শনিবার

২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
তীব্র তাপদাহে রাসিকের উদ্যোগে ১০ স্থানে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প নওগাঁয় ১১০ মেট্রিক টন ভূট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে বাঘা উপজেলায় আ.লীগের প্রার্থী নির্ধারণ! বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী গরমের জন্য সরকারকে দায়ী করলেন রিজভী আপাতত গরমেই খেলবে সাবিনা-সানজিদারা ১০ কোটি টাকা অনিয়ম পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা আটক লালমনিরহাটেও যোগ দেননি কেএনএফ প্রধান নাথানের স্ত্রী বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তীব্র তাপদাহে নগরবাসীর পাশে থাকতে রাসিক যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে

তকদিরে বিশ্বাস ঈমানের অঙ্গ

Paris
Update : শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১

এফএনএস : সেই মহান সত্তার নামে, যার কোনো শরিক নেই। যার আগে কোনো শুরু নেই এবং যার পরে কোনো শেষ নেই। তিনিই আল্লাহ্, এক ও অদ্বিতীয়, তিনি কারো থেকে জন্ম গ্রহণ করেননি, কাউকে জন্মও দেননি।

যার ইচ্ছাই কোনো সৃষ্টির অস্তিত্ব। “হও” বললে হবে, “হও” না বললে কোনো সৃষ্টির অস্তিত্ব সম্পর্কে কেউ কখনো জানবেও না। সে জন্যই মহান আল্লাহই একমাত্র স্থায়ী, অস্তিত্ববান। আর সব কিছুই তাঁর সৃষ্টি এবং অস্থায়ী। তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। সব কিছুই তাঁর আয়ত্তাধীন। সব বিষয়ে জ্ঞান তাঁরই। সব ভেদই তাঁর জ্ঞানাধীন। তিনিই সর্বশক্তিমান এবং হজরত মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রেরিত বান্দা ও রাসুল। তিনি তাঁর সৃষ্টির মাঝে কোনো অসামঞ্জস্যতা রাখেননি।
মহান আল্লাহ্ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, যিনি করেছেন সাত আসমান স্তরে স্তরে বিন্যাস্ত; রহমানের সৃষ্টিতে তুমি কোনো ত্রুটি দেখবে না; ভালোভাবে দেখ; কোনো খুঁত দেখতে পাও কি? । আবার দেখ, কোথাও কোনো ত্রুটি না পেয়ে ফিরে আসবে তোমার চোখ ব্যর্থ ও ক্লান্তভাবে। (-সূরা মূলক আয়াত ৩-৪) ।

কিন্তু মানুষই লোভের কারণে স্রষ্টার সৃষ্টির মাঝে পরিবর্তন সাধন করে ও বিপদ ডেকে আনে। মানুষের লোভ, অস্থিরতা, নিজের যা ভালো লাগে তা প্রাধান্য দেওয়া, স্বার্থপরতা, হিংসা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি যে সব কু-রিপু রয়েছে তার বাস্তবায়ন ঘটাতে গিয়ে মানুষ নিজেকে ভুলে যায়, অন্যের অধিকার ভুলে যায়, বিবেক অন্ধ হয়ে যায়। আর এসবের মূলে রয়েছে নিজকে না চিনে অযাচিত প্রত্যাশা।

মহান আল্লাহ্ তাঁর সব সৃষ্টি ও এর বিন্যাসের মাঝে কোনো চিন্তার অবকাশ রাখেন নি। কোথায় কোন জিনিস কি পরিমাণে দিতে হবে, কাকে কোথায় স্থির করা হবে, কোন গাছ কোন জায়গায়, কোন মানুষ কোথায় জন্মাবে, কোন প্রাণী কোথায় বাস করবে, তার মৃত্যু কীভাবে হবে, এক কথায় সব কিছু মহান আল্লাহ্ কিতাবে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন এবং কোথাও কোনো ত্রুটি নেই।

তিনি পবিত্র কোরআনে বলেছেন, আকাশ পৃথিবীর অধিকার তাঁরই ও গ্রহণ করেন নাই তিনি কোনো সন্তান, তার রাজত্বে কেউ শরিক নেই এবং তিনিই সব কিছু সৃষ্টি করেছেন, করেছেন স্থির প্রত্যেকের পরিণতি প্রকৃতির। (সূরা ফুরকান –আয়াত-২) ।

সেজন্যই মহান আল্লাহ্ সৃষ্টির আদি মানব নবী আদম (আ.) হতে শুরু করে আজ পর্যন্ত যুগে যুগে নবী রাসুলদের প্রেরণ করেছেন তাঁর বান্দাদের প্রতি তাঁর বার্তাবাহক হিসেবে। তাঁরা সকলেই মহান আল্লাহ্র হেদায়াতের বানী নিজ নিজ উম্মতদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। সকল যুগেই কিছু লোক তাঁদের কথায় বিশ্বাস করেছে আবার কিছু লোক অহঙ্কার বশতঃ অস্বীকার করেছে। যারা অস্বীকার করেছে তাদের পরিচয় মহান আল্লাহ্ পবিত্র কোরআনে দিয়েছেন এভাবে, ওরা বধির, বোবা, অন্ধ সুতরাং ফিরবে না। (-সূরা বাকারা, আয়াত-১৮)।

নবী রাসুলদের আগমনের ক্রমধারা যেমন হজরত আদম (আ.) দ্বারা শুরু হয়ে শেষ নবী, সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মহামানব, আল্লাহ্র হাবীব হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের সুভাগমন ও ওফাতের মাধ্যমে শেষ হয়েছে তেমনি পূর্ববর্তী নবীদের (আ.) কারো কারো পর সহিফা আকারে, কারো কারো ওপর কিতাব আকারে হেদায়েতের বানী মহান আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের কাছে পাঠিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় শেষ নাজিলকৃত কিতাব মহাগ্রন্থ আল-কোরআন। যা পূর্ববর্তী সব কিতাব ও সব সহিফাকে সমর্থন করে রহিত করে দিয়েছে। এই কথা যারা বিশ্বাস করে তাদের পরিচয় দিতে গিয়ে মহান আল্লাহ্ পবিত্র কোরআনে বলেছেন। আর যারা বিশ্বাস করে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছি ও তোমার পূর্বে যা অবতীর্ণ করেছি তাঁর প্রতি ও যারা পরকালের ওপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখে।

তারাই স্বীয় রবের প্রদর্শিত পথে অবস্থিত ও তারাই মুক্তি পাবে। (-সুরা বাকারা, আয়াত-৪-৫) । সবার চিন্তা, একটি গাছ লাগাবে আর তা শীতের সময় শীতের ফল, আর গরমের ফল, আর ভালো লাগার প্রয়োজনে ভালো ও মন্দের প্রয়োজনে মন্দ দেবে! কি অলীক চিন্তা! বরং বাস্তব এই যে আম গাছ লাগালে তা থেকে আমই পাওয়া যাবে, তেমনি সততার গাছ লাগালে তা থেকে সততার ফলই পাওয়া যাবে। অসততার গাছ থেকে অসততাই পাওয়া যাবে, ঘুষ থেকে কেলেঙ্কারি, অশান্তিই পাওয়া যাবে। যেমন প্রবাদে আছে, যেমন কর্ম তেমন ফল। এটাই বাস্তব। নিজকে না চেনার কারণেই মানুষ যোগ্যতার বাইরে ফল প্রত্যাশা করে। মহান আল্লাহ্ই ভালো জানেন কাকে, কী জন্য, কোন পরিবারে বা কোন সমাজে সৃষ্টি করেছেন। সেই জ্ঞান শুধু সৃষ্টিকর্তারই রয়েছে।

পবিত্র কোরআনে সূরা কাহাফে বর্ণিত হজরত খিজির (আ.) কর্তৃক সংঘটিত ঘটনাবলী ছিল মহান আল্লাহ্ প্রদত্ত জ্ঞান যা নবী মুসার (আ.) জ্ঞানের বাইরে ছিল। যদিও মুসা (আ.) ছিলেন তাঁর সময়কার শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী। কেন মহান আল্লাহ্ খিজির (আ.) এর মাধ্যমে উক্ত ঘটনাগুলো ঘটিয়েছেন তার ব্যাখ্যাও পবিত্র কোরআনে তিনি দিয়েছেন। তাই আমি কেন ওই রকম বা আমার কেন তার মতো সম্পদ নেই বা অন্যের সম্পদের প্রতি ঈর্ষা করা এবং মান্য লোকের মতো সম্মান প্রত্যাশা করা, ধনীর মতো প্রসস্ততা কামনা করা ইত্যাদি গর্হিত কাজ মানুষের দ্বারা সংঘটিত হয় তখনই যখন মানুষ নিজেকে চিনতে পারে না বা নিজের সম্পর্কে বা নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে কোনো ধারণা থাকে না তখন।

“যাই দেখবে তাই ভালো লাগা”- একটি কঠিন রোগ। এই রোগের ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ। কিন্তু নফসের প্ররোচনায় মানুষ সে কাজটিই করে। এর ফল অশান্তি, লোভ, চুরি, দুর্নীতি ইত্যাদি। যেমন ধরা যাক, যতো উন্নতমানের ও রুচিসম্মতই হোক না কেন অন্যের পোশাক ভালো লাগলে হবে না। কারণ পোশাকটি যার ভালো লেগেছে তার শারীরিক গঠন, রং অবশ্যই মানানসই হতে হবে তবেই সে পোশাকটি তার জন্য যথার্থ হবে, নয়তো পরিণতি কি হবে তা সহজেই অনুমেয়।

আর অযোগ্যের হাতে যে কোনো শুভও অশুভতে পরিণত হয়। তেমনি চাকরিজীবীর বিলাসী জীবনের লোভ থেকে আসে ঘুষ খাওয়া। ঘুষের পয়সা যখন স্ফীত হয় তখন নিজেকে ধনী মনে করে ধনীর মতো জীবনযাপন করতে যায়, প্রভাবশালী হতে চায়, সম্মানীয় হতে চায়, অতীত ভুলে যায়, অন্তর চক্ষু অন্ধ হয়ে যায়। তাই তার দ্বারা যে কোনো অন্যায় সহজেই সম্পন্ন হয়। অথচ এই ঘুষ যারা খায় তারা বোঝে না যে প্রকারান্তরে তারা নিজেকে পণ্যে পরিণত করে তোলে। অর্থাৎ টাকা দিয়ে যা কেনা যায় তাই পণ্য। আমীন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris