শনিবার

১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ইলেকট্রনিক ইমুনাইজেশন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা বিনিময়ে চসিক পরিদর্শনে রাসিক প্রতিনিধি দল গোদাগাড়ীতে বিদ্যুতের ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন রাজশাহীতে আ’লীগ কর্মী নয়নালের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের দাবি ‘সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশে বাধা নেই’ রক্তস্বল্পতা দূর করবে কচু যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্ক কি একদম তলানিতে কান উৎসবে নজর কাড়লেন অন্তঃসত্ত্বা প্রিয়তি শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকের আমানত কমেছে, ঋণ বাড়ছে, আস্থার সংকট

চৈত্রের বৃষ্টিতে আমচাষীদের স্বস্তি

Paris
Update : বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০২২

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : আমের গুটি আসার পর কয়েকদিন ধরেই তীব্র রোদ-খরায় চিন্তিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষীরা। অপেক্ষায় ছিলেন একটি বৃষ্টির৷ কারন গুটি থাকা অবস্থায় একটি বৃষ্টিই পাল্টে দিতে পারে এই মৌসুমের আম উৎপাদন। আমচাষীদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে তাদেরকে স্বস্তি দিয়েছে প্রকৃতি। চৈত্রের একটি বৃষ্টিতেই এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষীরা। গত সোমবার (০৪ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে কয়েক মিনিট ও রবিবার (০৩ এপ্রিল) রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে থেমে থেমে প্রায় ঘন্টাখানেক বৃষ্টি হয়েছে আমের রাজধানীখ্যাত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে।

এদিকে, রবিবার রাতে সদর উপজেলার কয়েক জায়গায় ঝড়ো হাওয়ার কারনে আমের গুটি ঝরে যায়। তবুও চৈত্রের এই বৃষ্টিকে সামগ্রিকভাবে আমচাষীদের জন্য সহায়ক বলে মনে করেন আম গবেষক ও কৃষি বিভাগ। সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গার আমচাষী রাসেল আহমেদ বলেন, যেসব গাছে মুকুল এসেছিল এখন তার প্রায় সব গাছেই গুটির আকার ধারণ করেছে। এসময়ে আমের গুটিতে পোকার আক্রমণ হয়। এদিকে গত কয়েকদিন ধরে তীব্র রোদ ও খরায় গুটির গোড়া শুকিয়ে গেছিল। এসময়ে একটি বৃষ্টির খুবই প্রয়োজন হয়। তবে কয়েকদিন থেকে কোন বৃষ্টির দেখা নেই।

কৃত্রিমভাবে সেচ দিয়েও তা খুব উপযোগী নয়। বৃষ্টির পানি পাওয়ার খুবই উপকার হয়েছে। গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের বেলাল বাজার এলাকার আমচাষী আব্দুর রাকিব জানান, আমের গুটি থাকা অবস্থায় এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে হওয়া বৃষ্টিতে গাছ ধুয়ে গেছে। মরা সব পাতা পড়ে গেছে। দূর হয়েছে অনেক রোগবালাই। সেই সাথে নিচে সেচও হয়ে গেছে। এই বৃষ্টিআমের ফলন বৃদ্ধি ও নিরাপদ আম উৎপাদনে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিডেটের সাধারণ সম্পাদক ও আম রফতানিকারক ইসমাঈল খান শামিম বলেন, এই সময়ে আমের গুটিতে পোকার আক্রমণ হয়।

এছাড়াও গুটির গোড়া শুকিয়ে গিয়ে ঝরে পড়া শুরু হয়। এই বৃষ্টির ফলে পোকার আক্রমণ দূর হবে এবং গুটি ঝড়ে পড়া রোধ হবে। বৃষ্টি পেয়ে এখন গুটির গোড়া শক্ত হবে। এছাড়াও বৃষ্টি পেয়ে এখন দ্রুত বাড়বে আমের আকার। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ব গবেষনা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. ইউসুফ জানান, এইসময়ে একটি বৃষ্টি প্রত্যাশিত ছিল আমচাষীদের জন্য। বৃষ্টির ফলে আমের গুটির ঝরে পড়া অনেকাংশেই কমে যাবে যাবে। এমনকি ফলনের দ্রুতবর্ধন ঘটবে। এই সময়ে আমের গুটিতে হপার পোকা আক্রমণ হয় ও অ্যানথ্রাকনোজ নামক ছত্রাকজনিত রোগ দেখা যায়। তাই অপেক্ষাকৃত বড় গুটির জন্য ক্লোরোপাইরিফস বা সাইপারমেথ্রিন ও ছোট আমের গুটির জন্য ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক এবং কার্বন ডাইজিন গ্রপের ছত্রাকনাশক ব্যবহার করার পরামর্শ দেন এই আম গবেষক।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, জেলাজুড়ে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টির পানি রেকর্ড করা হয়েছে। আমের পাশাপাশি এই বৃষ্টির পানি ধানের জন্যেও উপকারী। বৃষ্টির পাশাপাশি হওয়া ঝড়ো হওয়াতে কৃষিপন্যের তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। উল্লেখ্য, এবছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হয়েছে। প্রায় ৫৫-৬০ লাখ গাছে চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগ জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। গতবছর জেলায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে আড়াই লাখ মেট্রিক টন এবং তার আগের বছর ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে ২ লক্ষ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris