মঙ্গলবার

২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চারঘাটে এক মাস পরেও ধান সংগ্রহ শুরু হয়নি!

Paris
Update : মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১

চারঘাট প্রতিনিধি : সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গত ৭ নভেম্বর থেকে ধান সংগ্রহ করার নির্দেশনা থাকলেও এক মাস পরেও ধান সংগ্রহ শুরু হয়নি চারঘাটে। এখন পর্যন্ত তালিকা প্রস্তুত না হওয়ায় ধান সংগ্রহ শুরু করতে পারেনি উপজেলা বিভাগ। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর চারঘাট উপজেলায় আমন ধানের আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের চেয়ে ১ হাজার ২০০ হেক্টর বেশি।

কিন্তু ধান উৎপাদন বাড়লেও সরকারিভাবে কাঙ্ক্ষিত ধান কিনছে না উপজেলা খাদ্য গুদাম। ধানের দামও বাজার মূল্যের চেয়ে কম। এতে কৃষকরা ধান উৎপাদন করেও ক্ষতির আশংকা করছেন। উপজেলা খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা যায়, এবার সরকারিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে ২৭ টাকা কেজি ও ১ হাজার ৮০ টাকা মণ দরে ২৮৩ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ পাইকারি ব্যবসায়ীরা ৩০ টাকা (১২০০ টাকা) মণ দরে ধান বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, গতবারের চেয়ে এবার ধানের উৎপাদন অনেক বেড়েছে, কিন্তু ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা কমেছে। সারের দাম ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে ধানের উৎপাদন খরচও বেড়েছে। অথচ বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে ধান কিনছে খাদ্য বিভাগ। একমাস আগে ধান কেনা শুরু করার কথা থাকলেও এখনো তালিকাই প্রস্তুত হয়নি। এ অবস্থায় কৃষকরা ধান বিক্রি করে লোকসানের আশংকা করছেন।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাওথা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, ৭ নভেম্বর থেকে কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করার কথা থাকলেও কয়েকবার খাদ্যগুদামে গিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে। খাদ্য বিভাগের কাছে ধান বিক্রি করতে নানা শর্ত মানতে হয় কৃষকের। এ ক্ষেত্রে রয়েছে নানা বিড়ম্বনা। সেখানে শর্ত ছাড়াই প্রতিমণ ধান বাজারে বিক্রি করা যায় আরও বেশি দামে। তাই কৃষকের দিকে তাকিয়ে ধানের দাম আরও বাড়ানোর পাশাপাশি শর্ত শিথিল করে ধান সংগ্রহের দাবি করেন তিনি।

উপজেলার নিমপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের জানান, এবার আমনের ভালো ফলন হয়েছে। এতে চাষিরা খুবই খুশি। সার, কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় প্রতিমণ ধানের পেছনে খরচ পড়ে ১ হাজার ৩০০ টাকা। কিন্তু বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি করতে গেলে দাম পাওয়া যায় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। এতে লোকসানের মুখে পড়তে হয় কৃষককে। খাদ্য গুদামও ধান কিনছেনা। কেনার লক্ষ্যমাত্রাও কমে গেছে। এ অবস্থায় কাঙ্খিত দাম না পেলেও পাইকারি বাজারে ধান বিক্রি করছি।

এদিকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মলিউজ্জান সজীব বলেন, তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় ধান সংগ্রহ শুরু করতে দেরি হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে তালিকা হাতে পেলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ধান সংগ্রহ শুরু করা হবে। কৃষি অফিসের তথ্যের ভিত্তিতে ধান ও চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় ভাবে নির্ধারণ হয়। এজন্য দাম কিংবা কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে উপজেলা খাদ্য বিভাগের করণীয় কিছু থাকেনা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার বলেন, এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। গুদামে ১ হাজার ৮০ টাকা মণ হলেও বাজার ধান বিক্রি হচ্ছে ১২শ টাকা মণ। কৃষকের তালিকা প্রস্তুত করা হয়ে গেছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris