শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অচেনা শিশুকে নাক ফুল দিলেন পরীমণি

Paris
Update : রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০২২

এফএনএস : মা হচ্ছেন পরীমণি, এটা সবারই জানা। অন্যদিকে, কাকতালীয়ভাবে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাওয়ার আগে ‘মা’ নামের ছবিও করছেন এই নায়িকা। যে সিনেমার শুটিংয়ে বাস্তবেই জন্ম নিলো অন্যরকম এক মায়ের গল্প। শুটিংস্পটে ঘটে যাওয়া অতুলনীয় সে ঘটনা যার বয়ান এসেছে ‘মা’ চলচ্চিত্রের নির্মাতা অরণ্য আনোয়ারের মারফতে। গত ১০ মার্চ দুপুরে চলছিল ছবিটির শেষ দিনের শুটিং। যেখানে ৭ মাসের এক শিশুর মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন পরীমণি। শুটিংয়ের শেষদিন বিদায়বেলায় তার হাতেই পরী তুলে দিলেন তার জীবনের চিরস্মরণীয় চিহ্ন- নাকফুল।

বিষয়টি নিয়ে অরণ্য আনোয়ার বলেন, ‘‘ওইদিন দুপুর তিনটার দিকে পরীমণির শুটিং প্যাকআপ করে আমি টিমের সাথে খেতে বসলাম। এ সময় কে একজন বললো- পরী আপু আপনাকে ডাকছেন। সেটের মধ্যে একটা রুমে পরী তখন রাজের সাথে ঢাকায় ফিরে যাবার আয়োজনে ব্যস্ত। আমাকে দেখে বললো, ‘ভাইয়া, আমার সন্তানের চরিত্রে অভিনয় করা শিশুটাকে একটা কোনও ভালো গিফট করা উচিত।’ ওর কথা শেষ হওয়ার আগেই আমি উত্তর দিলাম, ‘ওটা নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবে না। আমি ব্যবস্থা করেছি।’ বলেই চলে আসলাম।’’

অরণ্য আনোয়ার আরও বলেন, ‘‘আমি পেশাদার মানুষ- আমার প্রোডাকশন আগেই শিশুটির সম্মানী বাবদ একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের খাম ওর মায়ের হাতে তুলে দিয়েছে। সেটাকেই আমি যথেষ্ট বলে মনে করি। খাওয়া শেষে উঠোনে শেষ দৃশ্যের আয়োজন করছি, এ সময় আবার ঘরের ভেতর থেকে পরীর ডাক আসলো। আমি ব্যস্ত। তবুও ভাবলাম ওকে বিদায়টা দিয়ে আসি। ঘরে ঢুকতেই দেখলাম রাজ আর পরীর হাতে একটা সোনার রিং জাতীয় কোন কিছুর একটা ছোট বাক্স। পাশে বসা সেই শিশুটির মা। পরী বললো, ‘ভাইয়া আমার বিয়ের সময় রাজের উপহার দেওয়া দুটো নাকফুলের একটা হচ্ছে এটা।

আমি বাবুটাকে আপনার হাত দিয়ে এই নাকফুল উপহার দিতে চাই। আমি হতভম্ব। কী বলে এই মেয়ে?’’ পরের ঘটনা প্রসঙ্গে এ নির্মাতা আরও যোগ করে বললেন, ‘‘পরী বললো, গত কটা দিন বাচ্চাটার সাথে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে ওর প্রতি তার অনেক মায়া জমে গেছে। এমনটা শুনে ও দেখে আমি আবেগাপ্লুত হলাম। শ্রদ্ধায় নত হলাম পরীর কাছে। বললাম, ‘তুমি সত্যিই একটা পাগল। আসো তাহলে উপহার দেওয়ার ছবিটা আমরা তুলে রাখি’। পাশ থেকে রাজ বললো, ‘নীরব ভালোবাসাটা নীরবই থাকুক, ভাই। ছবি তোলার দরকার নাই। রাজের এই মন্তব্যটাও আমাকে মুগ্ধ করেছে।’’

গত কয়েকদিন ‘মা’ ছবির দৃশ্যধারণ হয়েছে গাজীপুরে। ১০ মার্চ শেষ হয়েছে এর কাজ। স্থানীয় এক অটোচালকের ছেলে পরীর সন্তানের ভূমিকায় অভিনয় করেছে। নাকফুল ঘটনা প্রসঙ্গে পরীমণিবলেন, ‘‘আমার বিয়ের সময় রাজ দুটো সোনার নাকফুল দিয়েছিলো। একটা আমি বিয়েতে পরেছি। বাকিটা তোলা ছিলো। তো মা সিনেমার শুটিংয়ের সময় দেখলাম ক্যারেক্টারের সঙ্গে ঐ নাকফুলটা ভালোই যায়। তাই সেটি পরে পুরো শুটিং করলাম। আর শুটিং শেষে সেই নাকফুলটা খুলে বাচ্চাটার মায়ের হাতে দিলাম। যেন বাচ্চাটা বড় হয়ে এই স্মৃতিটুকু মনে রাখে। নাকফুলটা দেওয়ার পর বাচ্চাটার মা আমাকে একটা প্রমিজ করেছে।

ওর মা বললো, ‘আমার ছেলের বিয়ের সময় বৌমাকে এই নাকফুলটা দেবো।’ শুধু এটুকু ভাবুন, সেই পর্যন্ত রাজের দেওয়া আমার নাকফুলটা কতোটা যত্নে থাকবে! এটাই তো জীবনের বড় আনন্দ।’’ একটি মর্মান্তিক সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সিনেমাটির চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন অরণ্য আনোয়ার নিজেই। তিনি জানান, ১৯৭১ সালে মৃত ঘোষিত সাত মাস বয়সী এক সন্তানকে নিয়ে তার অসহায় মায়ের আবেগের গল্পই উঠে আসবে এতে। আর সেই মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই সময়ের সেরা চিত্রনায়িকা পরীমণি।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris