেন, তার সহকারী (মুহুরি) ছিলেন আবু বকর রিয়াজ। সাকিরকে জামিনে সহায়তা করেন তিনি। এরপর সাকিরের হাত ধরে মুহুরি রিয়াজও জড়িয়ে পড়েন জাল টাকা বানানোর চক্রে। হয়ে ওঠেন জাল টাকা তৈরির কারিগর। সাকির ও রিয়াজের সম্বল ছিল মাত্র একটি ল্যাপটপ ও প্রিন্টার। তা দিয়েই ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বানিয়ে বাজারে ছাড়তেন তারা। এক লাখ জাল টাকার নোট বানাতে খরচ হতো ৫-৬ হাজার। এসব জাল টাকার নোট কারবারিদের কাছে পৌঁছাতে কাজ করে আরও দুজন। জাল নোটে সাজানো লাখ টাকার বান্ডিল তারা বিক্রি করতেন মাত্র ১০-১২ হাজারে। চক্রে জড়ানোর পর সাকিরের মতো মুহুরি রিয়াজও মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা আয় করতেন, যা তার আগের পেশা (মুহুরি) থেকে আয় হওয়া টাকার অনেক বেশি। ফলে জাল টাকা বানানো মুহুরি রিয়াজের নেশা হয়ে ওঠে। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে সাকির-রিয়াজের নেতৃত্বাধীন চক্রটির টার্গেট ছিল এক কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তারা অন্তত অর্ধকোটি টাকার জাল নোট ছড়িয়েও দিয়েছেন। এরপরই গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন এ চক্রের মূলহোতা সাকিরসহ চার সদস্য। -এফএনএস

 

তবে চক্রটিকে গ্রেপ্তার করা গেলেও পুরোপুরি ঠেকানো যায়নি জাল নোটের বিস্তার। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে জাল টাকা তৈরির ঘরোয়া কারখানার সন্ধান পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের গুলশান বিভাগ। এ সময় জাল টাকা তৈরি, বিপণন ও জাল টাকা কিনতে আসা চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- আবু বকর সিদ্দিক রিয়াজ, মেশিনম্যান রফিকুল ইসলাম সাকির, বিপণন সহকারী মনির হোসেন ও বিউটি আক্তার। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, দুটি প্রিন্টার, পাঁচটি স্কিন প্রিন্ট ফ্রেম, চার হাজার পিস জাল নোট তৈরির সাদা কাগজ, আট পিস ইনজেক্ট ইঙ্ক, একটি সিকিউরিটি থ্রেট পেপার রোল, পাঁচটি প্লাস্টিকের সাদা কালির কৌটা, দুটি অ্যান্টি কাটার, দুটি স্টিলের স্কেল এবং ১০০০ ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের ৪৮ লাখ জাল টাকা জব্দ করা হয়। গ্রেফতরদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে ডিবি জানিয়েছে, ফটোশপের মাধ্যমে আসল টাকার আদলে ডিজাইন করতেন তারা। সুকৌশলে কাগজ জোড়া লাগিয়ে ফয়েল পেপার দিয়ে তৈরি করা হতো রুপালি রঙের নিরাপত্তা সুতা। ঈদ সামনে রেখে টার্গেট ছিল এক কোটি জাল টাকা বাজারে ছাড়ার। চক্রটিকে গ্রেপ্তার করা গেলেও পুরোপুরি ঠেকানো যায়নি জাল টাকার বিস্তার। জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের মূলহোতা ও মেশিনম্যান রফিকুল ইসলাম সাকির জানিয়েছেন, জামিন নিয়ে তাকে জেল থেকে বের হতে সাহায্য করেন মুহুরি আবু বকর রিয়াজ। টাকার লোভে আইনের কাজ ছেড়ে তিনি অপরাধ জগতে পা বাড়ান। মুহুরির পেশা ছেড়ে হয়ে ওঠেন জাল টাকা তৈরির কারিগর। এরপর সাকির ও রিয়াজ একসঙ্গে জাল নোট বানানোর কাজ শুরু করেন।

 

এক লাখ জাল টাকা তৈরিতে তাদের খরচ পড়ে ৫-৬ হাজার টাকা, যা বিক্রি হয় ১০-১২ হাজারে। মুহুরি আবু বকর রিয়াজ জানিয়েছে, রফিকুল ইসলাম সাকির গ্রেপ্তারের পর যখন আদালতে হাজিরা দিতে যান, তখন তার সঙ্গে পরিচয় হয়। জামিনে সাকির মুক্ত হওয়ার পর থেকে একসঙ্গে কাজ শুরু করেন তারা। এ কাজে মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা আসে তারা। মুহুরির কাজ করে এর চেয়ে অনেক কম টাকা আয় হতো তারা। গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. মশিউর রহমান বলেন, চক্রটি নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে জাল টাকা তৈরি করতো। তারা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় এসব নোট সরবরাহ করে আসছিল। কোরবানির ঈদে গরুর হাটকে কেন্দ্র করে জাল টাকার বড় ব্যবসার টার্গেট করেছিলেন তারা। এ উদ্দেশ্যে নদীর পাড়ের ঢাকা উদ্যানে বাসা ভাড়া নিয়ে গত একমাসে অনেক জাল নোট তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিল। তিনি বলেন, চারটি সিরিজে তৈরি করা হচ্ছিল এ জাল টাকার নোট। কাগজ ও প্রিন্টিং কোয়ালিটিতে যথেষ্ট উন্নত মানের হওয়ায় আসল-নকল শনাক্ত করা কিছুটা কঠিন। ঈদকে কেন্দ্র করে অন্য কোনো কারবারিরা জাল টাকা তৈরিতে জড়িত আছে কি না, তাদেরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ছাড়া কোরবানির হাটে ও অন্যান্য সব জায়গায় লেনদেনের যাচাই-বাছাই করে টাকা গ্রহণ করার জন্য গ্রাহকদের অনুরোধ জানাচ্ছি।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris