শুক্রবার

১০ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৭শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
মান্দা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল রাসিক মেয়রের সাথে গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের সৌজন্য সাক্ষাৎ সিরাজগঞ্জে হেরোইন বহনের দায়ে গোদাগাড়ীর ২ যুবকের যাবজ্জীবন নিজের নামে কোনো প্রকল্প চান না প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী নগরীতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে : মেয়র গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন সোহেল পবায় ছাত্রলীগ নের্তৃবৃন্দের সাথে চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদের মতবিনিময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত তানোরে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন ময়না মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

হাসি ফিরেছে সোনালী আঁশে

Paris
Update : সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আর কে রতন : চলতি মৌসুমে পাটের ভাল ফলনের পাশাপাশি বাজারে উচ্চ মূল্য পাওয়ায় হাসি ফিরেছে রাজশাহীর চাষিদের। শুতে বৃষ্টি কম হওয়ায় পাট জাগ দিতে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল এ অঞ্চরের পাট চাষিদের। বর্তমানে সব বাঁধা কাটিয়ে বেশি দামে পাট বিক্রি করতে পেরে বেশ ভীষণ আনন্দিত চাষিরা। ফলে দীর্ঘ অপেক্ষায় হাসি ফিরেছে সোনালী আঁশে। দেশের উত্তরের কৃষি নির্ভর ও খাদ্য ভান্ডার নামে খ্যাত রাজশাহী জেলা ।

ধান,পান, গম, ভুট্টা, বছরজুড়ে বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি এখানে পাট উৎপাদন হয়। বিগত কয়েক মৌসুম ধরে পাটের ভালো দাম না পাওয়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন এখানকার চাষিরা। তবে চলতি মৌসুমে জেলার হাট-বাজারগুলোতে পাটের দাম ভালো পাচ্ছেন তারা। কৃষকদের মতে, আগের যেকোনো বছরের তুলনায় এবার পাট বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। প্রতি মণ ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলার ৯ টি উপজেলায় ১৪ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে পাটবীজ বপনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল। গত বছর বপন করা হয়েছিলো ১৪ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে। এ বছর উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৫০ বেল। (সাড়ে চার মণে এক বেল)। এবার রাজশাহীর কৃষকরা ও-৯৮৯৭, ও-৭২, জেআরও ৫২৪ জাত ও রবি-১ জাতের পাট বপন করেছিল।

পবার নওহাটা হাটের পাট ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত বছর প্রতি মন পাট বিক্রি হয়েছে ৮০০-১২০০ টাকায়। পাট উঠার শুরুর সময় তা বেড়ে ১৫০০-২০০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এবার বছর শুরুতেও ৩-৪ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতি মন পাট বিক্রি হচ্ছে। এবং বাজারে আগের তুলনায় বর্তমানে চাহিদাও বেশি। কারণ বিশ্ব বাজারে সুতার দাম বেড়েছে, তাই পাটের দাম বেড়েছে। মোহনপুর উপজেলার কুঠিবাড়ী মাসুদ পারভেজ জানান, পূর্বে পাট ওঠার শুরুর দিকে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হলেও চলতি মুওসুমের শুরুতেও ২৫০০ থেকে ৩৪০০ হাজার টাকা প্রতি মন দরে পাট বিক্রি হচ্ছে।

যা এর আগে আমরা কখনই পাইনি। পাটের বেশি মূল্যে বিক্রি করতে পেরে ভিষন আনন্দিত আমরা। দূর্গাপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ এলাকার পাটচাষি আলমঙ্গীর হোসেন জানান, ২ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। এবং বাজারে দামও শুণছি ভাল। এখন বিক্রি করিনি। তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া পাট চাষি আনোয়ার হোসেন জানান, আগে প্রতি বছর ৩-৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করতাম। কিন্তু বাজারে বিক্রি করে ক্ষেতের খরচের টাকা হত না। তাই এ আবাদ বাদ দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন বাজারে মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এ বছর ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি এবং এখন পর্যন্ত বিক্রি করিনি।

তবে কয়েকদিনের মধ্যে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত তানোর উপজেলার গোল্লাপাড়া গ্রামের কৃষক নুর মোহাম্মাদ জানান, বাংলাদেশকে এক সময় বলা হতো সোনালি আঁশের দেশ। সে সময় আমাদের অঞ্চলেও ব্যাপক হারে পাটের চাষাবাদ হত। কিন্তু পরবর্তীতে সঠিক ভাবে রপ্তানি না হওয়ায় এবং দাম কম পাওয়ায় লোকসান গুণতে হত চাষিদের। ফলে সেই ধারাবাহিকতা থেকে ধীরে ধীরে থমকে যায় এবং কৃষক পাট চাষ হতে দিনে দিনে মুখ ফিরিয়ে নিতে থাকে।

তবে কয়েক বছর হতে প্রতিবারও পাট রফতানি অনেক বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা পাটের দামও ভাল পেতে শুরু করেছে। যার জন্য বর্তমানে পাটের দাম নিয়ে সংশয় নেই কৃষকদের। চলতি বছরে বাজারে পাটের মূল্য ভাল পেয়ে খুশি কৃষকরা। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা উম্মে সালমা জানান, জেলার সব উপজেলাতে কম-বেশি পাটের আবাদ হয়েছে। এ অঞ্চলের পাট রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মিল-কারখানায় বিক্রি হয়ে থাকে। পাটের চাষ বেশি এবং মৌসুমের শুরুতে ভালো দাম পেয়েছে চাষিরা। আগামীতে পাট চাষে আরও আগ্রহী হয়ে উঠবেন তারা।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris