সোমবার

১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চারঘাটে ধানক্ষেতে ঘাস ফড়িংয়ের আক্রমণ

Paris
Update : রবিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২১

চারঘাট প্রতিনিধি : ‘কারেন্ট পোকা’ নামে পরিচিত বাদামি ঘাসফড়িংয়ের আক্রমণে রাজশাহীর চারঘাট প্রায় ২০০ হেক্টর জমির আমন ধানগাছ শুকিয়ে খড় হয়ে গেছে। পাশাপাশি চলছে ইঁদুরের আক্রমণ। এতে বিবর্ণ হচ্ছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালি ধান। কৃষকেরা বলছেন, কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। পোকার আক্রমণে একের পর এক ধানখেত ধ্বংস হচ্ছে। তাঁরা কী করবেন ভেবে কূল পাচ্ছেন না।
চারঘাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুয়ায়ী, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার হেক্টর।

আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। এবার উপজেলা নানা জাতের আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি ধান-৩৩, বিআর-২২, বিআর-২৩, ব্রিধান-৪৯, ব্রি ধান-৫১, ব্রি ধান-৫২, ব্রিধান-৮৭ ছাড়াও নানা ধরনের উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষ হয়েছে। কিন্তু কৃষকেরা ঘাসফড়িং ও ইঁদুরের আক্রমণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।

উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, তিনি ছয় বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করেছেন। তিন বিঘা জমিতে আগাম ধান ‘ধানি গোল’ এবং বাকি পাঁচ বিঘা জমিতে ‘সুমন স্বর্ণা’ জাতের ধান চাষ করেছেন। কিন্তু হঠাৎ ধানখেতে পোকার আক্রমণে বিপাকে পড়েছেন। কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
উপজেলার রাওথা এলাকার কৃষক শরীফুল ইসলাম বলেন, তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে সুমন স্বর্ণা ও ধানি গোল জাতের ধানের চাষ করেছেন। এবার ফসলের সম্ভাবনা ভালোই ছিল। কিন্তু খেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার ২০ শতাংশ জমির ধান ফড়িং পোকায় খেয়ে ফেলেছে। ইঁদুরও আমার ধান কেটে ফেলছে। আশা করেছিলাম, বিঘায় ২৮-৩০ মণ ধান পাব। কিন্তু এখন দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি।’

উপজেলার প্রায় সবগুলো ইউনিয়নে কম বেশি কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। কৃষকেরা জানান, পোকার আক্রমণ ঠেকাতে কীটনাশক ছিটিয়ে ও পুরোপুরি দমন করা যাচ্ছে না। প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দুই বার কীটনাশক ছিটাচ্ছেন তাঁরা। খেতের ওপর এত পোকার আক্রমণে ধানের আশানুরূপ ফলন না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান, এবার ধানখেত দেখে কৃষকের পাশাপাশি তাঁরাও খুব খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ কারেন্ট পোকার আক্রমণে বেড়ে গেছে। এমন বাস্তবতায় কৃষকদের চিন্তিত না হয়ে কীটনাশক দিয়ে ধানখেতের গোঁড়া ও ওপরে স্প্রে করতে বলা হয়েছে।

কীটনাশক ছিটালে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দূর হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মদ বলেন, ধানখেতে বিভিন্ন পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচানোর লক্ষ্যে কৃষকদের মাঠপর্যায়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘কারেন্ট পোকার আক্রমণ দূর করতে করণীয় সম্পর্কে লিফলেট আকারে আমরা ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের দিয়ে বিতরণ করছি। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে কারেন্ট পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়ে ভালো ফলন পাবেন কৃষকেরা।’


আরোও অন্যান্য খবর
Paris