আককাস আলী : নওগাঁয় ভুয়া বিয়ের কাবিননামা দেখিয়ে স্ত্রী দাবি করে তরুণীকে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে এক তরুণীর করা মামলায় বরসহ কাজীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গত মঙ্গলবার দুপুরে নওগাঁর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১-এ হাজির হয়ে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক ইমতিয়াজুল ইসলাম। এরা হলেন নওগাঁ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাজি রফিকুল ইসলাম ও নওগাঁর মান্দা উপজেলার বৈলশিং গ্রামের বাসিন্দা তাল বেলাল মাহমুদুননবী।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলায় অভিযুক্ত কাজি রফিকুল ইসলাম ও তাল বেলাল মাহমুদুননবী আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। তাঁদের পক্ষে আইনজীবী আতিয়ার রহমান ও সাজেদুর রহমান শুনানিতে অংশ নেন। বাদীর পক্ষে নওগাঁর কোর্ট পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম এ জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে নওগাঁর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১-এর বিচারক তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নওগাঁ সদর মডেল থানায় করা মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী তরুণী (২৬) নওগাঁ শহরের বাসিন্দা। তাল বেলাল মাহমুদুননবী নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ওই তরুণীর বাবাকে সহযোগিতার নামে তাঁর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। তাল বেলাল মাঝেমধ্যেই ওই তরুণীর বাড়িতে যাতায়াত করতেন। ৫ মে ওই তরুণীর বাড়িতে গিয়ে কাজি রফিকুল ইসলামের সই করা বিয়ে নিবন্ধনের কাবিননামা ও নওগাঁ নোটারি পাবলিকে সম্পন্ন একটি হলফনামা দেখিয়ে তাল বেলাল তাঁকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেন। কিন্তু ওই তরুণী এই বিয়ের কাবিননামা ও হলফনামা ভুয়া বলে দাবি করে তাঁর সঙ্গে যেতে অস্বীকৃতি জানালে বেলাল তার সঙ্গে আসা সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজন দিয়ে তাকে নিজের বাড়িতে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এই ঘটনার পর ওই তরুণী জালজালিয়াতির করে ভুয়া কাবিননামা, নোটারি পাবলিকের হলফনামা তৈরি, প্রতারণা এবং বেআইনিভাবে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ এনে গত শুক্রবার নওগাঁ সদর মডেল থানায় মামলা করেন। ওই তরুণীর বাবা বলেন, তাঁর মেয়ের নামে প্রায় দুই কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। বেলাল এটা জানতে পেরে ওই সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য ভুয়া কাবিননামা ও হলফনামা দেখিয়ে তাঁর মেয়েকে স্ত্রী বলে দাবি করেন। টাকার লোভে বিয়ে রেজিস্ট্রির কাজিসহ অন্যরা তাঁকে সহযোগিতা করেছেন।