শনিবার

২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
তীব্র তাপদাহে রাসিকের উদ্যোগে ১০ স্থানে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প নওগাঁয় ১১০ মেট্রিক টন ভূট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে বাঘা উপজেলায় আ.লীগের প্রার্থী নির্ধারণ! বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী গরমের জন্য সরকারকে দায়ী করলেন রিজভী আপাতত গরমেই খেলবে সাবিনা-সানজিদারা ১০ কোটি টাকা অনিয়ম পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক লালমনিরহাটেও যোগ দেননি কেএনএফ প্রধান নাথানের স্ত্রী বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তীব্র তাপদাহে নগরবাসীর পাশে থাকতে রাসিক যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে

নগদ : মালিকানা নেবে, কিন্তু দায় নেবে না ডাক অধিদপ্তর

Paris
Update : শুক্রবার, ৮ অক্টোবর, ২০২১

এফএনএস : মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের মালিকানায় ডাক অধিদপ্তরকে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ফলে ডাক অধিদপ্তর নগদের ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক হবে। বাকি ৪৯ শতাংশ শেয়ার থাকবে নগদ লিমিটেডের হাতে। তবে নগদের কোন ঋণের দায়ভার নেবে না ডাক অধিদপ্তর। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ মঙ্গলবার নগদের মালিকানা নির্ধারণের বিষয়ে সভা করেছে। এই সভায় ডাক অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরের (রেজেসকো) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আগের মতো এই সভাতেও সিদ্ধান্ত হয় যে নগদ পরিচালনায় নতুন করে ‘নগদ বাংলাদেশ পিএলসি’ নামে পৃথক কোম্পানি গঠন করা হবে।

এর মালিকানার ৫১ শতাংশ আসবে ডাক অধিদপ্তরের অধীনে আর ৪৯ শতাংশ বেসরকারি উদ্যোক্তাদের হাতে থাকবে। এজন্য আলাদা যে কোম্পানি হবে, সেটির পরিচালনা পর্ষদ হবে ৯ সদস্যের। এর মধ্যে চেয়ারম্যানসহ ৫ জন হবেন সরকারের প্রতিনিধি, বাকি ৪ জন বেসরকারি খাতের। সভায় জানানো হয়, নগদ বাংলাদেশ পিএলসি গঠন বিষয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছিল। তবে এখনো সবাই মতামত পাঠায়নি। তাই পরবর্তী সভায় এ নিয়ে আবার আলোচনা হবে। সভায় ডাক অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা নিতে তারা অর্থ দেবে না। নগদ এতদিন ডাক অধিদপ্তরের যে ব্র্যান্ড ব্যবহার করেছে, তার দাম প্রতিষ্ঠানটির ৫১ শতাংশের সমপরিমাণ বলে গণ্য হবে।

নগদের যে ব্যাংকঋণ রয়েছে ও বন্ড ছেড়ে টাকা তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার কোনো দায়ও ডাক অধিদপ্তর নেবে না। এদিকে নগদের ঋণের পরিমাণ ঠিক কত – সেটা বলতে রাজি নয় নগদের কর্তৃপক্ষ।
নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদের ভাষ্য, আমরা লিমিটেড কোম্পানি। একটা প্রাইভেট কোম্পানি যেভাবে লোন নেয়, সেভাবে লোন নিয়েছে এবং তা পরিশোধ হচ্ছে। এটা নিয়মিত বিষয় হলেও এনিয়ে গুজব ছাড়ানো হচ্ছে।

তিনি উল্লেখ করেন, এনিয়ে কোম্পানি গঠনে জটিলতার কিছু নেই। তবে নগদ নিয়ে সম্প্রতি বেশ ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। জানা যায়, আড়াই বছরে দফায় দফায় একাধিকবার মালিকানায় পরিবর্তন হয়েছে নগদের। নগদের মালিকানা রদবদলের নামে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। শুধু তাই নয়, এর টাকার বেশি অংশ পাচারও হয়েছে। পাচারকারীরা তা বিদেশেও বিনিয়োগ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বারবার মালিকানা পরিবর্তনের নামে নগদ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একপ্রকার কৌশল বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, এটা নগদ নয়, যেন টাকশাল।

নগদকে টাকশাল বানিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে শত কোটি কোটি টাকা। এখন নগদের পরিচালক ৯ জন, যারা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে নিবন্ধিত বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধি। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও সিঙ্গাপুরের একজন করে নাগরিক রয়েছেন। অন্য ছয়জন বাংলাদেশি। সচিবের আগে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিনও পৃথক পৃথক বার্তায় ‘নগদ’র মালিকানা নিয়ে অপপ্রচারকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘নগদ’ ডাক বিভাগের সেবা, এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।

কোম্পানী আইনে প্রাকটিস করেন, এমন একজন আইনজীবী ফাউজিয়া করিম মনে করেন, অর্থ লেনদেনের ব্যাপারে সরকারি বিভাগের কোম্পানি গঠনের মত গুরুত্ব ইস্যুতে সংসদে উত্থাপন করা উচিত ছিল। এদিকে ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, এখন প্রচলিত আইন সংশোধনের মাধ্যমে কোম্পানি গঠন করা যাবে নাকি নতুন আইন করতে হবে-এ নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হবে। তিনি দাবি করেছেন, ছয় মাসের মধ্যেই নগদের মালিকানা নিয়ে কোম্পানি গঠনের চেষ্টা তারা করছেন।

অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, নগদের মালিকানা ডাক অধিদপ্তরের হাতে যাওয়ার পর লাইসেন্স দেওয়া হবে। তবে এজন্য নগদকে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বা এমএফএস হিসেবে অনুমোদন পেতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া কিছু শর্ত পালন করতে হবে। ডাক অধিদপ্তরকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া শর্তের মধ্যে অন্যতম হলো, নগদ গ্রাহকের জমা টাকার বিপরীতে যে ঋণ নিয়েছে, তা সমন্বয় করতে হবে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, গ্রাহকের টাকার বিপরীতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়েছে। এর একটা অংশ শোধ করার পর ঋণের পরিমাণ এখন আছে ৩২৮ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডাক অধিদপ্তরের সাথে একটি চুক্তি করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অনুমতি নিয়েছিল ২০১৭ সালে। সেই চুক্তি অনুযায়ী বেসরকারি প্রতিষ্ঠাটির সাথে ডাক বিভাগের মুনাফা ভাগাভাগি হয়েছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris