মঙ্গলবার

৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ই-কমার্সে আর্থিক সচ্ছলতা পেয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছে নারীরা

Paris
Update : মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

এফএনএস : ই-কমার্সে আর্থিক সচ্ছলতা পেয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছে নারীরা। সেজন্য ই-কমার্সে নারী উদ্যোক্তা বাড়ছে। করোনা মহামারিতে নারীরা ঘরে বসে নিজে যেমন উপার্জনের উপায় খুঁজে নিয়েছে, তেমনি অনেক পুরুষও নিজের কাজের পাশাপাশি ঘরে স্ত্রী, কন্যা কিংবা বোনকে অনলাইন ব্যবসায় সহযোগিতা করছে। ফলে একজন নারী নিজে উদ্যোক্তা হয়ে অন্যের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করছে। বর্তমানে পোশাক, শাড়ি-গয়না থেকে শুরু করে খাদ্যসামগ্রী, ঘর সাজানোর পণ্য, শিশু খাদ্য, প্রসাধন সামগ্রীসহ অনেক পণ্যই অনলাইনে কেনাবেচা হচ্ছে। সেজন্যই ই-কমার্সে দিন দিন নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নারী উদ্যোক্তারা বর্তমানে অনলাইনে শুধু পণ্যই নয়, বরং যার যে দক্ষতা রয়েছে তা পুঁজি করেই ব্যবসা শুরু করছে এবং তা রমরমা চলছেও। ই-কমার্সের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তারা গান শেখানোর টিউটোরিয়াল ব্যবসা, নৃত্য, গিটার শেখা, আবৃত্তি, আর্ট, কেয়ার গিভার, স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন বিষয়ে রোজগার করছে। আর ঘরে বসে ব্যবসা করা যাচ্ছে বলে নারীদের জন্য তা অনেকটাই সহজ হয়েছে। সেজন্যই অনলাইনে নারী উদ্যোক্তাদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। পুরো পৃথিবী যেখানে প্রতি ১০০ জনে মাত্র জন উদ্যোক্তা হয়ে ওঠছে, সেখানে বাংলাদেশের মোট উদ্যোক্তার শতকরা প্রায় ৬০ ভাগই নারী।

সূত্র জানায়, পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এখনো এদেশে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য প্রধান সমস্যা। তবে বর্তমানে ওই দৃষ্টিভঙ্গিতে নারীরা অনেক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। কারণ সমাজে এখন একজনের উপার্জনে আর সংসার চলছে না। ফলে নারীদের অর্থ উপার্জন এখন ইতিবাচকভাবেই দেখা হচ্ছে। ৩০ বছর আগের দেশের অর্থনীতি আর ২০২১ সালের অর্থনীতির হিসাব ভিন্ন। পারিবারিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সব ক্ষেত্রেই নারীরা এখন তাদের কাজের দক্ষতার প্রমাণ দিতে সক্ষম হচ্ছে। ঘরের বাইরে ৮/১০ ঘণ্টা সময় দিয়ে কাজ করতে হয় না বলে ই-কমার্সে নারীর পদচারণা বাড়ছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশে নারী এসএমই উদ্যোক্তাদের বাজার সম্ভাবনা ও অর্থায়ন বৃদ্ধি শীর্ষক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী শিল্পোদ্যোক্তাদের বার্ষিক ঋণ চাহিদার ৬০ শতাংশই পূরণ করতে পারছে না। অথচ নারী উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ পাওয়া সহজ করতে জামানত ছাড়াই ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়ার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, বিগত কয়েক বছরে দেশে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ফেসবুকভিত্তিক অনেক পেজেই নানা ধরনের পণ্য বিক্রি হচ্ছে। আর ওসব পণ্য ক্রেতা-বিক্রেতাদের বেশির ভাগই নারী এবং যাদের অনেকে ছাত্রী বা গৃহিণী। মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে নারীরা হয়ে উঠছে প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা।

তাদের ব্যবসায়িক পণ্যের মধ্যে রয়েছে শাড়ি-পোশাক, রূপসজ্জা, গৃহসজ্জা, বিভিন্ন পদের তৈরি খাবার, অফিসের জন্যে দুপুরের খাবার, মিষ্টান্ন পণ্য, বেকারি পণ্য প্রভৃতি সামগ্রী। এদিকে নারী ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের অনলাইন প্ল্যাটফরম উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম বা উই বর্তমানে দেশের ৬৪ জেলার ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের অন্যতম ভরসার প্ল্যাটফরম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনলাইন প্ল্যাটফরমটিতে দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করছে এমন উদ্যোক্তার সংখ্যা ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।

অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা জানান, দেশব্যাপী নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য ছড়িয়ে দিতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নারীবান্ধব বিপণি কেন্দ্র জয়িতা প্রতিষ্ঠা করেছে। দেশে ক্ষুদ্র ব্যবসা ও অনলাইনভিত্তিক ই-কমার্সের যে জয়জয়কার, তার পেছনে জয়িতা কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। এখন দেশের শতকরা ৮০ ভাগ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নারী উদ্যোক্তারা পরিচালনা করছে। ফলে নারীরা আর্থিক সচ্ছলতা পেয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris