মঙ্গলবার

২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালো বীজের অভাবে কাক্সিক্ষত হারে বাড়ছে না ফসল উৎপাদন

Paris
Update : শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১

এফএনএস : ভালো ফসলের জন্য ভালো বীজ জরুরি। কিন্তু এখনো বীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন হতে পারছে না দেশ। বর্তমানে মোট চাহিদার ১১ শতাংশের মতো বীজ সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) সরবরাহ করছে। অথচ সরকারিভাবে বীজ উৎপাদন বাড়লে কম দামে ভালো বীজ পেলে কৃষক লাভবান হতো। কিন্তু মানসম্পন্ন বীজ কিনতে পেরে অনেক কৃষক নিজেই প্রথাগত পদ্ধতিতে বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিক্রি করছে। তাদের উৎপাদিত ফসল থেকেই বীজ তৈরি করে তারা তা বিক্রি করছে। আর ওসব বীজে কখনো ভালো ফসল হলেও, কখনো কৃষকের একেবারে মাথায় হাত পড়ছে। কৃষি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ভালো বীজের অভাবে দেশে কাক্সিক্ষত হারে বাড়ছে না ফসল উৎপাদন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফসলের বীজের মান ঠিক না থাকায় একদিকে যেমন ফলন কম হচ্ছে, অন্যদিকে বদলে যাচ্ছে ফসলের জাতও। আর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক। প্রতি বছর দেশে বিভিন্ন ফসলের মোট ১৩ লাখ টন বীজের চাহিদা রয়েছে। অথচ মানসম্পন্ন বীজের জোগান দেয়ার দায়িত্বে থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) দেড় লাখ টনেরও কম বীজ সরবরাহ করতে পারছে। আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বীজের একটি অংশ সরবরাহ করলেও প্রান্তিক কৃষকদের প্রথাগত পদ্ধতিতে সংরক্ষিত বীজ থেকেই চাহিদার বড় অংশ মিটছে।

বিএডিসি বিগত ২০১০-১১ অর্থবছরে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫ টন বীজ উৎপাদন করেছিল। ১১ বছর পর গত ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে মাত্র ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫০২ টনে দাঁড়িয়েছে। ১১ বছরে সরকারি ওই প্রতিষ্ঠানটির বীজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধি মাত্র ৩.৭৮ শতাংশ। ফলে বাজারে মানসম্পন্ন বীজের চাহিদার শূন্যতা পূরণে গড়ে উঠেছে অসংখ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ওসব প্রতিষ্ঠান কিছু বীজ দেশে উৎপাদন করছে, আর কিছু আমদানি করা হচ্ছে। তবে চাহিদার প্রায় ৩৮ শতাংশ বীজই কৃষকের ঘর থেকে আসছে। বীজের মান বজায় রাখতে সরকারি উদ্যোগ নেই। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই ওসব বীজে কাক্সিক্ষত ফসল হচ্ছে না। তাতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

সূত্র জানায়, দেশে ধান বীজের সবচেয়ে বেশি চাহিদা। সেজন্যই বিএডিসি ধানের বীজ উৎপাদনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়। তবে বোরো মৌসুমে ১৮ হাজার টন বীজের চাহিদা থাকলেও বিএডিসি জোগান দেয় ১৩শ থেকে ১৪শ টন বীজ। বাকিটা বেসরকারি খাত থেকে আসে। তাছাড়া বোরো ধানের বীজের ২১৮টি নিবন্ধিত জাতের ২০৩টিই বেসরকারি খাত থেকে আসছে। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেখানে বছরে ১ হাজার টন সবজি বীজ উৎপাদন করছে, সেখানে বিএডিসি মাত্র ১১৫ টনের মতো উৎপাদন করছে। বেসরকারি খাত থেকেই উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড বীজের ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ আসছে। এ বিষয়ে বিএডিসির সদস্য পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিএডিসি ৪৬ শতাংশ জনবল সঙ্কট নিয়ে চলছে। তার পরও সর্বোচ্চ সক্ষমতা ব্যবহার করে বীজ উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এবং উৎপাদন বাড়ছেও।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris