শনিবার

২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
তীব্র তাপদাহে রাসিকের উদ্যোগে ১০ স্থানে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প নওগাঁয় ১১০ মেট্রিক টন ভূট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে বাঘা উপজেলায় আ.লীগের প্রার্থী নির্ধারণ! বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী গরমের জন্য সরকারকে দায়ী করলেন রিজভী আপাতত গরমেই খেলবে সাবিনা-সানজিদারা ১০ কোটি টাকা অনিয়ম পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক লালমনিরহাটেও যোগ দেননি কেএনএফ প্রধান নাথানের স্ত্রী বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তীব্র তাপদাহে নগরবাসীর পাশে থাকতে রাসিক যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে

পদ্মাচরে বছরে দু’বার বাদাম চাষ লাভজনক হওয়ায় বেড়েছে আবাদ

Paris
Update : বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার : বছরে দুইবার চাষ হয় এমন ফসল হাতেগুনা। তবে পদ্মার চরে বছরে দুই বার চাষ হচ্ছে বাদামের। পতিত জমি, আর চাষাবাদে খরচ কম হওয়ায় প্রতিবছর বাড়ছে বাদামের চাষ। এবছর পদ্মার দুই চরে ৩শ’ বিঘা জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। বাদামের উন্নত বীজ সরবারহ করেছে বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। বিএমডিএ থেকে জানা গেছে, কৃষকদের আগ্রহ আছে বাদাম চাষে। কিন্তু এতদিন তারা পদ্মার চরে পুরানো জাতের বাদাম চাষ করতো। তাতে তেমন ফলন হতো না। বাদাম চাষ লাভজনক করতে বিএমডিএ বারি-৯ জাতের বাদামের (চিনা বাদাম) বীজ কৃষকদের সরবরহ করেছে। চাষাবাদে লাভজনক হওয়ায় গেল দুই বছরের ব্যবধানে বাদাম চাষের জমি বেড়েছে ১২০ বিঘা। যদিও বিএমডিএ গেল তিন বছর ধরে বাদামের বীজ সরবরহ করে আসছে কৃষকদের মাঝে। যার সুফল পাচ্ছে চাষিরা।

বিএমডিএ’র সংশ্লিস্ট সূত্র বলছে, রাজশাহীর পদ্মার চরে বেশ কিছু পতিত জমি রয়েছে। সেই জমিগুলো বাদাম চাষের উপযোগী। বিএমডিএ চাষীদের বাদাম চাষে উদ্বুদ্ধ করতে উন্নত জাতের বীজ সরবরহ করেছে। ফলে একসময় পড়ে থাকা পতিত জমিতে এখন বাদাম চাষ হচ্ছে বছরে দুই বার। একটি রবি মৌসুম অর্থাৎ নভেম্বর থেকে এপ্রিল ও খরিপ-১ মে থেকে আগস্ট মাস। বাদাম চাষে একদিকে স্থানীয় কৃষকরা লাভোবান হচ্ছেন এবং অন্যদিকে এই অঞ্চলের চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখছে পদ্মার চরের বাদাম।
বাদাম চাষী মতিউর রহমান জানান, ‘বাদাম চাষে খরচ কম। পদ্মার পতিত জমিতে ভালো চাষ হয়। বিএমডিএ এর দেওয়া বারি-৯ জাতের বাদামের ফলন ভালো, দানাও ভালো। এবছর আমি ৭ বিঘা জমিতে বাদামের চাষ করেছি। আগে আমরা যে জাতের বাদাম চাষ করতাম তাতে ফরন কম হতো। কিন্তু এই বাদামে ফলন ভালো।’

বিএমডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী জিন্নুরাইন খান জানান, বর্তমানে পদ্মার চরের পবার হরিপুরের মাঝারদিয়াড় ও চর মাঝারদিয়াড়ে বারি-৯ জাতের বাদাম চাষ হচ্ছে। এই বীজ চাষীদের সরবরহ করা হয়। এই বীজ বর্তমান সময়ে অধিক ফলনশীল ও লাভজনক।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের দিকে ১৪৫ কেজি বাদামের বীজ পদ্মায় চাষের জন্য ১৩ জন কৃষককে দেওয়া হয়। সেই বছর ভালো ফলন হয়েছিল। এর পরের বছর ৩০০ কেজি বাদামের বীজ দেওয়া হয় আরো ১৫ জন কৃষককে। সর্বশেষ চলতি বছরে ২০০ কেজি বাদামের বীজ দেওয়া হয় ৯ জন কৃষককে। পদ্মার পতিত চরের জমিতে কৃষকরা এই বাদামের চাষ করেছে। ফলনও ভালো হয়েছে। তিনি আরো জানান, এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষের খচর হয় ৭ হাজার টাকা। তাতে বিঘায় ফলন হয় ৮ মন। আর একর প্রতি ফলন ৬০ মন। সবখরচ বাদ দিয়ে কৃষকের লাভ হচ্ছে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। বর্তমানে ৩৭ জন কৃষক বিএমডিএ এর দেওয়া বীজের বাদাম চাষ করছে।

এরআগে বাদাম চাষ নিয়ে পদ্মার চরে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। মাঠ দিবসে উপস্থিত ছিলেন- বিএমডিএর এইচ, ভিসিপি প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ এটিএম রফিকুল ইসলাম, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জগদীশ চন্দ্র বর্মন, বিএমডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী জিন্নুরাইন খান, হরিপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বজলে রেজবি আল হাসান মঞ্জিল, বিএমডিএর পবা সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুল আলম, উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাহাত পারভেজ।

রাজশাহী কৃষি সম্পসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) তৌফিকুর রহমান জানান, রাজশাহী জেলায় এবছর ৩৭৮ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বাঘায় সবচেয়ে বেশি। এই উপজেলায় ৩২৭ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। এছাড়া পবায় ৩০ হেক্টর, গোদাগাড়ীতে ৭ ও বাগমারায় ১০ হেক্টর জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে। এক কথার উত্তরে তিনি বলেন- গত বছরের চেয়ে এবছর ৩৪ হেক্টর জমিতে কম বাদামের চাষ হয়েছে। গেল বছর প্রণোদনা থাকায় জেলায় বাদামের চাষ বেশী হয়েছিল। সেই বছর ৪০৮ হেক্টর জমিতে চাষ হয়। তবে এবছর প্রণোদনা না থাকলেও তুলনামূলক বেশি জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। বিএমডিএর চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহান জানান, বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার।

আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা চান কৃষিতে যেন কোন অঞ্চল পিছিয়ে না থাকে। সেজন্যই প্রতিনিয়ত তিনি কৃষিক্ষেত্রে কিভাবে উন্নয়ন করবে সেজন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান চরাঞ্চলের মানুষ আগে যেখানে কোন ফসল ফলাতে পারত না, সেখানে বিএমডিএ’র সেচের মাধ্যমে পদ্মার চরে বিভিন্ন চাষবাদ করা সম্ভব হচ্ছে। আর এসব কৃষকদের মাঝে বিএমডিএ উন্নৎ জাতের বাদামের বীজ সরবারহ করায় এখন বাদাম চাষে বেশ লাভবান এবং দিন দিন এর উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে চরাঞ্চলে মানুষের জীবন-জীবিকার মানের উন্নয়ন হচ্ছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris