শনিবার

২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
তীব্র তাপদাহে রাসিকের উদ্যোগে ১০ স্থানে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প নওগাঁয় ১১০ মেট্রিক টন ভূট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে বাঘা উপজেলায় আ.লীগের প্রার্থী নির্ধারণ! বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী গরমের জন্য সরকারকে দায়ী করলেন রিজভী আপাতত গরমেই খেলবে সাবিনা-সানজিদারা ১০ কোটি টাকা অনিয়ম পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক লালমনিরহাটেও যোগ দেননি কেএনএফ প্রধান নাথানের স্ত্রী বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তীব্র তাপদাহে নগরবাসীর পাশে থাকতে রাসিক যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে

জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখী হচ্ছেন ডা. মুরাদ ও নায়িকা মাহি

Paris
Update : বুধবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২১

এফএনএস : সদ্য পদত্যাগী তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে নায়িকা মাহিয়া মাহির ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার জেরে প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার হারুন অর রশিদ এ কথা জানান। ডা. মুরাদ হাসান গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহারের কথা বলেছেন। এধরনের কাজে ব্যবহার হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি অন্য কোনো বাহিনীর কথা বলবো না। যেহেতু তিনি (মুরাদ হাসান) ডিবির কথা উল্লেখ করেছেন।

প্রয়োজনে তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো। নায়ক ইমনের মোবাইল থেকে অডিওটি ছড়িয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। আমরা এখনো তদন্ত করছি এটা। আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ অভিযোগ দিলে নায়ক ইমন ও মাহিয়া মাহিকে একসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না জানতে চাইলে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ যদি অভিযোগ দায়ের করে এবং আমাদের ডিবি সাইবার ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ আসে তাহলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।

কোনো কিছু ভাইরাল হলে আমাদের ডিবির সাইবার ইউনিট দেখভাল করে ও তদন্ত করে। মাহি যদি দেশে আসে তাকেও আপনারা জিজ্ঞাসাবাদ করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমরা মাহিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবো। সেদিন ফোনালাপের পরে ধর্ষণ সংঘটিত হয়েছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে এখনো আসেনি। আমরা প্রয়োজনে সবার সঙ্গেই কথা বলবো। নায়ক ইমনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রয়েছে তিনি নায়িকাদের বিভিন্নভাবে ব্যবহার করেন, প্রতিমন্ত্রীর কাছেও তিনি নিয়ে যাওয়ার কথা বলছিলেন, আপনারা ইমনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ পেলেই বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো।

সম্প্রতি তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান এবং তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে অসৌজন্যমূলক কথা বলেন। এছাড়া এর কিছু পরই প্রতিমন্ত্রী মুরাদের একটি কথোপকথন ফাঁস হয়, যেখানে তিনি অশ্লীল ভাষায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য বলেন। ফোনে চিত্রনায়ক ইমনকে তিনি বলেন, ঘাড় ধরে যেন মাহিকে তার কাছে নিয়ে যান। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে ডা. মুরাদের শাস্তির দাবি ওঠে। এরপর গত সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ডা. মুরাদ হাসানের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছিলেন, সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে এবং তিনি তাকে মঙ্গলবারের মধ্যে পদত্যাগ করতে বলেছেন।

রাত ৮টায় তাকে বার্তাটি পৌঁছে দেন ওবায়দুল কাদের। এদিকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে নিজ মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন ডা. মুরাদ হাসান। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সাড়ে ১২টায় পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠান।

এদিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সদ্য পদত্যাগ করা প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার জেরে চলচ্চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহিকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বর্তমানে স্বামী রাকিব সরকারের সাথে মক্কায় পবিত্র ওমরাহ পালন করতে গেছেন মাহি। সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার পর মাহিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হবে। ওই ঘটনায় নায়ক ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ডিবি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জিজ্ঞাসাবাদে ইমনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ ঘটনায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গেও কথা বলবে পুলিশ।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার জেরে নায়িকা মাহিয়া মাহিকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তিনি বিদেশে থাকায় তাকে এ বিষয়ে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। এছাড়া, মাহি দেশে না থাকায় অভিনেতা ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ বিষয়ে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি। সোমবার ৬ ডিসেম্বর রাতে ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায় ডিবি। প্রায় ৩০ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইমন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মিন্টুরোডে অবস্থিত ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান। সোমবার ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের সঙ্গে ফোন রেকর্ড ফাঁস নিয়ে মুখ খুলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। ‘পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন’ বলে দাবি করেছেন এই নায়িকা।

মক্কা থেকে এক ভিডিও বার্তায় মাহি বলেন, ‘আমার আসলে সেদিন বলার কোনো ভাষা ছিল না। সেজন্য আমি প্রতিবাদ করিনি। আমি নিজের মতো আমার মনে হয়েছে, আমার পাশ কাটিয়ে যাওয়া উচিৎ। আমি চুপ থেকেছি, পাশ কাটিয়ে গিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘অডিওটা নিয়ে সেদিনও ভীষণ বিব্রত ছিলাম। নিজের আত্মসম্মানবোধ কতটুকু আঘাত লেগেছে সেটা শুধু আমি জানি, আমার আল্লাহ জানে। আজকেও আমি ভীষণভাবে বিব্রত। আরও একবার নিজের কাছে নিজে তো ছোট হয়েছি। দেশবাসীর কাছে আরও একবার ছোট হলাম। আপনারা নিজে থেকে চিন্তা করে দেখবেন, এই ভাষার প্রত্যুত্তর আমার আসলে কী দেওয়া উচিত ছিল।’

ডা. মুরাদের পদত্যাগ : বিতর্কিত ও অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন ডা. মুরাদ হাসান। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পদত্যাগপত্র জমা দিলে পরে সেখান থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পদত্যাগপত্রের সার-সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর তা কার্যকর হবে।

এর আগে বিকেল তিনটার দিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ সচিবের একান্ত সচিবের কাছে জমা দেন। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর প্রতিমন্ত্রী পদে মুরাদ হাসানের অব্যাহতির বিষয়টি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন মুরাদ হাসানের পক্ষে পদত্যাগপত্রটি জমা দেন।

সচিবের পক্ষে তার একান্ত সচিব মাহমুদ ইবনে কাসেম পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করেন। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে পাঠান ডা. মুরাদ। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন ডা. মুরাদ হাসান। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেওয়ায় তাকে মঙ্গলবারের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পর পদত্যাগ করলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো এ পদত্যাগপত্রে বলা হয়, আমাকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। আমি অদ্য ৭ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক। এমতাবস্থায় আপনার নিকট বিনীত নিবেদন এই যে, আমাকে অদ্য ৭ ডিসেম্বর তারিখ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যহতি প্রদানের লক্ষ্যে পদত্যাগ পত্রটি গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি। সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে অসৌজন্যমূলক কথা বলেন ডা. মুরাদ হাসান।

এ ছাড়া এরপরই মুরাদের একটি কথোপকথন ফাঁস হয়, যেখানে তিনি অশ্লীল ভাষায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য বলেন। ফোনে চিত্রনায়ক ইমনকে তিনি বলেন, ঘাড় ধরে যেন মাহিকে তার কাছে নিয়ে যান। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে ডা. মুরাদের শাস্তির দাবি ওঠে।
হাইকোর্টের নির্দেশ : তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সব আপত্তিকর বক্তব্য সম্বলিত ভিডিও-অডিও অনলাইন থেকে সরাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে মুরাদ হাসানের অশ্লীল অডিও-ভিডিও অপসারণ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন।

এসময় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ভিডিও-অডিও সরাতে মৌখিক আদেশ দেন। শুনানিতে সুমন বলেন, মাই লর্ড, আমি কারো বিরুদ্ধে আসিনি। আমি এসেছি মুরাদ হাসানের অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তার অডিও-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অপসারণের নির্দেশনা চাইতে। সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থেকে গেলে তা হবে সবার জন্য বিব্রতকর। তিনি আরও বলেন, জরুরিভিত্তিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর অশ্লীল অডিও-ভিডিওগুলো অপসারণ করা প্রয়োজন। অপসারণ না করলে অল্প বয়সের ছেলেমেয়েরা এ ধরনের গালাগালি ও অশ্লীল কথাবার্তা শুনে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বে।

তাই দ্রুত এসব অশ্লীল অডিও-ভিডিও সরাতে বিটিআরসির প্রতি নির্দেশনা প্রার্থনা করছি। এরপর আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারকে বলেন, বিটিআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে ওই অডিও-ভিডিওগুলো সরানোর পদক্ষেপ নিতে এবং এ বিষয়ে অগ্রগতি বুধবার আদালতকে জানাতে। সম্প্রতি তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান এবং তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে অসৌজন্যমূলক কথা বলেন।

এর কিছু পরেই প্রতিমন্ত্রী মুরাদের একটি কথোপকথন ফাঁস হয়, যেখানে তিনি অশ্লীল ভাষায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য বলেন। নিজের অনৈতিক ইচ্ছার কথা জানান। এমনকি চিত্রনায়িকাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেন। এদিকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন ডা. মুরাদ হাসান। দুপুরে সাড়ে ১২টায় পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠান প্রতিমন্ত্রী।

তথ্যমন্ত্রী : গত তিন মাস ধরে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, আমার কাছে তাকে গত ৩ মাস ধরে একটু পরিবর্তন মনে হচ্ছিল। বিভিন্ন ঘটনা এবং কর্মকাণ্ডে সেটি আমার মনে হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর নিজ দপ্তরে সাংবাদিক এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ডা. মুরাদ হাসান আমাকে সব সময় সহযোগিতা করেছেন। গত কয়েক মাস ধরে তার মধ্যে আমি কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করছি এবং তার কিছু বক্তব্য ও ঘটনা আসলে সরকার এবং দলকে বিব্রত করেছে। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করার কথা বলেছেন।

সে অনুযায়ী ডা. মুরাদের সই করা পদত্যাগপত্র ইতোমধ্যেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে নিয়ে গেছেন তার জনসংযোগ কর্মকর্তা। এ বিষয়টি আসলেই দুঃখজনক। তথ্যমন্ত্রী বলেন, মুরাদ হাসান আমাকে সব সময় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই এবং তার সুস্থতা এবং তার মঙ্গল কামনা করি। তার ভেতরে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন কী কী পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি আগে যে রকম ছিলেন তার থেকে একটু ভিন্ন মনে হয়েছে এটি আমার ব্যক্তিগত মতামত। এটি আমি সবিস্তারে বলতে পারবো না। কারণ এটি অনুভবের বিষয়। সেটিতো আমি প্রকাশ করতে পারবো না। কোনো অস্থিরতা দেখতে পাচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি তো ডাক্তার না, তা হলে বলতে পারতাম।

তার কর্মকাণ্ডে দল বিব্রত তিন মাস থেকে তিনি বিভিন্ন বিতর্কিত বক্তব্য দিচ্ছিলেন তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হলো না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখুন তিনি বেশ কিছু বক্তব্য দিয়েছেন যেগুলো দলের সঙ্গে বা সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করেই দিয়েছেন। যেগুলোর কারণে আমাদেরও প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সাস্প্রতিক সময়ে কিছু কর্মকাণ্ড ও বক্তব্য নিয়ে সরকার ও দল বিব্রত হয়েছে। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন। ডা. মুরাদ হাসান তো বলেছেন প্রাধনমন্ত্রীকে জানিয়ে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমার জানা নেই প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন কিনা। আমি জানি না প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেছেন। যে বক্তব্য দল ও সরকার বিব্রত হয় সে ধরনের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী কখনও কারো জন্য এলাও করবেন না।

বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত : তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে আগামী কার্যনির্বাহী সভায় সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। হানিফ বলেন, মুরাদ হাসানকে এরইমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে দলের আগামী কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।

এর আগে, গত সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার বাসভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, সেদিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ডা. মুরাদের বিষয়ে কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবারের মধ্যে ডা. মুরাদকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে বলেছেন। তিনি রাত ৮টায় প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে বার্তাটি পৌঁছে দেন। সম্প্রতি তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে অসৌজন্যমূলক কথা বলেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris